সর্বজনীন পেনশনে প্রবাসীদের জন্য বাড়তি সুবিধা, যেভাবে যুক্ত হবেন
বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
বাংলাদেশে আজ থেকে চালু হচ্ছে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা বিবেচনায় নিয়ে বৃহস্পতিবার ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন।
শুরুতে চার শ্রেণির ব্যক্তি পেনশন কর্মসূচির আওতায় আসছেন। তারা হচ্ছেন- প্রবাসী বাংলাদেশি, বেসরকারি চাকরিজীবী, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মী এবং অসচ্ছল ব্যক্তি।
১৪ আগস্ট অর্থ বিভাগ থেকে জারি হওয়া এই বিধিমালায় ‘প্রবাস’ ‘প্রগতি’, ‘সুরক্ষা’ ও ‘সমতা’ নামে পেনশন স্কিম চালুর কথা বলা হয়েছে। চার ধরনের স্কিমে আলাদা আলাদা সুবিধা রয়েছে। বিধিমালা মেনে যে যার সুবিধামতো স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।
চার ধরনের পেনশন স্কিমের মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রবাস স্কিম, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য প্রগতি স্কিম, স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা স্কিম এবং স্বকর্মে নিয়োজিত স্বল্প-আয়ের নাগরিকদের জন্য সমতা স্কিম চালু হচ্ছে।
পেনশন কর্মসূচীতে বিদেশে অবস্থানত বাংলাদেশিদের আগ্রহী করে তুলতে এরইমধ্যে বেশকিছু সুযোগ-সুবিধার কথাও জানিয়েছে সরকার।
জানা গেছে, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া নাগরিকদের যেখানে তাদের জমা দেয়া চাঁদার বিপরীতে ৮ শতাংশ হারে সুদ দেবে সরকার। সেখানে বৈদেশিক মুদ্রায় চাঁদা দিলে সুদহারের বাইরে প্রবাসীরা অতিরিক্ত ২.৫% হারে প্রণোদনা পাবেন।
যেভাবে স্কিমে অংশ নিতে পারবেন প্রবাসীরা
বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানরত যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক নির্ধারিত অর্থ বৈদেশিক মুদ্রায় জমা দিয়ে এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। দেশে ফিরে সমপরিমাণ অর্থ দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করা যাবে। প্রয়োজনে স্কিমও পরিবর্তন করতে পারবেন প্রবাসীরা।
প্রবাসীদের মধ্যে যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা পাসপোর্টের তথ্য-উপাত্ত দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে সেটির অনুলিপি পেনশন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে। নিয়মিতভাবে পাসপোর্ট নবায়ন বা পুনঃইস্যুর ক্ষেত্রে নবায়নকৃত বা পুনঃইস্যুকৃত পাসপোর্টের অনুলিপি জমা দিতে হবে।
পেনশনের বয়স সীমা:
১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী জাতীয় পরিচয়পত্রধারী সব বাংলাদেশি নাগরিক নিজেদের জন্য প্রযোজ্য স্কিমে অংশ নিতে নিবন্ধন করতে পারবেন। বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সীরাও পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে স্কিমে অংশ নেয়ার তারিখ থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে। ১০ বছর চাঁদা দেয়া শেষ হওয়ার পর থেকে আজীবন পেনশন পাবেন।
চাঁদার হার:
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য মাসিক চাঁদার সর্বনিম্ন হার ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ৭ হাজার ৫০০ টাকা এবং ১০ হাজার টাকার দু’টি স্কিমও থাকবে প্রবাসীদের জন্য। প্রবাসীদের বিদেশি মুদ্রায় এই চাঁদা দিতে হবে। ১০ বছর পূর্তিতে ৫ হাজার টাকার কিস্তিতে মাসে পেনশন পাওয়া যাবে মাসে ৭ হাজার ৬৫১ টাকা হারে। সাড়ে ৭ হাজার টাকা কিস্তিতে মাসে ১১ হাজার ৪৭৭ এবং ১০ হাজার টাকা কিস্তিতে মাসে ১৫ হাজার ৩০২ টাকা পাওয়া যাবে। এভাবে ১৫, ২০, ২৫, ৩০, ৩৫, ৪০ ও ৪২ বছর পূর্ণে পেনশনের হারও বাড়বে। ৪২ বছর পূর্ণ হলে ৫ হাজার টাকার কিস্তিতে মাসে পেনশন পাওয়া যাবে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩২৭ টাকা, সাড়ে ৭ হাজার টাকার কিস্তিতে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৯১ টাকা এবং ১০ হাজার টাকার কিস্তিতে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৫৫ টাকা।
নিবন্ধন, চাঁদা যেভাবে দেয়া যাবে
পেনশন স্কিমে অংশ নিতে দেশ এবং প্রবাস থেকে অনলাইনে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে আবেদন করতে হবে। এরপর আবেদনকারীর অনুকূলে একটি ইউনিক আইডি নম্বর দেয়া হবে।
আবেদনে উল্লিখিত আবেদনকারীর মোবাইল নম্বরে এবং অনিবাসী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় ই-মেইলের মাধ্যমে ইউনিক আইডি নম্বর, চাঁদার হার এবং মাসিক চাঁদা জমা দেয়ার তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে।
যে কোনো স্কিমে নিবন্ধিত হওয়ার পর পেনশন কর্তৃপক্ষ ধার্যকৃত হারে নিয়মিত চাঁদা দিতে হবে। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, অনলাইন ব্যাংকিং, ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে মাসিক চাঁদা জমা দেয়া যাবে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে চাঁদা জমা দিতে পারবেন।
সকল স্কিমের জন্য চাঁদার কিস্তি চাঁদাদাতার পছদ অনুযায়ী মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধ করা যাবে।
চাঁদার টাকা জমা হলে চাঁদাদাতার রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরে এসএমএম দিয়ে জানানো হবে। নির্ধারিত তারিখের মধ্যে চাঁদা না দিলে জরিমানার পরিমাণসহ জানিয়ে দেয়া হবে।
কোনো প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠানিকভাবে পেনশন স্কিমে অংশ নিলে প্রতিষ্ঠান ও তার কর্মীদের চাঁদা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠানকে একসঙ্গে জমা দিতে হবে।
পেনশন তহবিলে জমা দেওয়া অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন তোলার প্রয়োজন পড়লে চাঁদাদাতা আবেদন করলে জমা দেওয়া অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তুলতে পারবেন, যা ফিসহ পরিশোধ করতে হবে। পেনশন থেকে পাওয়া অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে এবং পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিলে।
Related News
সিলেটেও সয়াবিন তেল সংকট
সিলেটেও সয়াবিন তেল সংকট সিলেটের বাজারে বিভিন্ন পণ্য কেনার পর সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে বিপাকেRead More
ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ও মাওলানা আজহারী
ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ও মাওলানা আজহারী। ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে সরগরম অনলাইন-অফলাইন। সপ্তম শ্রেণিরRead More