Main Menu

পেঁয়াজ নিয়ে কোরআন-হাদিসে যা বলা হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক:
প্রতিদিনের খাবারের মসলায় পেঁয়াজ একটি প্রয়োজনীয় দ্রব্য। তরকারি রান্নায় পেঁয়াজের ব্যবহার অপরিহার্য। পেঁয়াজ প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহার করা হয় রান্নার কাজে। পবিত্র কোরআনে বনী ইসরাঈলের একটি ঘটনার বিবরণে পেঁয়াজ প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। কোরআনে আল্লাহ তায়ালা পেঁয়াজের ক্ষেত্রে ‘বাসাল’ শব্দ ব্যবহার করেছেন।

বনী ইসরাঈলকে আল্লাহ তায়ালা আমালেকা নামক এক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুদ্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা আল্লাহর আদেশ অমান্য করে যুদ্ধ থেকে বিরত ছিল। শাস্তি হিসেবে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে তীহ ময়দানে উদ্ভ্রান্তের মতো ৪০ বছর ঘুরিয়েছিলেন। তারা প্রতিদিন সকালে উঠে এই ময়দান থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করত, কিন্তু দিনশেষে দেখত যেখান থেকে বের হয়েছে, সেখানেই রয়ে গেছে।

এ সময় আল্লাহ তায়ালা জান্নাত থেকে তাদের জন্য ‘মান্না সালওয়া’ নামক বিশেষ এক ধরনের খাবার প্রেরণ করতেন। দীর্ঘদিন খেতে খেতে এই খাবারের প্রতি এক ধরনের অনীহা তৈরি হয় বনী ইসরাঈলের তখন তারা মুসা আলাইহিস সালামে মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে অন্য খাবারের আবেদন করেন, সেই খাবারের তালিকায় পেঁয়াজও ছিল। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,

وَ اِذۡ قُلۡتُمۡ یٰمُوۡسٰی لَنۡ نَّصۡبِرَ عَلٰی طَعَامٍ وَّاحِدٍ فَادۡعُ لَنَا رَبَّکَ یُخۡرِجۡ لَنَا مِمَّا تُنۡۢبِتُ الۡاَرۡضُ مِنۡۢ بَقۡلِهَا وَ قِثَّآئِهَا وَ فُوۡمِهَا وَ عَدَسِهَا وَ بَصَلِهَا ؕ قَالَ اَتَسۡتَبۡدِلُوۡنَ الَّذِیۡ هُوَ اَدۡنٰی بِالَّذِیۡ هُوَ خَیۡرٌ ؕ اِهۡبِطُوۡا مِصۡرًا فَاِنَّ لَکُمۡ مَّا سَاَلۡتُمۡ ؕ وَ ضُرِبَتۡ عَلَیۡهِمُ الذِّلَّۃُ وَ الۡمَسۡکَنَۃُ ٭ وَ بَآءُوۡ بِغَضَبٍ مِّنَ اللّٰهِ ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّهُمۡ کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰهِ وَ یَقۡتُلُوۡنَ النَّبِیّٖنَ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ ؕ ذٰلِکَ بِمَا عَصَوۡا وَّ کَانُوۡا یَعۡتَدُوۡنَ

‘যখন তোমরা বলেছিলে, হে মুসা! আমরা এ ধরনের খাদ্যে কখনো ধৈর্য ধারণ করব না। সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করো। তিনি যেন ভূমিজাত দ্রব্য শাকসবজি, কাঁকুড়, গম, মসুর ও পেঁয়াজ আমাদের জন্য উৎপাদন করেন। মুসা বললেন, তোমরা কি উৎকৃষ্টতর বস্তুকে নিকৃষ্টতর বস্তুর সঙ্গে বদল করতে চাও? তবে কোনো নগরে অবতরণ করো। তোমরা যা চাও, নিশ্চয়ই তা সেখানে আছে। তারা লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্যগ্রস্ত হলো এবং তারা আল্লাহর ক্রোধের পাত্র হলো। এটি এ জন্য যে তারা আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করত এবং নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করত। অবাধ্যতা ও সীমা লঙ্ঘন করার জন্যই তাদের এই পরিণতি হয়েছিল। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত, ৬১)

 

ওই আয়াতে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে পেঁয়াজকে নিকৃষ্টতর বলার উদ্দেশ্য হলো, জান্নাতের ‘মান্না-সালওয়া’র তুলনায় দুনিয়ার খাবার নিম্নমানের। তবে এর মানে এই নয় যে এসব খাবার মুসলমানদের জন্য বর্জনীয়।

তবে হ্যাঁ, মসজিদে কিংবা কোনো সমাবেশে যাওয়ার আগে কাঁচা পেঁয়াজ ও রসুন খাওয়ার ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা এর মাধ্যমে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়, যা অন্য মানুষ ও মসজিদে থাকা ফেরেশতাদের জন্য কষ্টের কারণ হয়।

 

জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রসুন বা পেঁয়াজ খায় সে যেন আমাদের থেকে দূরে থাকে অথবা বলেছেন, সে যেন আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে আর নিজ ঘরে বসে থাকে।’ (বুখারি, হাদিস, ৮৫৫)

তবে তরকারি ইত্যাদির সঙ্গে রান্না করে পেঁয়াজ খেলে যেহেতু তেমন দুর্গন্ধ হয় না, তাই সে ক্ষেত্রে পেঁয়াজ খেয়ে মসজিদে আসার অনুমতি আছে। ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসের শেষাংশে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তা খায়, সে যেন তা পাকিয়ে গন্ধমুক্ত করে ফেলে।’ (নাসায়ি, হাদিস, ৭০৮)






Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *