কিয়ামতের দিন মানুষ যে ৩ দলে ভাগ হবে
কিয়ামতের দিন মানুষ যে ৩ দলে ভাগ হবে। পৃথিবীর সব কিছু একদিন ধ্বংস হবে। সংঘটিত হবে কেয়ামত দিবস। পৃথিবীতেই হবে কিয়ামতের ময়দান। এ সম্পর্কে কোরআনে এসেছে, ‘(বিচার দিবসে) আল্লাহ জমিনকে এমন সমতল মসৃণ ধূসর ময়দানে পরিণত করবেন যে, তুমি তাতে কোনো বক্রতা ও উচ্চতা দেখতে পাবে না। ’ (সূরা ত্বহা, আয়াত, ১০৬-১০৭)
হাদিসের ভাষ্য মতে, পৃথিবীর উপরিভাগে একটি চাদর রয়েছে, একে পার্শ্ব ধরে টান দেওয়া হবে। ফলে গাছপালা, পাহাড়-পর্বত সাগরে পতিত হবে। এরপর সমতল হয়ে যাবে। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘আর আমি জমিনের উপরিভাগকে (বিচার দিবসে) উদ্ভিদশূন্য মাটিতে পরিণত করে দেব। ’ (সূরা কাহাফ, আয়াত, ৮)
কিয়ামতের ময়দানে সূর্য মানুষের এত কাছাকাছি চলে আসবে যে কেউ কেউ নিজের ঘামের মধ্যে হাবুডুবু খাবে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন মানুষের ঘাম ঝরবে। এমনকি তাদের ঘাম জমিনে সত্তর হাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে এবং তাদের মুখ পর্যন্ত ঘামে ডুবে যাবে; এমনকি কান পর্যন্ত। (বুখারি, হাদিস, ৬৫৩২)
কিয়ামতের কঠিন দিনে মানুষ তিন দলে ভাগ হয়ে যাবে। এক দল আরশের ডান পাশে থাকবে। তারা আদিপিতা হজরত আদম আলাইহিস সালামের ডান পাশ থেকে সৃষ্টি হয়েছিল এবং তাদের আমলনামা তাদের ডান হাতে দেওয়া হবে। তারা সবাই জান্নাতি।
দ্বিতীয় দল আরশের বামদিকে একত্রিত হবে। আদম আলাইহিস সালামের বাম পাশ থেকে তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তাদের আমলনামা তাদের বাম হাতে দেওয়া হবে। তারা সবাই হবে জাহান্নামী। (ইবনে কাসির)
তৃতীয় দল হবে অগ্রবর্তীদের দল। তারা আরশের অধিপতির সামনে বিশেষ স্বাতন্ত্র্য ও নৈকট্যের আসনে থাকবে। তারা হবেন নবী, রাসূল, সিদ্দীক, শহীদ ও ওলীগন। তাদরে সংখ্যা প্রথমোক্ত দলের তুলনায় কম হবে।
ইমাম আহমদ রহিমাহুল্লাহ আম্মাজান হজরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণনা করেছেন, একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কিরামকে প্রশ্ন করলেন, তোমরা জান কি, কিয়ামতের দিন আল্লাহর ছায়ার দিকে কারা অগ্রবর্তী হবে?
সাহাবায়ে কিরাম বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূল ভালো জানেন। তিনি বললেন, তারাই অগ্রবর্তী হবে, যাদেরকে সত্যের দাওয়াত দিলে কবুল করে, যারা প্রাপ্য চাইলে পরিশোধ করে এবং অন্যের ব্যাপারে তাই ফয়সালা করে, যা নিজের ব্যাপারে করে।
ইবনে সিরিনের মতে যারা বায়তুর মুকাদ্দাস ও বায়তুল্লাহ- উভয় কেবলার দিকে মুখ করে নামাজ পড়েছে তারা অগ্রবতীদের অন্তর্ভু্ক্ত।
হজরত হাসান ও কাতাদা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা বলেন, প্রত্যেক উম্মতের মধ্যে অগ্রবর্তী দল হবে। কারো কারো মতে যারা সবার আগে মসজিদে যায়, তারাই অগ্রবর্তী।
এই উক্তিগুলো উদ্ধৃত করে ইবনে কাসির রহিমাহুল্লাহ বলেন, এসব উক্তি স্ব স্ব স্থানে সঠিক ও বিশুদ্ধ। এগুলোর মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। কারণ, দুনিয়াতে যারা সৎ কাজে অন্যের থেকে এগিয়ে থাকে, পরকালেও তারা অগ্রবতী হিসেবে গণ্য হবে। কারণ, পরকালের প্রতিদান দুনিয়ার আমলের ভিত্তিতে দেওয়া হবে।
(তাফসিরে ইবনে কাসির, ৮/২৬৬)
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More