Main Menu

রাতে বার্গার ও জুস খেয়েছিলো সেই যুক্তরাজ্য প্রবাসী পরিবার

বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
দোকান থেকে বার্গার ও জুস এনেছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম। পরিবারের ৫ সদস্য মিলে রাতে সেগুলো খেয়েই ঘুমিয়ছিলেন। আর ঘুম ভাঙেনি তার। ঘুমের মধ্যে মারা যান রফিকুল ইসলাম ও তার চোট চেলে মাইকুল ইসলাম। অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় স্ত্রী হুসনেআরা বেগম, বড় ছেলে সাদিকুল ইসলাম এবং একমাত্র কন্যা সামিরা ইসলাম।

কান্না করতে করতে এম তথ্য জানালেন নিহত রফিকুলের ৭৫ বছর বয়সী শ্বশুর আনফর আলী।

আনফর আলীর গ্রামের বাগি উপজেলার ধিরারাউই গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, সোমবার দিনের বেলা তাজপুর বাজার থেকে বার্গার জুস সহ বিভিন্ন ফাস্টফুড অন্যান্য খাবার কিনে আনেন প্রবাসী রফিকুল ইসলাম। ঐ রাতে তাজপুরের স্কুল রোডের ভাড়া ভাসায় আর কোনো আত্মীয়স্বজন কিংবা কোনো লোকজন আসেনি। সোমবার রাতে রফিকুল ইসলাম স্ত্রী হুসনেআরা বেগম বড় ছেলে সাদিকুল ছোঠ মাইকুল ও একমাত্র কন্যা সামিরা ইসলাম ফাস্টফুড সহ দোকান থেকে ক্রয় করা খাবার খায়। বাসার থাকা অন্যান্য আত্মীয়- রফিকুলের শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালকের বৌ ও তাদের ৮ বছরবয়সি কন্যা রাতে ভাত খায়। রাত প্রায় ১০টার দিকে রফিকুল পরিবারের ৫ সদস্যকে নিয়ে বাসার একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পরে।

নিহত রফিকুল ইসলামের শ্বশুর আনফর আলী আরো জানান, রফিকুল ইসলাম সম্প্রতি যুক্তরাজ্য থেকে দেশে আসার পূর্বে শ্বশুরকে ভাড়া বাসা ঠিকানা ও তিনি যে দেশে আসছেন সে বিষয়ে আতœীয়স্বজন সহ কাউকে না জানাতে বারণ করেন। কিন্তু কি কারণে মেয়ে জামাই শ্বশুরকে বারণ করেছে সে ব্যাপারে আর কিছু জানে না বলে আনফর আলী জানান।

এদিকে প্রবাসী পিতা পুত্র নিহত ও পরিবারের অন্য তিন সদস্য বিষক্রিয়া অচেতন অবস্থায় আসপাতালে চিকিৎসাধিন থাকলেও ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হবার পর এখন পর্যন্ত এর কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। গত বুধবার বিকেলে নিহত পিতা পুত্রের ময়না তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টায় উপজেলার দয়ামীর ইউপির পরকুল মাদ্রাসা মাঠে জানাজার নাম শেষে লাশ গ্রামের বাড়ি খতিপুর বড় ধিরারাইয়ের পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়।

ঘটনার খবর পেয়ে গত বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে যুক্তরাজ্য থেকে নিহতের ছোট দুই ভাই শফিকুল ইসলাম, বিজেকুল ইসলাম, বোন শাহীনা বেগম ও মা জরিনা জব্বার দেশে এসে রফিকুল ও তার ছেরের দাফনকাপন সম্পন্ন করেন।

এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহত রফিকুলের শ্যালক দিলোয়ার হোসেন বাদি হয়ে ওসমানীনগর থানায় একটি অপমৃত্যু(মামলানং-২১) দায়ের করেন।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন নিহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুসনেআরা, বড় ছেলে সাদিকুল ইসলামের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে তবে তার একমাত্র কন্যা সামিরা ইসলামের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি বলে চিকিৎসকের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওসমানীনগর সার্কেল রফিকুল ইসলাম বলেন, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিহত যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুসনেআরা বেগম তার ছেলে সাদিকুল ইসলামের সাথে আজ দুপুরে আমি কথা বলেছি। তাদের শারীরিক অবস্থা অনেকটা ভাল আছে তবে তদন্তে অগ্রগতি হওয়ার মতো তেমন কোন তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।

ওসমানীনগর থানার ওসি এসএম মাঈন উদ্দিন বলেন, নিহত পিত্র পুত্রের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়েছে। তাদের ভিসেরা রিপোর্ট সহ উদ্দারকৃত আলামত ঢাকা সহ সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টে পাটানো হয়েছে। এগুলোর রিপোর্ট সহ নিহতের পরিবারের অন্য তিন সদস্য সুস্থ হলে তাদের নিকট থেকে তথ্য পেলে ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটন হবে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সিলেটের ওসমানীনগরে তাজপুর স্কুল রোডরে একটি বাসা থেকে এক পরিবারের ৫ যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। হাসপাতালে নেয়ার পর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের ধিরারাই (খাতিপুর) গ্রামের মৃত আবদুল জব্বারের ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলাম (৫০) ও তার ছোট ছেলে মাইকুল ইসলাম (১৬) মারা যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রফিকুল ইসলামের স্ত্রী হুছনারা বেগম (৪৫), ছেলে সাদিকুল ইসলাম (২৫) এবং মেয়ে সামিরা ইসলামকে (২০) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে নিহতরে স্ত্রী হুসনেআরা ও ছেলে সাদিকুল ইসলামের শারীরিক অবস্থা ভাল রয়েছে তবে তার একমাত্র মেয়ে সামিরা বেগমের অবস্থা আশংকাজন রয়েছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *