Main Menu

চুনারুঘাটে একই পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধার

নিউজ ডেস্ক:
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন- গাদিশাইল গ্রামের সূয্যুল হক (৪৫), তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৩৫) ও সন্তান ইয়াছিন মিয়া (১০)। পুলিশের ধারণা, স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার পর স্বামী আত্মহত্যা করেছেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার গাদিশাইল গ্রামের একটি বাড়ি থেকে এ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গাদিশাইল গ্রামের আব্দুল হকের পুত্র সুর্যল হক(৪০) প্রায় ১৩ বছর আগে হবিগঞ্জের সদর উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের জেসমিন আক্তার (৩৫) কে বিয়ে করে। বিয়ের পর তার কোলেজুড়ে ৪ সন্তান জন্মগ্রহণ করে। তারা হলেন: ইয়াছিন (১০), জিহান মিয়া (৭) শিরিন (৪), আইরিন (২) । এর মধ্যে বড় ছেলে প্রতীবন্ধী। অভাবের সংসার, তাই বড় ছেলে ইয়াছিনকে নিয়ে তার মা জেসমীন আক্তার ভিক্ষাবৃত্তি করতেন। আর পিতা বাড়িতেই ব্যাথের কাজ করতেন। এ অবস্থায় তারা খুবই কষ্টে জীবন-যাপন করতেন। ফলে তাদের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত।

এ নিয়ে উভয়ের মাঝে দাম্পত্য কলহ চলত প্রায়ই। জেসমিন আক্তার মাঝেমধ্যে ভিক্ষা করে চলতেন আর কখনো তার পিতার কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে সংসার চালাতেন। স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, সুর্যল হক প্রায় সময় গাঁজা সেবন করে মাতলামি করতেন এবং তার স্ত্রীকে মারপিটও করতেন। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার উভয়ের মধ্যে পুনরায় বাকবিতন্ডা হয়। এর আগেও সুর্যল হক একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, অভাবের তাড়নায় পারিবারিক কলহের জের ধরে বৃহস্পতিবার কোন একসময় স্ত্রী জেসমিন আক্তার ও শিশু ইয়াসিনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে নিজেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন সুর্যল হক। ভাগ্যক্রমে শিশু আইরিন তার কবল থেকে বেছে যায়, তাকে হত্যার চেষ্টা করে পিতা। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল কাদির লস্কর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: শামছুল হক , মাধবপুর সার্কেল নির্মলেন্দু চক্রবর্তী।

চুনারুঘাট থানার ওসি মো. রাশেদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিকেলে একটি গাছের মগডালে ঝুলন্ত অবস্থায় সূয্যুলের মরদেহ পাওয়া যায়। একই সময়ে বসতঘরের খাটে প্রতিবন্ধী সন্তান এবং খাটের নিচ থেকে তার স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শিশুটির শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন নেই।

তবে ওই নারীর গায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মরদেহের সুরতহাল তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে পরে বলা যাবে।

স্থানীয় আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন পলাশ বলেন, খবর পেয়ে আমি স্থানীয় মেম্বারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। এখনই বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছে।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার আব্বাস উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে আমি ওই বাড়িতে ছুটে যাই। পুলিশ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে সে বিষয়ে কেউই কিছু বলতে পারছেন না।

হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি বলেন, পরিবারটি অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল ছিল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে সূয্যুল হক তার স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেছেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *