Main Menu

সিলেটে ২৩ প্রার্থীকে নিয়ে ‘অস্বস্তিতে’ আওয়ামী লীগ-বিএনপি

সিলেটে ২৩ প্রার্থীকে নিয়ে ‘অস্বস্তিতে’ আওয়ামী লীগ-বিএনপি
নিউজ ডেস্ক:
বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি, এমনকি ভোট বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছে দলটি। এ দাবিতে দেশব্যাপি নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।কিন্তু দলের এ সিদ্ধান্ত আমলে নেয়নি বিএনপির নির্বাচনমুখি নেতারা।ভোটবর্জন তো দূরের কথা, মেয়র-চেয়ারম্যান পদে বসতে ভোটে প্রার্থী হয়েছেন তাঁরা।এমন অবস্থা দেখা গেছে বিশ্বনাথ পৌর, ওসমানীনগর ও জগন্নাথপুর উপজেলা এবং গোয়াইনঘাটের চার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে।

স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধের ভোটে লড়ছেন বিএনপির ১৭ বিদ্রোহী।মনোনয়নপত্র জমাদানের আগে দলের বিদ্রোহী দমাতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও।দলীয় সিদ্ধান্তকে অনেকটা চ্যালেঞ্জ করে দল মনোনীত মেয়র-চেয়ারম্যানপ্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে নেমেছেন আওয়ামী লীগের আরও ছয় বিদ্রোহী।

এমতাবস্থায় দলে বিদ্রোহীপ্রার্থীদের নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।তবে, বিদ্রোহীদের নির্বাচন থেকে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাদেরকে মনোনয়নপত্র প্রত্যারের দিন পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। ওইদিন বিদ্রোহীরা নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ালে দল থেকে তাদের বহিস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কামরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান গয়াছ মিয়া, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল মিয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুছলিমা আক্তার চৌধুরী স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়েছেন।

এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানপ্রার্থী জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ভিপি। এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও চেয়ারম্যান লড়ছেন খেলাফত মজলিসের জেলা কমিটির অর্থ সম্পাদক মো. ছইদুর রহমান চৌধুরী।

প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমদ।তাঁকে চ্যালেঞ্জ করে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি যুক্তরাজ্যপ্রবাসী আকদ্দুছ আলী ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান।

আর বিএনপি থেকে মেয়র পদেপ্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন, যুক্তরাজ্যের নিউহাম বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (প্রবাসী) মুমিন খান মুন্না, যুক্তরাজ্যের ওল্ডহ্যাম বিএনপির সভাপতি (প্রবাসী) মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মতিউর রহমান সুমন, বিএনপি নেতা (যুক্তরাজ্য প্রবাসী) সফিক উদ্দিন ও বিএনপি নেতা সমছু মিয়া।

গোয়াইনঘাট উপজেলার চারটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের চারপ্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৫ বিদ্রোহী। তারা হলেন- পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদে বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবু, মো. শামীম আল মামুন, মধ্য জাফলং ইউনিয়নে লোকমান হোসেন, পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নে মামুন পারভেজ ও গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়নে গোলাম রব্বানী সুমন।

অপরদিকে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে চেয়ারম্যানপ্রার্থী হয়েছেন বিএনপির ছয় নেতা।তারা হলেন পূর্ব জাফল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি হামিদুল হক ভূঁইয়া বাবুল, মধ্য জাফলং ইউনিয়নে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ শাইদুর রহমান, পশ্চিম জাফলংয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল মুনিম মুন্সি ও আব্দুল মালিক, সদর ইউনিয়ন পরিষদে উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান এমএ রহীম ও মো. হোসাইন।

অপরদিকে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা সভাপতি আকমল হোসেন।আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আতাউর রহমান।আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন লাকি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যারা প্রার্থী হয়েছে তাদের ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে আওয়ামী লীগ। তবে, তাদেরকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ দেয়া হবে। তা নাহলে তাদেরকদল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

সিলেটে জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। এমনকি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে সব নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

উল্লেখ্য, তফসিল অনুযায়ী আগামী ১০ অক্টোবর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই, ১৭ অক্টোবর প্রার্থিতা প্রত্যাহার, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ অক্টোবর আর ২ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *