Main Menu

বিএসএমএমইউয়ে ফ্যাটি লিভার ও লিভার ক্যান্সার চিকিৎসায় হার্বাল মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল

নিউজ ডেস্ক:
বিএসএমএমইউয়ে ফ্যাটি লিভার ও লিভার ক্যান্সার চিকিৎসায় হার্বাল মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল
(৭ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় কালোমেঘ বা চিরতার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রাথমিক ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। এছাড়াও একই সময় ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় অর্জুন এবং সিলিমারিন বা কাটা গেইদলে এবং লিভার ক্যান্সারের চিকিৎসায় আমলকির নতুন তিনটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এই উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়টির সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে একটি সাইন্টিফিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে জানানো হয় যে, ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় কালোমেঘ বা চিরতার ফলাফল প্রাথমিকভাবে খুবই আশাব্যাঞ্জক বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। বিশেষ করে ট্রায়ালে অংশগ্রহনকারী প্রায় সব রোগীরই লিভারের ফাইব্রোসিস কমে আসায় গবেষকরা অত্যন্ত আশান্বিত বলে জানান। উল্লেখ্য লিভারের ফাইব্রোসিস চতুর্থ পর্যায়ে পৌঁছে গেলে তাকে লিভার সিরোসিস হিসেবে গন্য করা হয়। এখন পর্যন্ত কোন জানা ওষুধে ফ্যাটি লিভার রোগীদের লিভারের ফাইব্রোসিস এভাবে কমতে দেখা যায়নি। এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালটি প্রাথমিক ফলাফল উপস্থাপন করেন ট্রায়ালটির প্রধান গবেষক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের রেসিডেন্ট ডা. মোঃ সাব্বির হোসেন।

এছাড়াও সেমিনারটিতে ফ্যাটি লিভারের উপর আরো দুটি এবং লিভার ক্যান্সারের একটি নতুন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরুর ঘোষনা আসে। এদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারে অর্জুন এবং সিপিমারিন বা কাটা গেইদলের ট্রায়াল দুটির ডিজাইন যথাক্রমে উপস্থাপন করেন এই ট্রায়াল দুটির প্রধান গবেষক হেপাটোলজি বিভাগের রেসিডেন্ট ডা. মানস সাহা ও ডা. মোঃ কামরুল হাসান। অন্যদিকে লিভার ক্যান্সার চিকিৎসায় আমলকির ট্রায়াল ডিজাইনটি উপস্থাপন করেন এই ট্রায়ালের প্রধান গবেষক এবং হেপাটোলজি বিভাগেরই আরেকজন রেসিডেন্ট ডা. মোঃ রেজোয়ানুর রহমান। উল্লেখ্য এই ট্রায়ালগুলো যৌথভাবে পরিচালনা করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিলের ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি ট্রান্সফার এন্ড ইনোভেশন এবং ইউওয়েষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল দীর্ঘদিন ধরে আমাদের হার্বাল মেডিসিনগুলোকে রিপারপাঞ্জ করে লিভারের নানা রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করার বিষয়ে গবেষনা চালিয়ে আসছেন। ইতিমধ্যেই তিনি প্রধান গবেষক হিসেবে লিভার ক্যান্সার চিকিৎসায় যষ্টিমধু এবং কোভিড-১৯ চিকিৎসায় দুধসারের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করেছেন। এসব ট্রায়ালের বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ বিশ্বের নামকরা বৈজ্ঞানিক জার্নালে ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে এবং সেগুলো বৈজ্ঞানিক মহলে প্রশংসাও কুড়িয়েছে।

প্রশ্ন করা হলে অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরই দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষনার উপর জোর দিয়ে আসছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই তিনি বাংলাদেশে ওষুধ উদ্ভাবনের স্বপ্ন নিয়ে এ ধরনের গবেষনা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল। উল্লেখ্য ইতিপূর্বে অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল বাংলাদেশে ন্যাসভ্যাক নামে হেপাটাইটিস বি-র একটি নতুন ইমিউনোথেরাপীর ফেইজ-১, ২৩৩ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলোর প্রধান গবেষক হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও বাংলাদেশে লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় অটোলোগাস হেমোপয়েটিক স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্টেশন বা স্টেম সেল থেরাপী, লিভার ফেইলিওরের চিকিৎসায় মুজিব প্রটোকল’ বা প্লাজমা এক্সচেঞ্জ এবং লিভার ডায়ালাইসিস বা হেমোফিলট্রেশন এবং লিভার ক্যান্সার চিকিৎসায় ট্রান্স আর্টারিয়াল কেমো এম্বোলাইজেশন বা টেইসেরও প্রর্বতক অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল।

সেমিনারটিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাসভ্যাকের অন্যতম উদ্ভাবক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনে চলমান হার্বাল মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলোর প্রধান উপদেষ্টা, জাপানের ওইতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এহিমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র গবেষক, জাপান প্রবাসী বাংলাদেশী চিকিৎসাবিজ্ঞানী ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন চলমান ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলোর অন্যতম উপদেষ্টা ইষ্টওয়েষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী ফয়েজ হোসেন এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষনা কাউন্সিলের ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি ট্রান্সফার এন্ড ইনোভেশনের অফিসার ইন চার্জ ড. মোঃ রেজাউল করিম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানী হিসেবে অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীলের এবং ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। উপাচার্য তার বক্তব্যে তার মেয়াদকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষনার পরীধি যেভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে তার একটি পূর্নাঙ্গ চিত্র তুলে ধরে প্রত্যাশা প্রকাশ করেন যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্ররা এ ধরনের মানবকল্যানমুখী গবেষনায় আরো বেশি বেশি আত্মনিয়োগ করবেন। পরে উপাচার্য রোগীদের মাঝে ট্রায়ালের ওষুধ বিতরনের মাধ্যমে তিনটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *