Main Menu

২০২৩: বিশ্ব অর্থনীতির জন্য আরও একটি বিষণ্নতার বছর

নিউজ ডেস্ক:
আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক রোয়েল বিটসমা বলেছেন, শতাব্দির শুরু থেকেই সংকটের মাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এমন জটিল পরিস্থিতি আমরা কখনো দেখিনি।

করোনাভাইরাস মহামারির পর বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে আশা করেছিলেন অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা। তবে, এই আশা নিরাশায় রূপ নিয়েছে। যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, মূল্যস্ফীতি, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সংকটের কারণে ২০২২ বছরটি আরও খারাপ গেছে। আসন্ন ২০২৩ বছরটি চলতি বছরের ধাক্কা সামলাতে আরও বেশি সংকটাপন্ন হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামষ্টিক অর্থনীতির অধ্যাপক রোয়েল বিটসমা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, “শতাব্দির শুরু থেকেই সংকটের মাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এমন জটিল পরিস্থিতি আমরা কখনো দেখিনি।”

এই সময়ের সবচেয়ে বড় ধাক্কা মূল্যস্ফীতি। বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছিল, উচ্চ মূল্যস্ফীতি অস্থায়ী হবে। তাদেরা ব্যাখ্যা ছিল, অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় খুব দ্রুতই ফিরে আসবে। কিন্তু এ বছরের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ অভিযান শুরু হলে সেই আশাবাদ আর টেকেনি। দ্রুতই বিশ্বব্যাপী জ্বালানি ও খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়তে শুরু করে।

অনেক দেশই এখন জীবনযাত্রায় ভারসাম্য আনতে পারেনি। মূল্যস্ফীতির কারণে তাদের নাগরিকদের আয় ও ব্যয়ের সামজস্য রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। এই তালিকায় উন্নত দেশগুলোও রয়েছে। অনেক দেশের নাগরিকদের তাদের জীবনমানে পরিবর্তন আনতে হয়েছে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের ক্রিসমাস মার্কেটের ব্যবসায়ী নিকোল আইজারম্যান এএফপিকে বলেছেন, “ক্রিম থেকে শুরু করে ওয়াইন এবং বিদ্যুৎ পর্যন্ত সবকিছুই বেশি দামি হয়ে উঠেছে।

প্যারিসে অবস্থিত অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) জানিয়েছে, প্রায় ২০টি উন্নত এবং উদীয় অর্থনীতির দেশে আগামী বছর ভোক্তামূল্য ৮% এ পৌঁছাবে। তার পরের বছর এটি ৫.৫% এ নেমে যাবে।

ব্রাসেলস কেন্দ্রীক ব্রুগেল থিংক ট্যাংক বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশ বৈশ্বিক বিদ্যুতের দাম ভারসাম্যে ৭০৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে। ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানি জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। দেশটিকে ২৬৪ বিলিয়ন ইউরো ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।

ই-ওয়াই কনসালটেন্সির সমীক্ষা অনুসারে, প্রতি দুইজনের মধ্যে একজন জার্মান কেবল প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কেনার জন্য অর্থ ব্যয় করছেন। তারা তাদের ব্যয় সীমিত করেছেন।

ফ্রাঙ্কফুর্ট ক্রিসমাস মার্কেটের ক্রেতা গুয়েন্থার ব্লুম বলেন, “সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। কেননা আমার বড় পরিবার।”

অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, জার্মানি এবং ইউরোজোনের আরেকটি প্রধান অর্থনীতির দেশ ইতালি মন্দার মধ্যে পড়বে। ব্রিটেনের অর্থনীতি ইতিমধ্যেই সংকুচিত হয়েছে।

তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে, বিশ্ব অর্থনীতি আগামী বছর ২.৭% প্রবৃদ্ধি ধরে প্রসারিত হবে। বলে আশা করছে। অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ২.২% প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।

এছাড়া চীনের শূন্য-কোভিড নীতি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির বৃদ্ধিকে রোধ করেছে। তবে দেশব্যাপী বিক্ষোভের পর চীনা কর্তৃপক্ষ বিধিনিষেধ শিথিল করার কথা ভাবছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *