লিবিয়ায় বন্দি ২১ যুবক, লাখ লাখ টাকা দিয়েও মিলছে না মুক্তি
ডেস্ক রিপোর্ট:
লিবিয়ায় বন্দি ২১ যুবক, লাখ লাখ টাকা দিয়েও মিলছে না মুক্তি
লিবিয়ার বন্দিশালায় তিন মাস ধরে আটক মাদারীপুরের একটি ইউনিয়নের ২১ যুবক। দালালদের লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলেও মিলছে না মুক্তি। নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে মোবাইলে পাঠিয়ে বারবার মুক্তিপণের টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ পরিবারের। এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
পুলিশ বলছে, অভিযোগ পেলে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা। এদিকে ঘটনার পর বসতঘরে তালা দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্তরা।
লিবিয়ার মাফিয়াদের হাতে বন্দি যুবকরা হলো, মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের দুর্গাবর্দী গ্রামের লুৎফর বেপারীর ছেলে আল আমিন বেপারী, মোতালেব খানের ছেলে ইয়াসিন খান, লুৎফর বেপারীর ছেলে আল আমিন বেপারী, মনির হাওলাদারের ছেলে তমাল হাওলাদার, আলী হোসেন বেপারীর ছেলে ইমন বেপারী, তাজমুল চৌকিদারের ছেলে শান্ত চৌকিদার, কালাম ফকিরের ছেলে মেহেদী ফকির, দুধখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য হুয়ায়ন বেপারীর ছেলে সৌরভ বেপারী, ফারুক হাওলাদারের ছেলে ফারদিন হাওলাদার, এসকান বেপারীর ছেলে হাসান বেপারী, হাবিব খানের ছেলে আল আমিন খান, মোস্তফা মাতুব্বরের ছেলে সাব্বির মাতুব্বর, মনির খানের ছেলে নাঈম খান, শাহ্আলম মুন্সির ছেলে হৃদয় মুন্সি, ওহাব আলি বেপারীর ছেলে হারুণ বেপারী, এহসাক হাওলাদারের ছেলে রুবেল হাওলাদার। বাকিদের নাম পাওয়া যায়নি। বন্দিশালায় আটক থাকা প্রত্যেকের বয়স ১৮-২৫ বছরের মধ্যে।
সরজমিন ঘুরে জানা যায়, তমাল হাওলাদারের মা মুরশিদা বেগম ও ইমন বেপারী’র মা নাহার বেগম তারা জানেন না তাদের আদরের সন্তান কোথায় আছে, কেমন আছে। প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে কষ্টে আর দুশ্চিন্তায়। সন্তানদের ফিরে পেতে সরকারের কাছে আকুতি জানাচ্ছেন বারবার।
শুধু ইমন ও তমালের পরিবারই নয়, একই অবস্থা আল আমিন, মেহেদী ফকির, ইয়াসিন খান, শান্ত চৌকিদার, সৌরভ বেপারী, হৃদয় মুন্সীসহ মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের দুর্গাবর্দী গ্রামের ১৭ জনসহ ইউনিয়নের মোট ২১ যুবকের পরিবারের। সন্তানদের খোঁজ না থাকায় পাগলপ্রায় পরিবারগুলো।
স্বজনরা জানায়, দুর্গাবর্দী গ্রামের মানবপাচার চক্রের সদস্য নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী নাজমিন লিবিয়া হয়ে ইতালি নেয়ার কথা বলে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে নেয় ৯ লাখ টাকা। পরে লিবিয়ান মাফিয়াদের হাতে তিনমাস আগে বিক্রি করে দিয়ে আবারো প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে আদায় করে মুক্তিপণের ৬ লাখ টাকা। তবুও যুবকদের মিলছে না মুক্তি।
তমাল হাওদারের মা মুরশিদা বেগম বলেন, আমাদের সাথে চুক্তি ছিলো ৯ লাখ টাকার বিনিময়ে আমাদের সন্তানদের ইতালি পৌঁছে দিবে। টাকা নেয়ার পর মাফিয়াদের হাতে বিক্রি করে দিয়েছে। এখন আমরা দিশাহারা। এক সপ্তাহ ধরে সন্তানদের কোন খোঁজ নেই।
ইমন বেপারী’র মা নাহার বেগম বলেন, আমার একটি মাত্র ছেলে। বড় আশা করে ইতালি পাঠানোর ইচ্ছা করেছি। দালালরা এমন করবে তা কিছুতেই মানতে পারছি না। এখন বড়ই অসহায়। সরকার ও প্রশাসনের কাছে আমার ছেলেসহ যারা আটকা পড়েছে তাদের উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি এই ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধীরা যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের ধরতে তৎপরতা চালানো হবে।
Related News
আরও বাংলাদেশি কর্মী নিতে কাতারের প্রতি আহ্বান
আরও বাংলাদেশি কর্মী নিতে কাতারের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশি আরো দক্ষ ও আধা দক্ষ কর্মী নিতেRead More
প্রবাসীদের জন্য আসছে নতুন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
প্রবাসীদের জন্য আসছে নতুন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনার আওতায় একটি অনলাইন ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্ল্যাটফর্ম’Read More