Main Menu

ইটালি সরকারের পদক্ষেপ রোধে লড়াই চলবে: এনজিও জোট

বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
ভূমধ্যসাগরে মানবিক উদ্ধার জাহাজগুলোর বিরুদ্ধে জারি করা ডিক্রি আইনে পরিণত করতে ইটালির সংসদে একধাপ এগিয়েছে বর্তমান সরকার। সংসদের নিম্নকক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে দেশটির এনজিওগুলোর জোট।

 

রোম থেকে ইনফোমাইগ্রেন্টসের বিশেষ সংবাদদাতা মোহাম্মাদ আরিফ উল্লাহ, খোসরাও মানি ও শরিফ বিবি।

সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে সক্রিয় মানবিক জাহাজগুলিকে একটি উদ্ধার কাজ শেষে বন্দরে ফেরার শর্ত দিয়ে ডিক্রি জারি করেছে ইটালির নতুন কট্টর ডান সরকার।

জাতিসংঘ, ইউএনএইচসিআর এবং কাউন্সিল অফ ইউরোপের মানবাধিকার কমিশনার অবিলম্বে এই ডিক্রি প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও ইটালি সরকার এটিকে আইনে পরিণত করার চেষ্টা করছে।

বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, সংসদের নিম্নকক্ষে বিলটি পাশ হওয়ার পরপরই সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অভিবাসন সংস্থা ও এনজিওগুলোর জোট এবং বিরোধী সাংসদরা। পাশাপাশি ইটালি পার্লামেন্টের সামনে প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করা হয়।

এনজিওগুলোর অভিযোগ, সরকারের এই নতুন অভিবাসন ডিক্রির লক্ষ্য হচ্ছে, মানবিক উদ্ধারকারী জাহাজগুলির কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করে দেয়া৷ লিবিয়ার সঙ্গে ইটালির চুক্তিরও বিরোধিতা করেন সংশ্লিষ্টরা।

সংবাদ সম্মেলন শেষে এনজিওগুলোর জোটের সমন্বয়ক ফিলিপো মিরাগিলা ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, “আজকে সংসদ সদস্যরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে এনজিওগুলোর উদ্ধার অভিযানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে। আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা শীঘ্রই সমগ্র ইটালিজুড়ে এর বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণা করব।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের জোটে ৩০টির বেশি এনজিও এবং অভিবাসন সংস্থা রয়েছে। আমরা আইনি ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের এই অভিবাসনবিরোধী উদ্যোগের বিরুদ্ধে সমমনস্ক সবাইকে নিয়ে প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।”

“উদ্ধার অভিযান চালাবে এমএসএফ”

সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির যোগাযোগ কর্মকর্তা লরেন জিওরজিস।

তিনি ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, “আজকের সংবাদ সম্মেলনের উদ্দেশ্য ছিল সমুদ্রে সরকারের বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করা। সরকারের এই উদ্যোগ আন্তজার্তিক আইনের বিরোধী। মূলত ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীদের বাঁচানো ঠেকাতে এই ডিক্রিকে আইনে পরিণত করার চেষ্টা করছে ইটালির নতুন সরকার।”

এই ডিক্রি সংসদের উচ্চকক্ষে পাশ হয়ে আইনে পরিণত হলে এমএসএফসফ অন্যান্য এনজিওদের ভূমিকা কী হবে সেটি জানতে চায় ইনফোমাইগ্রেন্টস।

লরেন জিওরজিস বলেন, “গত নভেম্বরে আনকোনাসহ কয়েকটি শহরে সীমাবদ্ধ অভিবাসী অবতরণের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে জয় পেয়েছে এমএসএফসহ কয়েকটি এনজিও। সরকার যদি ডিক্রিটিকে আইনে বাস্তবায়ন করে সেক্ষেত্রে এমএসএফ আগের মতো তার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। নতুন ডিক্রি এমএসএফকে উদ্ধার কাজ থেকে দূরে রাখতে পারবে না। মানুষের জীবনরক্ষার কার্যক্রম বজায় থাকবে।”

‘অভিবাসন বিরোধিতা স্বাভাবিক করার অপচেষ্টা হচ্ছে’

ইটালির সর্ববৃহৎ অভিবাসন সংস্থা আরচির কর্মকর্তা জুওভানি ভানোরে সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচিত এই ডিক্রি ও সম্ভাব্য আইন নিয়ে ইনফোমাইগ্রেন্টসের সঙ্গে কথা বলেন।

জুওভানি ভানোরে বলেন, “নির্বাচনের আগে থেকেই বর্তমান সরকার ও তাদের কট্টর ডান জোট ক্রমাগত বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জোরপূর্বক অভিবাসন বিরোধিতাকে প্রতিষ্টার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটি অত্যন্ত ভয়াবহ। ডিক্রিকে আইনে রূপ দেয়ার চেষ্টার তারই অংশ।”

তার মতে, “রাজনীতিতে বড় সমস্যা আড়াল করতেই মূলত অভিবাসনকে সামনে আনা হয়। অর্থনীতি, অবকাঠামোসহ নানা ব্যর্থতা ঢাকতে রাজনৈতিকদলগুলোর সব দোষ অনিয়মিত অভিবাসন ও অভিবাসীদের উপর চাপিয়ে নিজেদের বাঁচাতে চেষ্টা করে।”

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের (ইউএনএইচসিআর) একজন মুখপাত্র সংস্থাটির রোম কার্যালয়ে ইনফোমাইগ্রেন্টসকে বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের এই নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি। এটি মানুষের জীবন বাঁচানোর প্রচেষ্টায় বাধা দেবে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *