Main Menu

দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ

নিউজ ডেস্ক:
দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ।
বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি দ্রব্যের দাম বাড়তির দিকে। বিগত কয়েক দিনে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। এরমধ্যে ডিম, ব্রয়লার মোরগ, চালের দাম বাড়ায় নিম্নআয়ের মানুষ অনেকটা দিশেহারা।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, মুরগী ও ডিমের দাম অনেকটা তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। মধ্যবিত্তের খাদ্য তালিকায় থাকেন এ দুটি খাবার কিন্তু, বাজারে মুরগী ও ডিমের দাম ৩০/৪০ টাকা করে বেড়ে গেছে।

নগরীর লালবাজার ঘুরে জানা যায়, বয়লার মুরগীর ১৭০/১৭৫ থেকে বেড়ে ২১০ টাকা, কর্ক ১৩০/১৪০ থেকে ১৬০/১৭০ টাকা এবং সোনালী ২৫০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩১০ টাকা। একই সাথে ডিমের হালি বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা, দেশি হাঁসের ডিমের হালি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম প্রতি বস্তায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন চাল ব্যবসায়ীরা। আশুগঞ্জ থেকে ট্রাকের ভাড়া ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম বেড়েছে বলে জানান তারা। পাইকারী বাজারে ২৮ সিদ্ধ চালের বস্তা ২৪০০ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫৫০ টাকা, ২৮ আতপ চাল ২৪০০ থেকে বেড়ে ২৫০০ টাকা, চিনিগুঁড়া চাল ৫৬০০ থেকে ৫৯০০ টাকা, মালা-২০০০ থেকে ২১০০ টাকা, হীরা-১৭০০ থেকে ১৭৫০ টাকা হয়েছে। দূরত্ব অনুসারে ট্রাকের ভাড়াও কমবেশি হয়েছে বলে জানান তারা।

এর বাইরে পেঁয়াজ, চিনি, সয়াবিন তেল, কাঁচা মরিচ ও শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। জালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে পণ্য পরিবহন ও উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এখনো অনেক ব্যবসায়ী পূর্বের মজুদ থেকে পণ্য বিক্রি করছেন। নতুন পণ্য আসার পর দাম আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। বাজারে পণ্যে মূল্য বৃদ্ধিতে আয়-ব্যয়ের সমন্বয় করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।

সরেজমিনে বাজারে ঘুরে দেখা যায়, সিলেটের প্রধান পাইকারী বাজার কালিঘাটে মসুর ডাল -১০০ থেকে বেড়ে ১১০ টাকা, চিনি ৭৮ থেকে ৮৬ টাকা, সয়াবিন তেল- মিজান প্রতি লিটার ১৪৩ থেকে ১৫৫ টাকা, রুপচাঁদা (৫ লিটার) ৮৬০ থেকে ৯শ’ টাকা, মটর ডাল-৬০ টাকা থেকে ৬৫ টাকা, পেঁয়াজ ছোট-২৮ টাকা থেকে ৩৫/৩৭ টাকা, বড় ৩০/৩১ টাকা থেকে ৩৮/৪০, আলু ১৮ থেকে ২২/২৩ টাকা, মরিচ গুঁড়া-২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, রসুন দেশি ৫৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, চায়না ৯৫/১০৮ টাকার স্থানে ১১৫ টাকা, শুকনা মরিচ ৩৫০ থেকে বেড়ে ৪০০/৪১০ টাকা, আদা দেশি ৪৫/৫০ এর স্থানে ৫৫/৬০ টাকা, ইন্ডিয়ান আদা ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে গুঁড়ো দুধের দামও।

ব্যবসায়ীরা জানানা, পেঁয়াজের একটি গাড়ির ভাড়া ২৮ থেকে ৩২ হাজার টাকার স্থানে এখন ৩৭ থেকে ৩৮ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। চিনি বস্তাতে ৪০০/৫০০ টাকা বেড়েছে। পেঁয়াজ কেজিতে ১০/১৫ টাকা ও সয়াবিন ১২/১৩ টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের সেভাবেই মূল্য রাখতে হচ্ছে। পাইকারী বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে দামের তারতম্য ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি হবে বলে জানান তারা।

এদিকে, সবজি বাজারে দাম কিছুটা বাড়লেও তা অনেকটাই স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন সুবহানীঘাট কাঁচাবাজারের এক আড়তদার। পরিবহন ব্যয় বাড়ায় দাম কিছুটা উঠা-নামা করছে। মরিচ ছাড়া অন্য সবজির দাম স্বাভাবিক রয়েছে।

তিনি বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত ফসল চাষ হয়েছে পূর্বে, এখন শুধু উত্তোলন করছেন। তাই পূর্বের দাম থেকে বেশি রাখতে হচ্ছে না। নতুন মৌসুমের ফসল উৎপাদন করলে জালানির দামের প্রভাব পড়বে বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, সুবহানীঘাট পাইকারী বাজারে, ঢেঁড়স-২৮/২৬ টাকা, মুলা-২০ থেকে ২৪ টাকা, কাকরোল-২৬ থেকে ২৮ টাকা, বেগুন-২৮ টাকা, পটল-২৪/২৫ টাকা, পেঁপে-৬/৭ টাকা, লাউ-৩০/৩২টাকা, কুমড়া-২৮/৩০টাকা, লতা-৩০/৩৫ টাকা, মরিচ-২১০ টাকা, গাঁজর-১১০ টাকা, ঝিঙ্গা-৩০/৩২ টাকা, চিছিঙ্গা-২৪ থেকে ২৫ টাকা, টমেটো-৬০/৭০ টাকা, আলু-১৮ থেকে ২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে কাঁচা মরিচের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে।

তিনি বলেন, কাঁচা মরিচ চায়না ও ইন্ডিয়া থেকে আসে। তাই দামও বেশি। একদিন পূর্বে কাচা মরিচ ছিল ১৯০ টাকা। গতকাল ২১০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হয়েছে। খুচরা বাজারে কাঁচা মরিচ ৩শ’ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে।

বাজার করতে আসা সরকারী কর্মচারী এরশাদ আলী বলেন, প্রায় প্রতিটি পণ্যে দাম বাড়তির দিকে। চাল, চিনি, পেঁয়াজসহ প্রতিটি পণ্যে দাম বেড়েছে। এখন আয়-ব্যয়ের সমন্বয় করতে খরচ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। ‘সন্তানরা মুরগীর গোস্ত ছাড়া ভাত খেতে চায় না। তাদের মুরগীর গোস্ত খেতে দিয়ে সাথে অন্য কিছু খাওয়ানো যায়। কিন্তু এখন মুরগী দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় মুরগী নেয়াই কমিয়ে দিয়েছি।

ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম ব্যাপক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় চাকুরীজিবী পরিবার গুলোও চাপের মধ্যে পড়েছে বলে জানান এক শিক্ষক দম্পত্তি।

পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা জানান, পোল্ট্রি ফিডের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে। ২২০০ টাকার বস্তা এখন ৩৫০০ টাকায় তাদের ক্রয় করতে হচ্ছে। তাই মুরগী ও ডিমের দামও বাড়ছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *