রোজার শুরুতেই নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন
পল্লব ভট্টাচার্য্য:
প্রতি বছর রোজা এলেই নিত্যপণ্যের দামে আগুন লেগে যায়। এটা যেন বৈধ করে নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এবারের রোজাতেও এর কোনো ব্যতিক্রম নেই। রমজানের আগেই সিলেটে বেড়েছে সবকিছুর দাম। নিত্যপণ্যে থেকে শুরু করে দাম বেড়েছে মাংস, মুরগি, ছোলা, পেঁয়াজ, চিনি, খেজুর, ডাল। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে সবজির বাজারেও লেগেছে আগুন।
ইফতারিতে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য শরবতে ব্যবহৃত লেবু বাজারে বিক্রি হচ্ছে হালি প্রতি সর্বনিম্ন ৩০ টাকায়। যদিও এর মান খুব একটা ভালো নয়। আর একটু বড় সাইজের ভালো মানের এলাচি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা হালি। ইফতারিতে বেগুনি বানানোর জন্য যে লম্বা বেগুন ব্যবহার করা হয়, তার দাম প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। সালাতের জন্য নেওয়া হয় টমেটো। যে টেমেটো আগে পাওয়া যেতো ১৫ থেকে ২০ টাকায় তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। আর কাচামরিচ ১২০ টাকা, কলরা ৬০ টাকা। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে সরবরাহ কমের অজুহাত দেখাচ্ছেন বিক্রেতারা।
সারাদিন রোজা শেষে ইফতারের সময় মানুষ নিতে চান ছোলা স্বাদ। এটা যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। রমজানের সময় দোকানগুলোতে ইফতারের পসরায় যেমন শোভা পায় ছোলা-বেগুনি, তেমনি প্রতিটি বাড়িতে ইফতারের আইটেমে থাকে বেগুনি, ছোলাসহ নানা মুখরোচক খাবার। তাই রোজার আগেই বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ছোলা দামও। ছোলা বিক্রি হচ্ছে তিন ভাগে। একটা পাওয়া যায় ৮৫ টাকা আরেকটা ৯৫ টাকা আর ভালোটা ১০৫ টাকা। বেসনের দাম গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ টাকা কেজিতে।
অপরদিকে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি। একইভাবে সোনালি মুরগি ৩৫০ ও লাল মুরগি ৬৮০ টাকা, খাসির মাংস ৯৫০ টাকা আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭২০ টাকায়।
তোফায়েল নামের এক ক্রেতা বলেন, খবরে দেখেছি রোজা আসলে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সবকিছুর দাম কমে। আমাদের দেশে এর উল্টোটা হয়। যে যার মতো করে দাম বাড়িয়ে দেয়। ইতিহাসের সর্বোচ্চ দাম ২৫০ টাকা কেজিতে কিনলাম ব্রয়লার মুরগি। বেগুন কিনতে গিয়ে শুনি এর দামও ৭০ টাকায় ঠেকেছে, আর শসা কিনেছি ৫০টাকায়। রমজান আসলেই অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দেয় সবকিছুর দাম। ফলে চাহিদা মতো বাজার না কিনতে পারছি না। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে।
অন্যদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পেঁয়াজ ও আদার দাম। বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ১১০-১২০ টাকার মধ্যে ছিল। এছাড়া ২০-২৫ টাকার মধ্যে থাকা পেঁয়াজ এখন ৩৫-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
আদা-পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে বিক্রেতা আল-আমিন বলেন, চীনে আদার দাম বেড়েছে। সরবরাহ কম আছে পেঁয়াজেরও। তাই দামও বেশি রাখতে হচ্ছে।
এদিকে চালের দাম স্থির আছে তবে সেটা স্বস্তি দেওয়ার মতো না। পাইকারি বিক্রেতা তানভীর সিদ্দিক জানান মোটা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি, আটাশ ৬৫-৭০ টাকা, মিনিকেট ৭০-৭৫ কেজি বিক্রি হচ্ছে, স্বর্ণ চাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা।
ব্যবসায়ী জসিম বলেন, বাজারে মুরগির ব্যাপক চাহিদা। কিন্তু সরবরাহ কম। পাশাপাশি মুরগির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পণ্যের দাম বাড়তি। ফলে মুরগি বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া মাছের বাজার আগুন। ১৭০ টাকার নিচে কোনো মাছ নেই।
Related News
সুনামগঞ্জে হাওরে জলাবদ্ধতায় বিপাকে কৃষক
সুনামগঞ্জে হাওরে জলাবদ্ধতায় বিপাকে কৃষক চলতি বোরো আবাদ মৌসুমে সুনামগঞ্জের বেশ কয়েকটি হাওরে জলাবদ্ধতার কারণেRead More
ভারতের উচিত সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা: মির্জা ফখরুল
ভারতের উচিত সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা: মির্জা ফখরুল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,Read More