সুন্নত আমলে গুরুত্ব দিলে যে উপকার
ধর্ম ডেস্ক:
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের ওপর বিশেষ ফজিলত রয়েছে। সুন্নত পালনের মাধ্যমে একজন মানুষ আল্লাহ তায়ালার আরও বেশি কাছে যেতে পারে। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও সুন্নত আঁকড়ে ধরার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন।
হজরত আবু নাজিহ আল-ইরবাদ ইবনু সারিয়াহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে এমন এক মর্মস্পর্শী বক্তব্য শোনালেন যে, তাতে অন্তর ভীত হলো এবং চোখ দিয়ে পানি ঝড়লো। সুতরাং আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল! এ যেন বিদায়ী ভাষণ মনে হচ্ছে। তাই আপনি আমাদেরকে অন্তিম উপদেশ দিন।’ তিনি বললেন, ‘আমি তোমাদেরকে আল্লাহভীতি এবং (রাষ্ট্রনেতার) কথা শোনার ও তার আনুগত্য করার উপদেশ দিচ্ছি। যদিও তোমাদের উপর কোন নিগ্রো (আফ্রিকার কৃষ্ণকায় অধিবাসী) রাষ্ট্রনেতা হয়।
(স্মরণ রাখ!) তোমাদের মধ্যে যে আমার পর জীবিত থাকবে, সে অনেক মতভেদ বা অনৈক্য দেখবে। সুতরাং তোমরা আমার সুন্নত ও সুপথপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদ্বীনের রীতিকে আঁকড়ে ধরবে এবং তা দাঁত দিয়ে মজবুত করে ধরে থাকবে। আর তোমরা দ্বীনে নব উদ্ভাবিত কর্মসমূহ (বেদআত) থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ, প্রত্যেক বেদআতই ভ্রষ্টতা।’ (আবু দাউদ, দারেমি, তিরমিজি)
নবীজির সুন্নত আঁকড়ে এবং তাকে অনুসরণের মধ্যেই মানুষের সফলতা রয়েছে। এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর। যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হতে পারঅ’ (আলে ইমরান, আয়াত, ১৩২)।
আরেক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও নারীগণ পরস্পরের বন্ধু। তারা সৎকাজের আদেশ দেয় ও অসৎ কাজে নিষেধ করে। তারা নামাজ কায়েম করে ও জাকাত আদায় করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে। এসব লোকের প্রতি আল্লাহ অবশ্যই অনুগ্রহ বর্ষণ করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাবান’ (তওবা, আয়াত, ৭১)।
মুহিউস্সুন্নাহ খ্যাত প্রখ্যাত বুজুর্গ আলেম মাওলানা শাহ আবরারুল হক রহ. বলেছেন, কারো মাঝে সুন্নত পালনের অভ্যাস পড়ে উঠলে তিনি বিশেষ কিছু মর্যাদা ও ফজিলত। তাহলো-
১. আল্লাহ তায়ালা তাকে একজন শহীদ সাহাবী (রা.)’র এর মতো নেকী দেবেন।
২. নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের ওপর আমলে অভ্যস্ত ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার বিশেষ ভালোবাসায় সিক্ত হবেন।
৩. এমন ব্যক্তি খোদ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসায় সিক্ত হবে।
৪. এমন মানুষকে নেককার লোকেরাও ভালোবাসে।
৫. বদকার বা খারাপ মানুষের তাকে দেখে ভয় পায়।
৬. আল্লাহ তার দীনদারীকে মজবুত করে দেন।
৭. গুনাহ বর্জন সহজ হয়ে যায়। ছোট বাচ্চাকে তার মা যেভাবে বিপদ থেকে বাঁচায়, আল্লাহ তাকেও সেভাবে গুনাহ থেকে হেফাজত করেন।
৮. নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতের ওপর আমলে অভ্যস্ত ব্যক্তির রিজিকে আল্লাহ তায়ালা বরকত দান করেন।
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More