Main Menu

সুনামগঞ্জে হাওরে জলাবদ্ধতায় বিপাকে কৃষক

সুনামগঞ্জে হাওরে জলাবদ্ধতায় বিপাকে কৃষক
চলতি বোরো আবাদ মৌসুমে সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি হাওরে জলাবদ্ধতার কারণে বোরো ফসল (ধানের চারা) রোপণে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। হাওরের পানি ধীরগতিতে নিষ্কাশনের কারণে পৌষে ধানের চারা রোপণে কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় অনেক কৃষক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহৎ ফসল ভান্ডার খ্যাত পাকনা হাওরে জলাবদ্ধতার কারণে কয়েক বছর ধরে বোরো ধান আবাদে ১০-১৫ দিন বিলম্ব হচ্ছে। ফলে কৃষকদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। এছাড়াও সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জ, ধর্মপাশা উপজেলাসহ কয়েকটি হাওরে পানি না নামায় বোরো আবাদ বিলম্বিত হচ্ছে।

জেলার হাওর পাড়ের কৃষকরা জানান, বছরে একটি মাত্র বোরো ফসলের উপর জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। ফসল ঘরে উঠলে আনন্দে সময় কাটে তাদের সারা বছর। বোরো ফসল ঠিকমত ঘরে উঠলে দেশের অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখে। জামালগঞ্জের পাকনা হাওর (ফেনারবাঁক ইউনিয়ন) ও হালির হাওরে (বেহেলী ইউনিয়ন)পানি ঠিকমতো নিষ্কাশন না হওয়ায় বিপাকে রয়েছেন কৃষকরা।

পাকনা হাওরের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাকনা হাওরের পানি নিষ্কাশনের রাস্তা প্রতি বছরের মতো এবারো গজারিয়া স্লুইসগেট ও ঢালিয়া স্লুইসগেট পর্যন্ত পলি মাটিতে ভরাট হয়ে গেছে। যার ফলে সময় মত পানি নিষ্কাশন হয়নি।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৪ হাজার ৪৪৮ হেক্টর বিস্তীর্ণ এই হাওরে বোরো ধানের জমি রয়েছে ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর ও অনাবাদী ২৯০০ হেক্টর, যা থেকে আনুমানিক ৬৫ হাজার ৫০০ টন ধান উৎপাদন হয়ে থাকে। এছাড়াও জেলায় ফসলরক্ষার জন্য ৫৩টি হাওরে ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ-বেড়িবাঁধ ও ক্লোজার নির্মাণ করা হচ্ছে।

জামালগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়ন, ফেনারবাঁক ইউনিয়ন ও ভীমখালী ইউনিয়নের হাজারো কৃষক বছরে একটি মাত্র বোরো ফসল পাকনার হাওরে রোপণ করেন। কিন্তু পাকনা হাওরে জলাবদ্ধতার কারণে হাজার হাজার কৃষক দুশ্চিন্তায় থাকেন।

স্থানীয় কৃষক সিরাজ মিয়া বলেন, হাওরের পানি নিষ্কাশন করা না হলে বোরো আবাদ বিলম্বিত হবে আর আগাম বন্যায় ফসলহানির শঙ্কা থেকে যাবে। বৈশাখ মাসে ফসল ঘরে উঠে না। আগাম বন্যার কবলে ফসল তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় থাকেন কৃষকরা।

কৃষক শাকিল মিয়া বলেন, পানি নিষ্কাশনের সমস্যা নতুন কিছু নয়। প্রতি বছরেই আমরা এই সমস্যার কারণে ধান চাষ নিয়ে বিড়ম্বনায় থাকি। হাওরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গজারিয়া স্লুইসগেট ও ঢালিয়া স্লুইসগেটের নালা খনন করে দিলে হাওরে বোরো আবাদ করে ঘরে ফসল তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, আমাদের কাছে খবর রয়েছে জেলার বিভিন্ন হাওরে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকদের ফসল রোপণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব হাওরে পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রশাসনের উদ্যোগ নেয়া জরুরি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, জামালগঞ্জের পাকনার হাওরসহ কয়েকটি হাওরে জলাবদ্ধতা নিরসনে পাউবোকে সাথে নিয়ে কাজ করছি। হাওরের পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবো।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়নের বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, কয়েকটি হাওরে পানি নিষ্কাশনের জন্য আমরা পাম্পের সাহায্যে কাজ করছি। আর যেখানে পলি মাঠি খনন করে পানি নিষ্কাশন করা দরকার, সেখানে প্রকল্প করে খননের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নিচ্ছি। আশা করি এই সমস্যা দ্রুতই শেষ হবে। কৃষক ভাইদের ফসল রোপনে কোনো সমস্যা হবে না।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *