Main Menu

‘প্রবাসীদের উন্নয়নে জিহাদ ঘোষণা করলেও সিস্টেমের কারণে সফল হতে পারছি না’

বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
প্রবাসীদের যথাযথ সম্মান দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মন্ত্রীরা। তারা বলছেন, প্রবাসীদের ঘামে অর্জিত অর্থে দেশ স্বাবলম্বী হচ্ছে। তাই তারা যদি অপমানবোধ করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত হন, এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছুই হতে পারে না। সেই সঙ্গে পরিবার, দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য প্রবাসীদের অর্থ হুন্ডিতে না পাঠানোরও অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার ‘অভিবাসী ও সোনার মানুষ সম্মেলন-২০২৩’-এ এসব কথা বলেন বক্তারা। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে দিনব্যাপী সম্মেলনে সফল প্রবাসী ও প্রবাসীসংশ্লিষ্টদের অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এর আয়োজন করেছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সভাপতিত্ব করেন রামরুর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. তাসনিম সিদ্দিকী। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। আরও বক্তব্য দেন বিএমইটির মহাপরিচালক শহিদুল আলম, আইএমও-এর মিশন চিফ ইশোভ আব্দুস ছত্তার ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকশন।

সকালে অপর এক অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অতিথি ছিলেন সাবেক এমপি ও মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক সংসদীয় ককাশের সাধারণ সম্পাদক মেহজাবিন খালেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মেম্বার মো. সেলিম রেজা।

সম্মেলনে সোনার মানুষ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তরা হলেন টাঙ্গাইলের মো. নাজমুল তালুকদার, কুমিল্লার নুরুদ্দিন আহমেদ ও কেরানীগঞ্জের সলিমউল্লাহ।

সোনার মানুষ পরিবার অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তরা হলেন টাঙ্গাইলের কালিহাতীর ইম্মে হাবিবা (রুমা) ও ময়মনসিংহের ভালুকার শিউলি ইসলাম।

অভিবাসী সেবা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন এলেঙ্গার পালকারা গ্রাম কমিটির মকবুল হোসেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যণ ডেস্কের সহকারী পরিচালক ফখরুল ইসলাম ও ওয়েজ আর্নারস ওয়েলফেয়ার বোর্ড (ডব্লিউইডব্লিউবি)।

কাজের স্বীকৃতি দিলে অন্যরা আরও উৎসাহিত হবেন উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, প্রবাসীদের সব সময় স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের যথাযথ সম্মান নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে। আমি প্রবাসীদের উন্নয়নে জিহাদ ঘোষণা করলেও সিস্টেমের কারণে সফল হতে পারছি না। তবে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

তিনি প্রশ্ন রাখেন মালয়েশিয়া যেতে চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ লাগছে কেন? সিস্টেমের ফল্টের কারণেই এই ব্যয় হয়।

মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে আমরা তো হিসাব করে দেখেছি যে অভিবাসন ব্যয় ৮০ হাজার টাকার মধ্যে হওয়া উচিত। মালয়েশিয়া বলছে, জিরো মাইগ্রেশন কস্ট। তারাই এটা বলে গেছেন। তাহলে এখন শুনতে পারছি চার লাখ, সাড়ে চার লাখ টাকা দিতে হচ্ছে, কেন? কারণ সিস্টেমেই ফল্ট (অব্যবস্থাপনা) আছে। আর সিস্টেমের মধ্যে আমাদের সব রিক্রুটিং এজেন্ট অন্তর্ভুক্ত আছে। সেই জায়গায় আমরা গিয়ে আটকে যাই। এখানে সবার সহযোগিতা থাকা উচিত।

হুন্ডি হলো চরম বাস্তবতা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা হুন্ডিতে প্রায় ৫০ শতাংশ টাকা পাঠাচ্ছেন। কিন্তু এর মাধ্যমে ডলার না এলেও ওই টাকায় গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হচ্ছে। পরিবারে সচ্ছলতা আসছে। তবে আমাদের ভাবতে হবে যেসব দেশে বেশি বেতন পাওয়া যাবে, সেসব দেশে দক্ষ কর্মী পাঠাতে হবে। মেডিকেল কলেজগুলোকে নার্সিং কলেজে রূপান্তর করে বিদেশে নার্স পাঠাতে পারলেও অনেক লাভ হতো।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, প্রবাসী আয়ের ৪৮ শতাংশ আসছে হুন্ডির মাধ্যমে। এটা বন্ধ করা দরকার। প্রবাসীরা তাদের রেমিট্যান্স পাঠিয়ে জিডিপিতে ৫ শতাংশ অবদান রাখছেন। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক মিলে জিডিপিতে তাদের অবদান ৮/৯ বিলিয়ন ডলার হবে। আমরা কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব দিচ্ছি। যাতে মানুষ দেশে ও বিদেশে স্বাবলম্বী হতে পারে। প্রবাসীদের সম্মান নিশ্চিত করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হলো প্রবাসী আয়। এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভিন্ন মাধ্যমে টাকা পাঠানো। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে সেগুলো আমাদের প্রবাসী শ্রমিকদের কাজ করিয়ে সমৃদ্ধ হচ্ছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ফোরামে তারা যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়, পরে সেগুলো পালন করে না। এটা দুঃখজনক। প্রবাসী বিষয়ে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব ফোরামে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিভিন্ন দেশ প্রবাসীদের ওপর অন্যায় ও অবিচার চাপিয়ে দিচ্ছে। এটা কাম্য নয়।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *