Main Menu

‘আমি প্রবাসীর স্ত্রী, এটাই আমার অপরাধ’

‘আমি প্রবাসীর স্ত্রী, এটাই আমার অপরাধ’
নিউজ ডেস্ক:
প্রবাসীর স্ত্রী শিরিনা বেগম। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বর্তমানে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেছেন। প্রতিপক্ষরা তাকে দুইবার হত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। একমাত্র শিশু সন্তানকে দুই মামলার আসামি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি প্রবাসী স্বামীর স্ত্রী, এটাই আমার অপরাধ। আপনারাই বলেন, এদেশে প্রবাসীর স্ত্রী হওয়া কি আমার অপরাধ? আমার একমাত্র সন্তানকে আপনারা বাঁচান। আমি সুস্থভাবে আমার সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।

জানা গেছে, জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার ভেলামারি গ্রামের মিষ্টার খাঁর সঙ্গে ২০০৩ সালে গাবের গ্রামের শিরিনা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের ৪ বছর পর তাদের সংসারে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। পরে ২০০৭ সালে মিষ্টার মালয়েশিয়া চলে যায়। এরপর ২০২১ সালে ছেলেকে ভালো স্কুলে লেখাপড়া করাতে শিরিনা বেগম বাবার বাড়ি থেকে বালিজুড়ি বাজারের মিজান ঠিকাদারের বাসায় ভাড়া উঠেন।

বাসা ভাড়া নেয়ার ৩ দিন পর শিরিনা বেগমের জেঠাতো ভাই সাঈদ বন্ধু শাবুকে নিয়ে তার বাসায় আসে। এরপর শাবু শিরিনাকে অনৈতিক সর্ম্পকের প্রস্তাব দিলে তাকে বাসায় আসতে নিষেধ করে। এরপর থেকেই শাবু শিরিনাকে উত্যক্ত করেন। শিরিনা বাসা থেকে বের হলেই পিছু নেয় শাবু। এ ছাড়া শিরিনাকে তার কাছে টাকা রাখতে বলে।

শাবু সুদে টাকা লেনদেনের কারবারির সঙ্গে জড়িত এবং তার সুদের ব্যবসা রয়েছেও বলে জানান শিরিনা।

শাবুর কথা অনুযায়ী তার কাছে টাকা না রাখায় এলাকায় অপপ্রচার চালায় শিরিনা তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে। সেই টাকার দাবি করে মাদারগঞ্জ থানায় একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে টাকা নেয়ার কোন প্রমাণ দেখাতে না পারলে সেই অভিযোগ থেকে মুক্ত হন শিরিনা।

শিরিনা বেগম জানান, এ ঘটনার আমার বাসায় তালা ভেঙে ব্যাংকের চেক বই, আমার স্বামীর ভিসা ও পাসপোর্টের ফটোকপির কাগজপত্র, স্বর্ণের গহনাসহ নগদ টাকা নিয়ে যায় শাবু ও তার লোকজন। সে সময় আমি বাসায় ছিলাম না। আমার ছেলে স্কুলে ছিল। খবর পেয়ে বাসায় এসে দেখি দরজার তালা ভাঙা, ভিতরে কিছুই রেখে যায়নি তারা। এই ঘটনায় গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর শাবুসহ ৩ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করেন, গত ২৪ মার্চ মামলাটিতে হাজিরা দিতে মাদারগঞ্জ থেকে সিএনজিতে জামালপুর শহরে গেলে শেখের ভিটা এলাকায় তার ওপর আক্রমণ করেন শাবুসহ তার লোজজন এবং তাকে নির্জনে নিয়ে হত্যার চেষ্টা চালান। এ সময় ধারালো চাকু লেগে তার গলা রক্তাক্ত হয়ে যায়। আঘাত লাগে দুই হাতেও। সে সময় আশেপাশের লোকজনের উপস্থিতিতে তাকে ফেলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

শিরিনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার গলায় চারটি সেলাই দেয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকরা পরের দিনই আমাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেন। এই ঘটনায় জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। সদর থানার পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে শাবু মিয়া ও লাল মিয়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে প্রতিবেদন প্রদান করে।

শিরিনা অভিযোগ করে জানান, আদালতে পুলিশের প্রতিবেদন পাঠানোর পর তার ছেলেকে জিম্মি করে এ মামলায় আপোষ মীমাংসায় তার স্বাক্ষর নেয়া হয়। মামলাটি বর্তমানে চীফ জুডিশিয়াল আদালতে বিচারাধীন আছে বলে জানান তিনি।

শিরিনা বেগম সাংবাদিকের কাছে প্রশ্ন করে বলেন, প্রবাসীর স্ত্রী হওয়াই কি আমার অপরাধ? আমি আমার সন্তানটাকে বাঁচাতে চাই। আমার ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তার বিরুদ্ধেও দুইটি মামলা দিয়েছে সাবু। আমার স্বামী ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করতে বিদেশে গিয়ে কষ্ট করে টাকা দিচ্ছে। আর স্বামী না থাকার সুযোগ নিয়ে লোকজন কুপ্রস্তাব দিচ্ছে। তাহলে কি এদেশে প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যদের ভালোভাবে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই?

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে শাবুর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *