Main Menu

গোপন ইবাদতের সুফল

শায়েখ উমায়ের কোব্বাদী, অতিথি লেখক:
শয়তান আমাদের প্রধান শত্রু। নির্জনে গুনাহয় লিপ্ত থাকার অর্থ হল, আমি আমার নির্জনতা কাটালাম আমার প্রধান শত্রুর সঙ্গে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَمَن يَكُنِ ٱلشَّيْطَٰنُ لَهُۥ قَرِينًا فَسَآءَ قَرِينًا
আর শয়তান কারও সঙ্গী হলে সে সঙ্গী কত মন্দ! (সূরা নিসা ৩৮)

এ কারণেই ইবনুল কাইইয়িম রহ. বলেন,

أجمع العارفون بالله ان ذنوب الخلوات هي أصل الانتكاسات، وأن عبادات الخفاء هي أعظم أسباب الثبات

সকল আউলিয়ায়ে কেরাম একমত যে, বান্দার গোপন গুনাহ দ্বীনের পথে তার পিছিয়ে পড়ার মূল কারণ। আর বিপরীতে গোপন ইবাদত দ্বীনের পথে অবিচল থাকার অন্যতম উপায়। (মাউকিউ দুরারিস সুন্নিয়্যা ১/২৪৩)

এছাড়াও গোপন ইবাদতের অনেক উপকারিতা রয়েছে। যেমন –

১. গোপন ইবাদত অন্তরে রিয়া (লোক দেখানো মনোভাব) সৃষ্টি না হওয়ার জন্য খুব সহায়ক। আর এ কথা অজানা নয় যে, অন্তরে রিয়া বা লোক দেখানো মনোভাব সৃষ্টি হলে এমন ইবাদত শুধু বাতিল হয় না বরং তা ছোট শিরকে রূপান্তরিত হয়।

হাদিসে এসেছে, মাহমুদ ইবনে লাবিদ রা. বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

‘আমি তোমাদের ওপর যা ভয় করি তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হচ্ছে শিরকে আসগর (ছোট শিরক)। সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! শিরকে আসগর কি? তিনি বললেন, ‘রিয়া (লোক দেখানো আমল)। আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তাদেরকে (রিয়াকারীদের) বলবেন, যখন মানুষকে তাদের আমলের বিনিময় দেয়া হবে: তোমরা তাদের কাছে যাও যাদেরকে তোমরা দুনিয়াতে দেখাতে, দেখ তাদের কাছে কোন প্রতিদান পাও কি না’। (মুসনাদে আহমদ- হাদিসটি সহিহ)

২. গোপন ইবাদতকারীর জন্য হাশরের ময়দানে আরশের ছায়াতলে আশ্রয় লাভের সুযোগ।

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে দিন আল্লাহর রহমতের ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা তাঁর ছায়ায় (অন্য বর্ণনায় তাঁর আরশের ছায়ায়) আশ্রয় দিবেন। তারা হলেন-

১. ন্যায়পরায়ণ শাসক,
২. সে যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তার রবের ইবাদতের মধ্যে।
৩. সে ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে লেগে রয়েছে।
৪. সে দুব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালোবাসে আল্লাহর ওয়াস্তে। তারা একত্র হয় আল্লাহর জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য।
৫. সে ব্যাক্তি যাকে কোন উচ্চ বংশীয় রূপসী নারী আহ্বান জানায়, কিন্তু সে এ বলে তা প্রত্যাখ্যান করে যে, ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’,।
৬. সে ব্যাক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না ,
৭. সে ব্যাক্তি যে নির্জনে আল্লাহর জিকির করে, ফলে তার দু’চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হয়। (সহীহ বুখারি (ইসলামিক ফাউন্ডেশন),১০/ ৪২৮)

৩.. গোপন ইবাদত অন্তরের পবিত্রতা, নিয়তের পরিশুদ্ধতা, ইবাদতে সত্যবাদিতা, এবং আল্লাহর প্রতি তাকওয়া বা আল্লাহভীতির প্রমাণ।

৪. গোপন ইবাদত আল্লাহর সাথে বান্দার ঘনিষ্টতা ও সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিরাট মাধ্যম।






Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *