যুক্তরাষ্ট্রে শতাব্দীর ভয়াবহ তুষার ঝড়, মৃত বেড়ে ৬২

বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
উত্তর আমেরিকা জুড়ে ভয়ংকর তুষার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত ৬২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কেবল যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যেই ২৮ জন মারা গেছে। বেশিরভাগ মৃত্যু ঘটেছে বাফেলোতে। আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে, নিউ ইয়র্কে আরও প্রায় নয় ইঞ্চি তুষারপাত হতে পারে।
এ তুষার ঝড় শুরুর পর থেকে কয়েক হাজার মানুষ এখনো বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার কাছে গ্রেট লেক থেকে মেক্সিকান সীমান্তের রিও গ্র্যান্ডে পর্যন্ত বিস্তৃত এই ঝড়ে কমপক্ষে ৬২ জন মারা গেছে। এদের মধ্যে ২৮ জন নিউ ইয়র্কের পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দা। মঙ্গলবার পর্যন্ত এই এলাকায় ৯ ইঞ্চি তুষারপাত হতে পারে বলে আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল।
নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বাফেলোতে মারা গেছে ২০ জন। এখানকার যানবাহনে ও তুষারের নিচে মৃতদেহগুলো পাওয়া গেছে। বাফেলো বিমানবন্দরের ৯০ শতাংশ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। তুষার ঝড়ের কারনে দেয়া জরুরি অবস্থার মধ্যেই বেশ কিছু জায়গা থেকে লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে।
এ অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি তহবিল অনুমোদন করেছেন।
টুইটারে তিনি লিখেছেন, আমার হৃদয় তাদের সাথে যারা এই ছুটির সপ্তাহান্তে প্রিয়জনকে হারিয়েছে।
এরি কাউন্টির নির্বাহী মার্ক পোলোনকারজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “আমরা টানেলের শেষের দিকে আলো দেখতে পাচ্ছি, তবে এটি এখনও শেষ হয়নি।”
নিউইয়র্ক রাজ্যের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অনেক মানুষ দুদিনের বেশি সময় ধরে তাদের গাড়িতেই আটকে পড়েছিলেন তাদের জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর ঝড়ের মুখে পড়ার পর।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিউ ইয়র্ক রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সহায়তা দেয়ার জন্য একটি জরুরি ঘোষণা অনুমোদন করেছেন। এই টুইট বার্তায় তিনি বলেন, “যারা এই ছুটির মধ্যে প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমার সমবেদনা।”
নিউ ইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হচুল এই ঝড়কে এই শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ংকর তুষার ঝড় বলে বর্ণনা করেছেন। বাফেলো হচ্ছে ক্যাথি হচুলের নিজের শহর। এখানকার অবস্থা এখন যুদ্ধক্ষেত্রের মতো, রাস্তার ধারে যত গাড়ি আটকে পড়েছে, তা দেখলে আঁতকে উঠতে হয়।
তিনি বলেন, অনেক জরুরি সেবা সংস্থার গাড়ি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পৌঁছাতে পারেনি, অথবা নিজেরাই তুষারের মধ্যে আটকে পড়েছে।
এদিকে ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইট অ্যাওয়ার ডটকমের তথ্যানুযায়ী, সোমবার প্রায় চার হাজার মার্কিন ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
ভারমন্ট, ওহিও, মিসৌরি, উইসকনসিন, কানসাস এবং কলোরাডোতেও ঝড়ে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দক্ষিণ ফ্লোরিডার তাপমাত্রা এতটাই কমে গেছে যে, সেখানে তৃণভোজী প্রাণি ইগুয়ানা বরফে জমে গাছ থেকে পড়ে গেছে। পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা রাজ্যটি ঠান্ডায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৪৫ ডিগ্রি নিচে নেমে গেছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আগামী কয়েকদিনে অবস্থা একটু ভালো হবে, তবে তারপরও লোকজনকে এই পরিস্থিতিতে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে
Related News

যুক্তরাজ্যে ভারতীয় দূতাবাসে হামলা, যা বলছে ব্রিটিশ সরকার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ব্রিটেনে ভারতের হাইকমিশনে গত ১৯ মার্চ হামলা চালিয়েছে একদল বিচ্ছিন্নতাবাদী। এই ঘটনার পরইRead More

তিউনিশিয়ায় অস্থিরতা: ইউরোপে বাড়তে পারে অভিবাসীদের চাপ
বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক: তিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্টের অভিবাসন বিরোধী বক্তব্যের পর দেশটিতে শুরু হয়েছে অস্থিরতা৷ বাধ্য হয়ে অনেকRead More