Main Menu

যাকাতের নিয়তে ঋণের টাকা মাফ করা যাবে?

যাকাতের নিয়তে ঋণের টাকা মাফ করা যাবে?

কারো কাছে নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্তি সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ তোলার রূপার সমতুল্য সম্পদ এক বছর থাকলে এবং তা বর্ধনশীল সম্পদ হলে যাকাত ফরজ হবে।

যাকাতের হকদারদের অন্যতম হলেন গরিব, দুঃখী, অসহায় মানুষ। যাদের সহায়-সম্পত্তি ও চলাচলের সঙ্গতি নেই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

إِنَّمَا ٱلصَّدَقَٰتُ لِلۡفُقَرَآءِ وَٱلۡمَسَٰكِينِ وَٱلۡعَٰمِلِينَ عَلَيۡهَا وَٱلۡمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمۡ وَفِي ٱلرِّقَابِ وَٱلۡغَٰرِمِينَ وَفِي سَبِيلِ ٱللَّهِ وَٱبۡنِ ٱلسَّبِيلِۖ فَرِيضَةٗ مِّنَ ٱللَّهِۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٞ

নিশ্চয় সদকা হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য, (তা আরও বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ৬)

সমাজে চলাফেরা করতে গিয়ে অনেককে টাকা ঋণ দেওয়া হয়। কোনো ব্যক্তি যদি এতোটা গরিব হয় যে, ঋণ নেওয়ার পর তার কাছে সেই ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য নেই। এদিকে ঋণদাতার ওপর যাকাত ফরজ। তাহলে ঋণদাতা তার পাওনা টাকা যাকাতের নিয়তে মাফ করে দিতে পারবেন কিনা? এবং এভাবে যাকাতের নিয়তে ঋণের টাকা মাফ করলে তার যাকাত আদায় হয়ে যাবে কিনা?

এই বিষয়ে ফেকাহবিদ আলেমরা বলেন, ঋণ মাফ করিয়ে দেবার মাধ্যমে যাকাত আদায়ের নিয়ত করলে যাকাত আদায় হবে না।

তবে এ ক্ষেত্রে পদ্ধতি হল, প্রথমে ঋণগ্রহীতাকে যাকাত বাবদ টাকা প্রদান করতে হবে। তারপর ঋণ পরিশোধ হিসেবে তার কাছ থেকে নিয়ে নিবে।

এভাবে যাকাত এবং ঋণ দু’টোই আদায় হবে। ঋণগ্রহীতাকে টাকা হস্তান্তর না করে শুধু মাফ করে দিলেই যাকাত আদায় হবে না। (রদ্দুল মুহতার ২/২৭০-২৭১; আলবাহরুর রায়েক ২/২১১)

কোরআনে যাকাত প্রদানের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা সালাত আদায় কর এবং যাকাত প্রদান কর। তোমরা যে উত্তম কাজ নিজেদের জন্য অগ্রে প্রেরণ করবে তা আল্লাহর নিকটে পাবে। নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখছেন। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১১০)

অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা সালাত আদায় কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার।’ (সূরা নূর, আয়াত : ৫৬)

যারা যথাযথভাবে সম্পদের যাকাত আদায় করে তাদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছেন আল্লাহ তায়ালা। বর্ণিত হয়েছে, ‘এবং যারা সালাত আদায় করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও পরকালে ঈমান রাখে আমি তাদেরকে মহাপুরস্কার দিব।’ (সূরা নিসা, আয়াত : ১৬২)

যাকাত আদায়ের পুরস্কারের পাশাপাশি পবিত্র কোরআনে যাকাত অনাদায়ের শাস্তির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—

‘এবং যারা সোনা ও রুপা জমা করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, আপনি তাদের বেদনাদায়ক আজাবের সুসংবাদ দিন, যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দিয়ে তাদের কপালে, পার্শ্বদেশে ও পিঠে সেঁক দেওয়া হবে। (আর বলা হবে) এটা তা-ই, যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ করো।’ (সূরা তাওবা, আয়াত : ৩৪-৩৫)






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *