তাকওয়া অর্জন করবেন যেভাবে
মুযযাম্মিল হক উমায়ের, অতিথি লেখক:
তাকওয়া মানে সতর্ক ও সচেতন থাকা। বান্দা সতর্ক থাকবে কিছুতেই যেন গুনাহের কাজ সংঘটিত না হয়; আর নেক আমল কিছুতেই যেন না ছোটে। তাকওয়ার বৈশিষ্ট্য হল, গুনাহ হয়ে গেলে মনে অনুতাপ জাগে, আল্লাহর ভয় জাগে এবং এই উপলব্ধি জাগে যে, আমি আমার পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছি। তখন সে ব্যাকুল হয়ে আল্লাহর দিকে ফিরে যায়। তওবা করে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘এবং যারা কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা নিজেদের প্রতি জুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া কে পাপ ক্ষমা করবে? আর তারা যা করে ফেলে জেনে বুঝে তাতে অটল থাকে না।’ -(সূরা আলে ইমরান, আয়াত, ১৩৫)
নবীজি সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় হালাল (বিষয়াবলি) সুস্পষ্ট। হারামও (বস্তুসমূহ) সুস্পষ্ট। হালাল-হারামের মাঝামাঝি হলো, সন্দেহযুক্ত বস্তু। যে সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষ জানে না। অতএব যে সন্দেহযুক্ত জিনিস থেকে বেঁচে থাকবে, সে তার দীন এবং ইজ্জতকে হেফাজত করতে পারবে। আর যে সন্দেহযুক্ত জিনিসের পিছনে পড়লো, সে মূলত হারামেই পতিত হয়ে গেলো।’
হজরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, -অন্তরে যেসব সন্দেহ আসে তা ছাড়তে না পারলে কোনো বান্দা পরিপূর্ণ তাকওয়ার স্তরে পৌঁছতে পারবে না।
সন্দেহযুক্ত বস্তু দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যেসব বিষয়ে আলেমরা হালাল না হারাম উভয় দিকে মতামত প্রদান করেছেন। তা পোশাক-পরিচ্ছেদ, খাবার-দাবারে হতে পারে। মানুষের জীবন যাপনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও হতে পারে। যারা প্রকৃত মুত্তাকি তাঁরা এসব থেকেও নিজেকে বাঁচিয়ে রাখেন।
এই বিষয়ে আরেকটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। রাসুল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যা তোমার মধ্যে সন্দেহের উদ্রেক হয়, তা তুমি পরিহার করো। যা সন্দেহ নেই, তা গ্রহণ করো।’
এই বিষয়ে পূর্ববর্তী আলেমদের থেকেও উপদেশ বর্ণিত হয়েছে। তাকওয়ার উপরের স্তরে পৌঁছার জন্য তারাও বিভিন্ন পদ্ধতী বর্ণনা করেছেন। হজরত হাসান বসরি রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা বলেন, ‘মুত্তাকিরা হারামে লিপ্ত হয়ে যাওয়ার ভয়ে যতোদিন অনেক হালাল কাজ করা থেকে বিরত থাকবে, ততোদিন তাঁরা তাকওয়ার উপর থাকবে।’
হজরত সুফিয়ান বিন উয়ায়না রাহিমাহুল্লাহু তায়ালা বলেন, ‘বান্দা কখনো ঈমানের পরিপূর্ণ স্তরে পৌঁছতে পারবে না যতোক্ষণ না তার মাঝে এবং হারামের মধ্যে হালালকে পর্দা হিসাবে গ্রহণ না করবে। এবং গুনাহ এবং গুনাহের সাদৃশ্য এমনসব বস্তুকে পরিহার না করবে।’
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More