Main Menu

অভিবাসীদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠাচ্ছে বসনিয়া, তালিকায় বাংলাদেশিরাও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বসবাসের অনুমতি না থাকা অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করেছে বসনিয়া অ্যান্ড হ্যারৎসেগোভিনা৷ এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে দুইজন পাকিস্তানিকে ফেরত পাঠিয়েছে দেশটি। আরও কয়েক হাজার অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে দেশটি।

বসনিয়ায় বসবাসরত যেসব অভিবাসী আশ্রয় আবেদন নেই বা যাদের ক্ষেত্রে আবেদন গৃহীত হয়নি তাদের ফেরত পাঠাতে চায় সরকার৷

বলকান রুটের দেশটি এতদিন ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ট্রানজিট দেশ হিসেবে ব্যবহার হলেও সেখানে আশ্রয় আবেদনে আগ্রহীর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। যার মধ্যে শীর্ষে বাংলাদেশিরা৷

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রবিবার একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ইসলামাবাদের পথে দুইজন পাকিস্তানিকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ বসনিয়ার ইংরেজি ভাষার সংবাদ মাধ্যম বলকান ইনসাইটকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আদমির মালাগিক৷

সরকারের পক্ষ থেকে এটিকে ‘পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে৷ এই প্রক্রিয়া সফল হলে পরবর্তীতে চার্টার ফ্লাইটের মাধ্যমে আরো কয়েক হাজার অভিবাসীকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠাতে চায় সরকার৷

আদমির মালাগিক বলেন, ‘বাণিজ্যিক ফ্লাইটের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি ফ্লাইটে মাত্র দুইজন যাত্রীকে ফেরত পাঠানো যায়৷ কাজেই সামনে বড় দল পাঠাতে আমরা চার্টার ফ্লাইট যোগার করার পরিকল্পনা করছি৷’

ফেরত পাঠানোর আরো পরিকল্পনা

বসনিয়া সরকারের সার্ভিস ফর ফরেনার্স অ্যাফেয়ার্স বা এসএফএ এর পরিচালক বলকান ইনসাইটকে ২০২০ সালে জানান, ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে অভিবাসীদের পরিচয় নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ৷ কেননা দূতাবাসগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ বিষয়ে সহায়তা করতে চায় না৷ কিন্তু এই দুই বছরে বসনিয়া সরকার এই চ্যালেঞ্জ অনেকটা সামলে নিয়েছে বলেই ধারণা করা যাচ্ছে৷ দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের তথ্যের বরাতে বলকান ইনসাইট জানিয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত নয় হাজার ৩২৯ জন অভিবাসী বসনিয়া অ্যান্ড হ্যারৎসেগোভিনাতে প্রবেশ করেছেন৷

দেশটির অভিবাসন ও শরণার্থী ইস্যুর দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করে ইনফোমাইগ্রেন্টস৷ কোন দেশের কতজনকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে এই বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল৷ তবে এখন পর্যন্ত কোনো উত্তর মেলেনি৷

এদিকে জাতিসংঘের দুই সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও আইওএম পরিচালিত ছয়টি শিবির রয়েছে বসনিয়াতে৷ আইওএম এর তথ্য অনুযায়ী, এসব আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে ২ হাজার ১৩৩ জন অভিবাসী রয়েছেন৷ তাদের মধ্যে পাকিস্তানের নাগরিক ১৩ শতাংশ৷ তবে স্বীকৃত এসব আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় অভিবাসী, শরণার্থীরা অস্থায়ী ক্যাম্পেও থাকেন৷

ইউএনএইচসিআর এর ৩০ জুন পর্যন্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে অবস্থানরত শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী বা ভ্রাম্যমান মানুষের সংখ্যা দুই হাজার ১৫৩ জন৷

বসনিয়ায় আশ্রয় আবদেনে আগ্রহের শীর্ষে বাংলাদেশিরা

বলকান রুট হয়ে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অন্যতম ট্রানজিট বা বিরতি পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয় বসনিয়া অ্যান্ড হ্যারৎসেগোভিনা৷ সার্বিয়া, কসভো, বসনিয়া, আলবেনিয়া, মন্টেনিগ্রো, নর্থ মেসিডোনিয়া হয়ে সমগ্র বলকান রুটে অবস্থান করা অভিবাসী, আশ্রয়প্রার্থীদের নিবন্ধিত সংখ্যা এখন নয় হাজার ৩৮৫ জন৷

ইউএনএইচিসিআর এর তথ্য অনুযায়ী, এই অভিবাসীদের মধ্যে প্রায় ২২ শতাংশ আফগান, সাড়ে ১৩ শতাংশ সিরিয়ান, ১০ শতাংশ পাকিস্তানি৷ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে ১০ শতাংশ অভিবাসী রয়েছেন বলকান রুটে৷

২০১৮ সাল থেকে শুরু করে বলকান পথে মোট ৯৩ হাজার ৩৪১ অভিবাসীর তথ্য নিবন্ধিত রয়েছে৷ তাদের গন্তব্য মূলত পশ্চিম ইউরোপের দেশ হলেও এখন অনেকে বসনিয়াতেও থেকে যেতে চান৷ ইউএনএইচসিআর বলছে জুনে ২,১৫৯ জন অভিবাসী দেশটিতে আশ্রয় আবেদনের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন৷ তাদের মধ্য সবচেয়ে বেশি ৩১ শতাংশ বাংলাদেশি৷ বাকিদের মধ্যে ২২ শতাংশ আফগানিস্তানের, ১৭ শতাংশ বুরুন্ডির আর আট শতাংশ পাকিস্তানের নাগরিক৷ কিন্তু জুনে দেশটিতে এই সংক্রান্ত মাত্র সাতটি আবেদনের সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ এরমধ্যে দুইজন ছাড়া বাকিদের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে৷

ইউএনএইচসিআর বলছে, দেশটিতে আশ্রয় আবেদনের প্রথম সিদ্ধান্ত পেতে গড়ে ২৯৫ দিন সময় লাগে৷ ইনফোমাইগ্রান্টস অবলম্বনে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *