Main Menu

গ্রিসে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে শিথিল হতে পারে শর্ত

নিউজ ডেস্ক:
গ্রিসে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে শিথিল হতে পারে শর্ত।
এথেন্স ও ঢাকার চুক্তির অধীনে গ্রিসে মৌসুমি কাজের অনুমতি পাবেন এমন বাংলাদেশিদের নয় মাস পর চলে যাওয়া বা পাঁচ বছর পর একবারে ফেরত যাওয়ার শর্তগুলোতে ভবিষ্যতে পরিবর্তন আসতে পারে৷ সেই সঙ্গে কর্মীরা একাধিক মালিকের অধীনেও কাজের সুযোগ পাবেন৷

ইনফোমাইগ্রেন্টসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন এথেন্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ৷

গ্রিসে ৩০ হাজার বাংলাদেশি আছেন তাদের মধ্যে সাড়ে ১২ হাজার জনের বসবাসের বৈধতা রয়েছে৷ বাকিরা নথিভুক্ত নন বা অনিয়মিত৷ এদের মধ্যে ১৫ হাজার জন গ্রিস-বাংলাদেশ সরকারের চুক্তির অধীনে দেশটিতে নির্দিষ্ট সময় থাকার ও কাজের অনুমতি পাবেন৷

এছাড়াও প্রতি বছর চার হাজার জনকে বাংলাদেশ থেকে মৌসুমি কাজের ভিসা দেয়া হবে, যারা মূলত কৃষি খাতে কাজ নিয়ে দেশটিতে আসবেন৷ সোমবারই এই চুক্তিটি বাংলাদেশের মন্ত্রীসভায় পাস হয়েছে বলে জানান এথেন্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ৷ গ্রিসে বসবাসরত অনিয়মিতরা কিভাবে এই স্কিমের আওতায় আসতে পারবেন, নিয়ম কানুনগুলো নিয়ে দেশটির সরকারের সঙ্গে কী ধরনের আলোচনা চলছে, এই চুক্তির ভবিষ্যৎ কী এমন সব বিষয় তিনি তুলে ধরেছেন ইনফোমাইগ্রেন্টসের কাছে৷

নয় মাসের বাধ্যবাধকতা নাও থাকতে পারে
চুক্তি অনুযায়ী, এই স্কিমের আওতায় একজন বাংলাদেশি বছরে টানা নয় মাস গ্রিসে থাকার সুযোগ পাবেন৷ এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, মৌসুমি চুক্তির এমনটাই নিয়ম৷ তবে এ ব্যাপারে গ্রিসের সঙ্গে তারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ তিনি বলেন, গ্রিসে কোনো একটি ক্ষেত্রে টানা নয় মাস কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন৷ কৃষি ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ফসল চাষ ও তোলার সময় ভিন্ন ভিন্ন হয়৷ সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে হয়ত নয় মাস গ্রিসে থেকে চলে যাওয়ার নিয়মটি নাও থাকতে পারে৷ তিনি বলেন, ‘‘গ্রিক সরকার খুবই ইতিবাচক৷ …তারা বলেছে একটা আইন হবে সেখানে তারা এটা কনসিডার করবে৷ হয়ত দেখা যাবে তাদের যাওয়া নাও লাগতে পারে৷’’

এছাড়াও চুক্তিতে পাঁচ বছর পর গ্রিস ছাড়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও রাষ্ট্রদূত মনে করেন ভবিষ্যতে তারও পরিবর্তন হতে পারে৷ সেটি নির্ভর করবে কর্মীদের আচরণের উপরও৷ ‘‘আমরা আশা করছি পাঁচ বছর পরও তাদের চুক্তি নবায়ন হবে এবং তারা থাকতে পারবেন৷’’

প্রথম শর্ত পাসপোর্ট
তিনি বলেন, কেউ যদি পাঁচ বছর পর কাজের নতুন চুক্তি যোগাড় করতে পারেন তাহলে তিনি আবারও বসবাসের অনুমতি পেতে পারেন৷

তিনি আরও জানান গ্রিক সরকারের প্রস্তাব অনুযায়ী, পাঁচ বছর এক মালিকের অধীনে থাকার কথা বলা হলেও একাধিক মালিকের অধীনেও তারা কাজের সুযোগ পাবেন৷

এই প্রক্রিয়ার অধীনে আসতে হলে প্রথম শর্তই হলো পাসপোর্ট থাকতে হবে৷ কিন্তু অনিয়মিতভাবে আসা অনেক বাংলাদেশিরই যথাযথ পাসপোর্ট নেই৷ এক্ষেত্রে তারা যাতে দ্রুত পাসপোর্ট পান সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দ্রুত সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ এই অভিবাসীদের দ্রুত পাসপোর্ট দেয়া না গেলে তাদের নিয়মিত হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘‘বাংলাদেশি যারা আছেন তাদের সবাইকে বলব কাগজপত্র যোগাড় করে দ্রুত যেন এই প্রক্রিয়ার অধীনে চলে আসেন৷ কোন জটিলতা হলে তারা যেকোন সময় আমাদের ফোন করতে পারেন৷’’

বন্দি থাকা অবস্থায় আবেদন করা যাবে না
গ্রিসে ৬০০ থেকে ৭০০ বাংলাদেশি দেশটির বিভিন্ন বন্দিকেন্দ্রে রয়েছেন৷ আটক থাকা অবস্থায় তারা আবেদন করতে পারবেন না৷ এক্ষেত্রে পাসপোর্ট বা আইনি ডকুমেন্ট না থাকা ব্যক্তিরা যাতে বেরিয়ে এসে দ্রুত আবেদন করতে পারেন সেজন্য দূতাবাস থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আসুদ আহমেদ৷

রাষ্ট্রদূত মনে করেন অনিয়মিত অভিবাসীরা স্কিমটির আওতায় নিয়মিত হওয়ার মাধ্যমে শ্রম শোষণ, মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য থেকে মুক্ত হবেন৷ সেই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষাও ভোগ করবেন৷ এক্ষেত্রে তাদের কাজের চুক্তির কোন ব্যত্যয় হলে তার বিরুদ্ধে দূতাবাস ব্যবস্থা নতে পারবে৷

রাষ্ট্রদূত জানান স্কিমের আওতায় শুরুতে গ্রিসে বসবাসরত অনিয়মিতদের নিয়মিতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু দুই দিকে আইনী প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়ে গেছে তাই তারা বলেছে (গ্রিস) মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে তারা প্রক্রিয়াটি শুরু করবে৷ এজন্য অনলাইন প্লাটফর্ম চালু করা হবে৷ তার প্রথম ধাপ হবে পাসপোর্ট সত্যায়ন করা এবং ৯ ফেব্রুয়ারির আগে থেকে যে আছেন সেই প্রমাণ দাখিল করা৷ যাচাই বাছাই হওয়ার পর সাথে সাথেই সাময়িক কাগজ পাওয়া যাবে৷ এরপর তারা কাজ শুরু করতে পারবেন৷ পরবর্তীতে তারা স্থায়ী কাগ পাবেন৷’’

অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী আনা কবে শুরু হবে বা প্রক্রিয়া কী হবে সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি৷ তবে গ্রিসে আসতে একজন বাংলাদেশির জনপ্রতি সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা খরচ হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ শুধু গ্রিস নয়, মাল্টার সঙ্গে একই ধরনের চুক্তির জন্য আলোচনা চলছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত৷ ‘‘দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে তাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অক্টোবরে বাংলাদেশে যেতে চান এবং অভিবাসন সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করতে চান৷ আলবেনিয়ার সঙ্গে একই প্রকিয়ায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী প্রেরণ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে৷ এই তিনটি দেশ হয়ে গেলে অন্যান্যরাও একই পথ অনুসরণ করবে, বলেন তিনি৷






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *