Main Menu

প্রাপ্তি ও অর্জনে আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের পদ্ধতি

নুরুদ্দীন তাসলিম:
মানুষ চেষ্টা করে, আল্লাহ তায়ালা পূর্ণতা দেন, সফলতা দান করেন। জীবনের সব অর্জন প্রাপ্তিতে আল্লাহ তায়ালার তাওফিক সবার একান্ত সঙ্গী। তাই সব অর্জনের পর বান্দার কর্তব্য হলো আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় বা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা। শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা আদায়ের ফলে আল্লাহ তায়ালা জীবনে আরও বেশি সফলতা দান করেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ৭)

যারা কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রসন্ন হৃদয়ে, বিনয়-নম্রতার সঙ্গে এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থেকে জীবন অতিবাহিত করতে পারে তারাই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে। তাদের জীবন হয় সুখময়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘…শিগগিরই আল্লাহ শোকর আদায়কারীদের প্রতিদান দেবেন।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৪৪)

আল্লাহর জিকির ও অন্য ইবাদতের মতো আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করাও ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) একবার মুআজ (রা.)-কে বলেছেন, হে মুআজ, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাকে ভালোবাসি। অতঃপর হে মুআজ, আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যে তুমি প্রত্যেক সালাতের শেষে এই দোয়া পাঠ করবে—‘আল্লাহুম্মা আইন্নি আলা জিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনে ইবাদাতিকা।’ অর্থ : হে আল্লাহ, তুমি আমাকে তোমার জিকির, শুকরিয়া (কৃতজ্ঞতা) এবং ইবাদত করতে সাহায্য করো। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫২৪)

আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের বিভিন্ন উপায় আছে। যেমন—

১. কলব বা অন্তরের মাধ্যমে অর্থাৎ নিয়ামতদাতার নিয়ামত পেয়ে অন্তরে শুকরিয়া আদায় করা। এর পদ্ধতি হলো, আল্লাহকে ভয় করা, তাঁর অবাধ্যতার মানসিকতা না থাকা এবং তাকওয়া অবলম্বন করা।

২. ভাষার মাধ্যমে। অর্থাৎ মুখে নিয়ামতের শোকরিয়া প্রকাশ করা, গণনা করা ইত্যাদি। বুজুর্গ ব্যক্তিরা নিজের জবান দিয়ে রাতের পর রাত আল্লাহর প্রশংসা করেছেন। ফুজাইল ইবনে আয়াজ (রহ.) ও ইবনে উয়াইনা (রহ.) একবার রাতে আল্লাহর প্রশংসা করার জন্য বসেছিলেন। তাঁরা আল্লাহর প্রশংসা করতে করতে সকাল করে ফেলেন।

৩. অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মাধ্যমে শুকরিয়া হলো সালাত আদায় করা ও বেশি বেশি নেক আমল করা।

 

রাসুল (সা.) জীবনের প্রতিটি মূহূর্তে কার্যকারণ পরিবর্তনের সঙ্গে নতুন নতুন পরিস্থিতিতে আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা আদায় করতেন। যেমন—তিনি ঘুম থেকে উঠে বলতেন, সব প্রশংসা মহান আল্লাহর, যিনি আমাদের মৃত্যু দেওয়ার পর আবার জীবন দান করেছেন। আর তাঁর কাছেই তো আমাদের একত্র করা হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩১১২)

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ মুমিনের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। পরকালীন সমৃদ্ধির পাশাপাশি দুনিয়ার জীবনেও আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আরও অধিক পরিমাণ নেয়ামত লাভের মাধ্যম এ কৃতজ্ঞতা।রাসুল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

খেয়ে যে আল্লাহর শোকর আদায় করে সে ধৈর্যশীল রোযাদার ব্যক্তির সমান পুরস্কার লাভ করবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৭৬৫)

অতএব, জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করা সবার একান্ত কর্তব্য।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *