Main Menu

গিবত থেকে বেঁচে থাকলে যে উপকার পাবেন

ধর্ম ডেস্ক:
ইসলামের দৃষ্টিতে গিবত বা পরনিন্দা মারাত্মক গুনাহগুলোর একটি। গিবতের ভয়াবহতা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর তোমরা একে অপরের গিবত করো না। তোমাদের কেউ কি এটা পছন্দ করবে যে, সে তার মৃত ভাইয়ের গোশত খাবে। নিশ্চয়ই তোমরা এটাকে অপছন্দ করবে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চই আল্লাহ তায়ালা সিমাহীন ক্ষমাকারী এবং দয়ালু।’ ( সূরা হুজরাত, আয়াত, ১২)

হাদিসে গিবতের ভয়াবহতা

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘ব্যভিচার করার পর মানুষ আল্লাহর কাছে তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা তওবা কবুল করেন। কিন্তু গিবতকারী ব্যক্তিকে যে পর্যন্ত ওই ব্যক্তি (যার গিবত করা হয়েছে) ক্ষমা না করে; ততোক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না।’ (মিশকাত)।

অপর এক হাদিসে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি তার দুই চোওয়ালের মাঝের অঙ্গ (মুখ) এবং দুই রানের মধ্যবর্তী অঙ্গ (লজ্জাস্থান) হেফাজতের দায়িত্ব নিবে আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব নিব।- (সহীহ বুখারী, হাদিস, ৬১০৯)

এজন্য গিবত থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। যে ব্যক্তি গিবত থেকে নিজেকে রক্ষা করবে, সে বিশেষ কিছু উপকার পাবে। এখানে গিবত থেকে বেঁচে থাকার কিছু উপকার তুলে ধরা হলো-

গিবত থেকে বেঁচে থাকার উপকার

>> গিবত করা মুসলমানের গোশত খাওয়ার সমতুল্য অপরাধ। যে ব্যক্তি গিবত থেকে বেঁচে থাকে সে এই জঘন্য পাপ থেকে রক্ষা পাবে।

>> জেনা করার থেকে মারাত্মক গিবত করা। যে ব্যক্তি গিবত ত্যাগ করলো সে এই মারাত্মক পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করলো।

>> গিবতের কারণে রোজার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও নষ্ট হয়ে যায়। যে ব্যক্তি গিবত থেকে বিরত থাকে সে নিজের রোজাকে হেফাজতের চেষ্টা করে থাকে।

>> গিবতের কারণে অজু ক্ষতিগ্রস্থ হয়। হানাফি মাজহাব মতে কোনো ব্যক্তি অজু করার পর গিবত করলে বা মিথ্যা বললে আবারো নতুন করে অজু করা উচিত।

ইবরাহিম নাফাঈ রহ. বলেন, দুটি কারণে অজু নষ্ট হয়। ১. পেশাব পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হলে। ২. কোনো মুসলমানকে কষ্ট দিলে। (বায়হাকী)

আম্মাজান হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, ঘুমের কারণে যেভাবে অজু নষ্ট হয়, ঠিক একিভাবে মিথ্যাচার ও গিবতের কারণেও অজু নষ্ট হয়। ( দুররে মানসুর)

তাই যে ব্যক্তি গিবত থেকে বিরত থাকলো সে নিজের অজুকে রক্ষা করলো। আর ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ ও কোরআন স্পর্শ করে তিলাওয়াতের জন্য অজু আবশ্যক। অজু ছাড়া এই ইবাদতগুলো পালন করা যায় না।

>> পবিত্র কোরআনে গিবতকে হারাম বলা হয়েছে। তাই কোনো ব্যক্তি গিবত থেকে বিরত থাকলে হারাম কাজ অর্থাৎ, কবিরা গুনাহে লিপ্ত হওয়া থেকে বেঁচে গেল।

>> গিবতের মাধ্যমে অন্যকে আঘাত করা হয়। সুফিয়ান সাওরি রহ, বলেছেন, আমি কোনো ব্যক্তির গিবত করার থেকে তাকে তীর দিয়ে আহত করাকে সহজতর অপরাধ মনে করি। তাই যে ব্যক্তি গিবত ত্যাগ করলো সে অন্যকে আহত করা থেকে বিরত থাকলো।

>> যে ব্যক্তি নিজের বাকশক্তি নিয়ন্ত্রণ না করে অন্যের গিবত করে বেড়ায়, সে মানুষের কাছে অপমানিত হয়। তাই গিবত থেকে বিরত থাকলে নিজেকে অপমানের হাত থেকে রক্ষা করা যায়।

>> গিবত থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে নিজের অন্তরকে পরিচ্ছন্ন ও নির্মল রাখা যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মুমিন যখন কোনো গুনাহে রকাজ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। (ইবনে মাজা)

তাই গিবত থেকে বেঁচে থাকলে অন্তরে দাগ পড়া থেকে বেঁচে থাকা যায়। এতে করে অন্তর স্বচ্ছ থাকে।

>> যে ব্যক্তি অন্যের গিবত করে না, সে কিয়ামতের দিন লজ্জিত ও অপমানিত হবে না। কারণ সে মানুষের মান-সম্মানে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থেকেছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *