Main Menu

সিডনিতে বৈশাখি মেলায় বাংলা মায়ের রূপ দেখল প্রবাসীরা

বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
সিডনিতে বাঙালিদের প্রাণের উৎসব ঐতিহ্যবাহী বৈশাখি মেলা ব্যাংকটাউন প্যাসওয়েতে নানা আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহামারি করোনা আর সম্ভাব্য বৃষ্টির কারণে কয়েকবার তারিখ পরিবর্তনের পর অবশেষে আয়োজন করা হয় প্রাণের এ মেলা। আর এতে অংশ নেন প্রবাসী বাংলাদেশি রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সিডনি থেকে প্রকাশিত অনলাইন ও পত্রিকার সম্পাদক ও টিভি সাংবাদিক, লেখক, সাহিত্যিক, কবি ও সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

পুরো অনুষ্ঠানস্থল পরিণত হয় মিনি বাংলাদেশে। যেন প্রবাসের বুকে একটুকরো বাংলাদেশ।

গতকাল ২৮ মে (শনিবার) বঙ্গবন্ধু পরিষদ সিডনি, অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে আয়োজিত মেলায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও মেলা কমিটির আহ্বায়ক গাউসুল আলম শাহজাদা বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মকে জাতির ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও এর ইতিহাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই এই মেলার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।

তিনি স্পন্সর, সংগঠক, সাংবাদিকসহ সকল স্বেচ্ছাসেকদেরকে ধন্যবাদ জানান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আগামী বছর ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ একই ভেন্যুতে ‘বৈশাখী মেলার’ তারিখ ঘোষণা করেন তারা।

এছাড়াও মেলাকে সাফল্যমণ্ডিত করতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ সিডনি, অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ড. মাসুদুল হক এবং মিডিয়া সমন্বয়কারী ও মেলা ক্রোড়পত্রের সম্পাদক ডক্টর রতন কান্ডু ও প্রবাসী কমিউনিটির সার্বিক সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।

এবারের মেলাপ্রাঙ্গণ দর্শক-অতিথিতে ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। শুধু অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাঙালিরাই নয়, অন্যান্য ভাষা-ভাষি অতিথিদের উপস্থিতিও ছিল উল্লেখযোগ্য। সিডনির দূর-দূরান্ত থেকেও মেলায় অগণিত দর্শকের সমাগম ঘটে। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট শিশু থেকে শুরু করে প্রবীণরা বিশেষ করে নারীরা বৈশাখি সাজে সজ্জিত হয়ে মেলাতে অংশ নেন।

মেলায় উপস্থিত বাংলাদেশি প্রবাসীরা বলছেন ‘ব্যাংকসটাউন প্যাসওয়ে’ নয়, এ যেন প্রবাসে বাংলা মায়ের রূপ। মাগরিবের নামাজের বিরতির পর অতিথিরা মঞ্চে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ডক্টর মোহাম্মাদ সিরাজুল হক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ড. রতন কুন্ডু।

 

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়া নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমানের প্রতিনিধি কমার্শিয়াল কাউন্সিলর সাইফুল্লাহ, উইন্ডি লিন্ডসে এমপি, ব্যাংকসটাউন- ক্যান্টারবারি সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলর কার্ল সালেহ, স্ট্রেথফিল্ড সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলর রাজ দত্ত, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যুৎ সিং চুন্নু, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মাদ আব্দুল মতিন, বাসভূমি টেলিভিশনের পরিচালক আকিদুল ইসলাম, সিটি অব ক্যাম্পবেলটাউনের কাউন্সিলর ইব্রাহিম খলিল মাসুদ প্রমুখ।

আলোচনা পর্বের পর যুঁই চৌধুরী ও হেমার উপস্থাপনায় এবং সঞ্জয় টাবুর মিউজিক, লাইটিং ও সাউন্ডের তত্ত্ববধায়নে শুরু হয় মূল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। অংশগ্রহণ করেন সিডনির স্থানীয় শিল্পীরা। বাংলাদেশ থেকে আগত মেলার অন্যতম অকর্ষণ ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগম একের পর এক সংগীত পরিবেশন করে মেলার দর্শকদের সুরের মূর্ছনায় মাতিয়ে রাখেন। আর দর্শকরাও গানের তালে তালে হেলে দুলে নেচে মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তোলেন।

ঐতিহ্যবাহী এই ‘বৈশাখী মেলা’ প্রাঙ্গণে চারিদিক ঘিরে ছিল বাঙালি খাবার ও দেশীয় পোশাকের নানাবিধ স্টল। খাবারের স্টলগুলিতে ছিল নানা ধরনের মুখরোচক দেশীয় খাবারসহ পুরি, চটপটি, পেঁয়াজু, হালিম, জিলাপি, সিঙ্গারা বিরানিসহ রকমারি পিঠা ও মিষ্টি। আর তৈরি পোশাকের স্টলগুলোতে ছিল সালোয়ার কামিজ, জামদানি ও অন্যান্য তাঁতের শাড়ির বিপুল সমাহার।

এ উপলক্ষে একটি বিশেষ ক্রোড়পত্রও প্রকাশ করা হয়। মেলায় বিভিন্ন রকমের রাইড বড় দর্শকদের যেমন গ্রাম্য নাগরদোলার স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে, তেমনি ছোট ছোট বাচ্চাদের সারাবেলা আনন্দে মাতিয়ে রেখেছিল। এ মেলায় নামাজের জন্যও আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বর্ণিল আতশবাজির মাধ্যমে রাত ১০টায় মেলার সমাপ্তি করা হয়।

প্রায় বিশ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু পরিষদ সিডনি প্রবাসে বৈশাখি মেলার আয়োজন করে আসছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *