ঔষধের জন্য রোগীদের ‘হাহাকার’

নিউজ ডেস্ক:
প্রচন্ড গরমে রোগজীবানু বাড়ছে হাওরাঞ্চলে। প্রতিদিনই শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগ ও আউটডোরে প্রায় দুই শতাধিক রোগী আসে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডাক্তাররা চিকিৎসা সেবা দিলেও ঔষধ না পাওয়ার ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ঔষধ থাকার পরও দরিদ্র রোগীরা ঔষধ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, হাসাপতালের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সেলিনা আক্তারের সিন্ডিকেটে এসব করা হচ্ছে। রোগীরা একাধিকবার এই কর্মকর্তার কাছে গেলে উনার কিছু করার নেই বলে রোগীদেরকে তাড়িয়ে দেন।
শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের আউটডোরে রোগী দেখছেন ডাক্তার রাজীব বিশ্বাস। প্রত্যেক রোগীকে আউটডোরের টিকিটে ঔষধ লিখে দিচ্ছেন হাসপাতাল থেকে নেওয়ার জন্য। কিন্তু সেখানে গিয়ে টিকিটের লেখা অনুযায়ী কোনো ঔষধ পায়নি রোগীরা। প্রত্যেক রোগীকে প্যারাসিটামল ও ক্লোরফেনিরামিন মেলিয়েট ঔষধ ধরিয়ে দিচ্ছেন হাসপাতালের হারবাল ফার্মাসিস্ট মোস্তাক আহমেদ। আর অন্যান্য ঔষধ বাহিরের ফার্মেসী থেকে কিনে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।
মোস্তাক আহমেদ জানান, শনিবারে সারা সপ্তাহের ঔষধ স্টোর থেকে নামানো হয়। এখন ঔষধ শেষ হয়ে গেছে। আর দেওয়া যাবে না। আগামী শনিবার স্টোর থেকে ঔষধ নামানো হবে।
উপজেলার ডুমরা গ্রামের রিপন রানী দাস (২৮) নামে এক রোগী জানান, জ্বর ব্যাথা নিয়ে তিনি ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে এসেছেন। আউটডোরের কর্তব্যরত ডাক্তার ঔষধ লিখে দিয়েছেন হাসপাতাল থেকে নেওয়ার জন্য। কিন্তু হাসপাতালের ঔষধ কাউন্টারে গেলে কোনো ঔষধ নেই বলে বিদায় করে দেন এবং বাহির থেকে ঔষধ কিনে নেওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
সুলতানপুর গ্রামের হাসিনা বেগম (৩১) নামে এক রোগী বলেন, হাসপাতাল থেকে একটি খাওয়ার স্যালাইন ছাড়া আর কিছু দেয়নি। বাকি সব ঔষধ বাইরে থেকে কিনে নিতে হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অন্য মাসের তুলনায় বর্তমানে জ্বর, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুন। বহস্পতিবার আউটডোরে ১৫০ জন রোগী আর জরুরী বিভাগে আরো ২০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। ডাক্তারের দেয়া লেখা অনুযায়ী রোগীরা কোনো ঔষধ পাচ্ছেন না। এসব রোগীরা সরকারিভাবে সরবরাহকৃত ডায়েরিয়া রোগের ঔষধ না পেয়ে জীবন বাঁচানোর তাগিদে ফামের্সী থেকে ঔষধ কিনে সেবন করছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রবিউল আকরাম বক্তব্য দিতে রাজী নন। তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া মিডিয়ার সামনে কথা বলবেন না বলে এ প্রতিবেদককে জানান।
তবে হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সেলিনা আক্তার আবাসিক চিকিৎসক রবিউল আকরামের ঘাড়ে দোষ ছাপিয়ে দেন। তিনি বলেন এই দায়িত্ব আমার নয়। এটার সবকিছু দেখবাল করা আরএমও’ র দায়িত্ব।
সুনামগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আহমদ হোসেন বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ঔষধ রয়েছে। আমি হাসপাতালে বলে দিয়েছি রোগীদের প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করার জন্য। শনি রবিবার নেই যেকোনো সময় রোগীদের প্রয়োজনে স্টোর থেকে ঔষধ নামানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। এরপরও যদি কেউ নিয়ম তৈরি করতে চায় তাহলে এটা তাদের একান্ত বিষয়।
Related News

রোজার শুরুতেই নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন
পল্লব ভট্টাচার্য্য: প্রতি বছর রোজা এলেই নিত্যপণ্যের দামে আগুন লেগে যায়। এটা যেন বৈধ করেRead More

চুনারুঘাটে একই পরিবারের তিনজনের লাশ উদ্ধার
নিউজ ডেস্ক: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন- গাদিশাইলRead More