অত্যাচারীর ওপর যেভাবে আল্লাহর শাস্তি নেমে আসে
অত্যাচারীর ওপর যেভাবে আল্লাহর শাস্তি নেমে আসে
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে অফুরন্ত সুযোগ দিয়ে রাখেন। মন্দ-ভালো সব ধরনের সুযোগ দিয়ে রাখেন। এজন্য নির্ধারিত সময় দেন তিনি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেউ বিনয়ী হয়ে পরকালের চিরস্থায়ী জীবনের সম্বল তৈরি করেন।
পৃথিবীর জীবনে অহংকার, বড়াই করে অন্যের ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেন না। পরোপকারে নিজেকে নিয়োজিত করেন। সমাজে ভালো সব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। মানুষের ভালোবাসা কুড়ান।
কেউ আবার রবের দেওয়া সুযোগের অপব্যবহার করে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন। অন্যের ওপর জুলুম, নির্যাতন, যাচ্ছেতাই আচরণ করেন। ক্ষমতার সামনে তারা এতোই অন্ধ হয়ে যান যে, পরিণতি, পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে ভাবার ফুরসত থাকে না তাদের।
আচার-আচরণে তারা বুঝিয়ে দেন যে তাদের দমানোর অথবা উশৃঙ্খল জীবনের রাশ টানার কেউ নেই পৃথিবীতে। কোনো পরাশক্তিও তাদের কিছু করতে পারবে না। এমন বেপোরোয়া ভাবনা তাদের আরও বেশি উশৃঙ্খলা জীবনযাপনে উস্কে দেয়। তারা নিজেদের আরও বেশি অপরাজেয় ভেবে বসেন।
কিন্তু এই ক্ষমতা, শক্তি বা যাচ্ছেতাই জীবন চিরস্থায়ী নয়, আল্লাহ তায়ালা একদিন এর রাশ টেনে ধরেন। মানুষকে তার ক্ষুদ্রতা বুঝিয়ে দেন। যখন আল্লাহ তায়ালা ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকা সীমালঙ্ঘনকারীদের পাকড়াও করেন, তখন তাদের কোনো কূট-কৌশল কাজ করে না। কোনো পন্থাই তাদের মুক্তি দিতে পারে না। ক্ষমতার লাগাম তখন পাল্টে যায়। এক সময় নিজের পক্ষে কাজ করা শক্তিগুলোই নিজের বিরুদ্ধে কাজ করা শুরু করে।
সীমালঙ্ঘনকারী প্রতাবশালীদের শেষ মুহুর্তের অসহায়ত্ব নিয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—
الَّذِیۡنَ طَغَوۡا فِی الۡبِلَادِ ۪ۙ ١١ فَاَکۡثَرُوۡا فِیۡہَا الۡفَسَادَ ۪ۙ ١٢ فَصَبَّ عَلَیۡہِمۡ رَبُّکَ سَوۡطَ عَذَابٍ ۚۙ ١٣ اِنَّ رَبَّکَ لَبِالۡمِرۡصَادِ ؕ
যারা দেশে-দেশে অবাধ্যতা প্রদর্শন করেছিল। এবং তাতে ব্যাপক অশান্তি বিস্তার করেছিল। ফলে তোমার প্রতিপালক তাদের উপর শাস্তির কষাঘাত হানলেন। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক সকলের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। (সূরা ফাজর, আয়াত : ১১-১৩)
অপর এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
اِنَّ بَطۡشَ رَبِّكَ لَشَدِیۡدٌ
তোমার রবের শাস্তি বড়ই কঠিন। (সূরা বুরুজ, আয়াত : ১২)
এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যাচারীকে পৃথিবীতে সুযোগ ও অবকাশ দিয়ে থাকেন। আবার যখন তাকে ধরেন তখন আর ছাড়েন না। এই হাদিসের বর্ণনাকারী সাহাবী আবু মূসা আশ’আরী বলেন, তারপর রাসূল সা. কোরআনের এই আয়াতটি পাঠ করলেন, যেখানে বলা হয়েছে—
وَ كَذٰلِكَ اَخۡذُ رَبِّكَ اِذَاۤ اَخَذَ الۡقُرٰی وَ هِیَ ظَالِمَۃٌ ؕ اِنَّ اَخۡذَهٗۤ اَلِیۡمٌ شَدِیۡدٌ
তোমার প্রতিপালকের পাকড়াও এ রকমই হয়ে থাকে যখন তিনি পাকড়াও করেন কোন জনপদকে যখন তারা যুলমে লিপ্ত থাকে। অবশ্যই তাঁর পাকড়াও ভয়াবহ, বড়ই কঠিন। (সূরা হুদ, আয়াত ১০২)
অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা যেমন পূর্ববর্তী অত্যাচারী জনপদসমূহকে ধ্বংস করেছেন, একইভাবে ভবিষ্যতেও তিনি অত্যাচারীদেরকে পাকড়াও করার ক্ষমতা রাখেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, নবীজি সা. বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই অত্যাচারীদেরকে ঢিল দেন। কিন্তু যখন তাদেরকে পাকড়াও করেন, তখন কোন সুযোগ দেন না। (বুখারি, মুসলিম)
Related News
দান করে ছবি তোলা যাবে? ইসলাম কী বলে
দান করে ছবি তোলা যাবে? ইসলাম কী বলে বিপদ-আপদে মানুষের পাশে মানুষ দাঁড়ায়, সহযোগিতায় এগিয়েRead More
সামান্য নেক আমলও পরকালে যেভাবে মুক্তি দেবে
সামান্য নেক আমলও পরকালে যেভাবে মুক্তি দেবে একজন মুসলমানের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান পবিত্র গ্রন্থ আলRead More