Main Menu

অভিবাসীদের আফ্রিকায় বিতাড়ন চায় জার্মানিও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জার্মাানিতে থাকার অধিকার নেই এমন আশ্রয় প্রত্যাশীদের আফ্রিকার কোন দেশে স্থানান্তর করতে চায় জার্মানি। বর্তমানে আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়াকে স্থানান্তর করার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে দেশটি। জার্মানির অভিবাসন বিষয়ক নতুন বিশেষ কমিশনার ইওয়াখিম স্ট্যাম্পের এমন ইঙ্গিতে সায় দিয়েছেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস।

বিশেষ কমিশনার স্ট্যাম্প বলেন, ‘‘ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করা ব্যক্তিদের আশ্রয়ের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে তাদের উত্তর আফ্রিকায় নেয়া যেতে পারে। তবে এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি আরও সময় দরকার।

আফ্রিকায় আশ্রয় প্রক্রিয়া স্থানান্তরের প্রক্রিয়াটি অবশ্য জার্মান রাজনীতিবিদদের মধ্যে নতুন কিছু নয়৷ এর আগে ২০১৬ সালে এমন কথা শোনা গিয়েছিল সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থমাস দেমেজিয়েরের কণ্ঠে। তিনি বলেছিলেন, ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের উত্তর আফ্রিকার অভ্যর্থনা শিবিরে নিয়ে সেখানেই তাদের আশ্রয় আবেদন যাচাই-বাছাই হওয়া উচিত। তার উত্তরসূরি হর্স্ট জেহোফার প্রস্তাবটিকে সমর্থন দিয়েছিলেন।

তবে আইনি বাধা এবং আফ্রিকান রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতার অভাবে পরিকল্পনাটির বাস্তব রূপ দেয়া যায়নি। ফের এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জার্মানিকে নেতৃত্ব দিয়ে আসা বর্তমান সরকারও তৃতীয় একটি দেশে আশ্রয় আবেদন যাচাই-বাছাই করা প্রক্রিয়া স্থানান্তরের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে।

জানা গেছে, তৃতীয় একটি দেশে আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে সক্রিয় হয়েছে আরো কয়েকটি দেশ। তিন বছর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়া যুক্তরাজ্য আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য অর্থায়ন এবং প্রক্রিয়াকরণ এবং আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করে। এজন্য তারা ১৬০ মিলিয়ন ইউরো অবশ্য অনুদান দিয়েছে।

তবে, এখনও কাউকে রুয়ান্ডায় পাঠাতে পারেনি ব্রিটিশ সরকার। কারণ তৃতীয় দেশে রেখে আশ্রয় আবেদন যাচাই-বাছাই করার প্রক্রিয়া কতোটা আইনানুগ, তা নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরেক দেশ ডেনমার্কও অবশ্য যুক্তরাজ্যের পথে হাঁটছে। এরই মধ্যে রুয়ান্ডা আশ্রয় প্রক্রিয়ার নিষ্পত্তির একটি বিকল্প হতে পারে কিনা তাও খতিয়ে দেখেছে। তবে একা এই কাজটি করতে চায় না ডেনমার্ক।

সমালোচকরা বরাবরই এর বিরোধিতা করে আসছেন। তারা জোর গলায় বলেছেন, মানবাধিকার পরিস্থিতি বিবেচনায় আফ্রিকান দেশটির রেকর্ড এবং প্রতিবেশী গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর সঙ্গে চলমান শত্রুতার কারণে সুরক্ষার প্রয়োজনে সেই দেশে লোক পাঠানো নিরাপদ নয়।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, এমন চর্চা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

প্রত্যাবাসন এবং বিতাড়ন চান ওলাফ শলৎস

সাপ্তাহিক সংবাদপত্র ‘বিল্ড আম সনটাগ’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, আশ্রয় প্রক্রিয়ার সংস্কারের অংশ হিসেবে, কারও আশ্রয় আবেদন বাতিল হলে তাকে তার নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘‘যদি জার্মানি নিপীড়িত লোকদের সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয়, তবে যারা এই সুরক্ষা দাবি করতে পারে না তাদের অবশ্যই তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।’’

আইনি পথে বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ কর্মীরা যাতে জার্মানিতে আসতে পারে, সে পথ খোলা রাখা হবে বলেও জানান শলৎস। তার আগে সেইসব দেশগুলোকে তাদের দেশের অপরাধী, বিপজ্জনক ব্যক্তি, আশ্রয় আবেদন বাতিল হওয়া ব্যক্তিদের নিজে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে বলেও সাফ জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে অভিবাসন বিষয়ক কমিশনার ইওয়াখিম স্ট্যাম্পও বিতাড়ন নীতির পক্ষে। বিতাড়ন নীতি বাস্তবায়নে জার্মান কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতার মাত্রা উন্নত করতে হবে এমন মত তার।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *