Main Menu

এখনও ‘রহস্যে ঘেরা’ ওসমানীনগর প্রবাসী ট্রাজেডি

নিউজ ডেস্ক:
২২ দিনেও ‘রহস্যে ঘেরা’ ওসমানীনগর ট্রাজেডি।
ওসমানীনগরে প্রবাসী পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যু রহস্য ২২ দিনেও উদঘাটন হয়নি। ঘটনার ৩ সপ্তাহ পার হলেও কোনো সূত্র বের করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থাগুলো। মৃত্যুর কারণ জানতে ফরেনসিক প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ ও প্রবাসী পরিবারের বেঁচে থাকা দুই সদস্য।

তবে হাসপাতাল থেকে ফিরেই ভাড়া বাসা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ওঠেছেন প্রবাসী পরিবারের দুই সদস্য নিহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনারা বেগম ও ছেলে সাদিকুল ইসলাম। নিহতের স্ত্রীর বরাত দিয়ে তার চাচাত ভাই গোলাম হোসেন জানিয়েছেন, স্বামী-সন্তানদের মৃত্যুর কারণ জানার পর তার বোন ও ভাগ্নে যুক্তরাজ্যে ফিরে যাবেন।

ওসমানীনগর থানার ওসি এস এম মাঈন উদ্দিন বলেন, প্রবাসী পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুর কোনো ক্লু এখনো উদঘাটন হয়নি। ফরেনসিক প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি সিলেট জোনের পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা বলেন, প্রবাসী পরিবারের মৃত্যু রহস্য এখনো জানা যায়নি। মৃত্যুর কারণ জানতে ল্যাব থেকে প্রতিবেদন আসলেই জানা যাবে। তবে এ প্রতিবেদন আমাদের কাছে নয়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে আসবে।

এদিকে, হোসনে আরা বেগমের বরাতে তার চাচাত ভাই গোলাম হোসেন বলেন- ময়না তদন্তসহ খাবারের রাসায়নিক প্রতিবেদন এবং জেনারেটরের ধোয়া পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা। প্রতিবেদন আসলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ঘটনার কারণ নিশ্চিত হতে পারবে, এমনটি আশাবাদি তিনিও।

গত ২৫ জুলাই রাতের খাবার শেষে প্রবাসী রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সন্তানরা একটি কক্ষে এবং রফিকুল ইসলামের শ্বশুর আনফর আলী, শাশুড়ি বদরুন্নেছা, শ্যালক দেলোয়ার হোসেন, শ্যালকের স্ত্রী শোভা বেগম ও মেয়ে সাবিলা বেগম (৮) অন্যান্য কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন।

২৬ জানুয়ারি সকালে বাসার সুস্থ স্বজনরা ডাকাডাকি করে প্রবাসী রফিকুল ইসলামসহ তার স্ত্রী-সন্তানরা ঘরের দরজা না খোলায় ৯৯৯ নম্বরে কল করেন। ওইদিন বেলা ১টার দিকে ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার হুলিয়ারবন্দ এলাকায় তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ঝলক পালের মালিকানা ভবনের ওই ফ্লাট থেকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিবারের পাঁচ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ এসে বাসার দরজা ভেঙে পরিবারের ৫ সদস্যকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০) ও তার ছোট ছেলে মাহিকুল ইসলামকে (১৮) মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনারা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) ও মেয়ে সামিয়া ইসলামকে (২০) ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনার ১০দিনের মাথায় ৩ আগস্ট হুছনারা বেগম ও সাদিকুল ইসলাম সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরলেও মেয়ে সামিরা ইসলাম শুরু থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিলেন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার ১১দিনের মাথায় গত ৫ আগস্ট রাত ১টা ২০ মিনিটের দিকে সামিরা ইসলামের মৃত্যু হয়। পরদিন তাকেও গ্রামের বাড়িতে পরিবারিক কবরস্থানে বাবা-ভাইয়ের পাশে দাফন করা হয়। পরিবারের তিন সদস্যকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হুছনারা বেগম ও তার ছেলে সাদিকুল ইসলাম।

এছাড়া ঘটনার পর সিলেটের পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. ফরিদ উদ্দিন পিপিএম জানিয়েছিলেন, বিষক্রিয়ায় প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু হতে পারে। এমনটি ধারণা করলেও সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ময়না তদন্ত ও ফরেনসিক প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

কিন্তু ঘটনার ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও প্রবাসী পরিবারের ৩ সদস্য মৃত্যুর কারণে অনুদঘাটিত রয়ে গেলো।

নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম তার ছেলে মাইকুল ইসলামের চিকিৎসা করাতে স্বপরিবারে দেশে আসেন। গত ১২ জুলাই তারা দেশে আসেন। এরপর ১৮ জুলাই ওসমানীনগরের তাজপুরে ওই ফ্ল্যাটের দ্বিতীয় তলার একটি ইউনিটে ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। মূলত ছেলের চিকিৎসার সুবিধার্থে ভাড়া বাসায় উঠেছিলেন তারা।

ওসমানীনগর থানার ওসি এস এম মাইন উদ্দিন আরও বলেন, ময়নাতদন্ত ও ঘটনার রাতে খাওয়া খাবারের রাসায়নিক প্রতিবেদন এবং জেনারেটরের ধোয়া পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই এসব প্রতিবেদন হাতে এসে পৌঁছালে রহস্য উধঘাটনের সম্ভাবনা রয়েছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *