Main Menu

হজ্বের খুতবায় নিযুক্ত হওয়া কে এই মুহাম্মাদ আল-ঈসা?

ইসলাম ডেস্ক:
এবছর আরাফাতের ময়দানে হজ্বের খুতবাহ দিবেন শাইখ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম আল-ঈসা। সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের এক রাষ্ট্রীয় ফরমানে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

হজ্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ খুতবাহ’র নেতৃত্ব দেওয়া কে এই মুহাম্মাদ বিন আবদুল করীম? ইনসাফের পাঠকদের জন্য তার ব্যক্তিগত, সামাজিক, ধর্মীয় মতাদর্শ ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তার অবস্থান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো।

ড. মুহাম্মাদ বিন আবদুল করীম বিশ্ব মুসলিম লীগের মহাসচিব ও সৌদি আরবের সাবেক বিচার ও আইনমন্ত্রী। এছাড়াও তিনি ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক হালাল অর্গানাইজেশনের প্রেসিডেন্ট।

সৌদি আরবের বর্তমান যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানের নেতৃত্বে অনেকটাই পাল্টে যাচ্ছে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ সৌদি আরব। কথিত আধুনিক ও উদার সৌদি বিনির্মাণে হাতে নেওয়া হয়েছে ‘ভিশন ২০৩০’। তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ধুধু মরুভূমির বুকে গড়ে তোলা হচ্ছে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন নগরী ‘নিওম’। মধ্যপন্থার নামে বদলে ফেলা হয়েছে মুসলিম বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত দেশটির বহু ইসলামী রীতিনীতি এবং বন্দী করা হয়েছে এর বিরোধিতাকারী শীর্ষ ইসলামী স্কলারদের।

ইসলামী স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়ে আধুনিক ও উদারপন্থী মুসলিম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে আরব দেশটির সর্বত্র বইছে এখন পরিবর্তনের হাওয়া। বাদ যায়নি হজ্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী রুকনও! নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ”আধুনিক” ইসলামের সমর্থক ড. মুহাম্মাদ বিন আব্দুল করিম আল-ঈসাকে।

মুহাম্মাদ বিন আব্দুল করিম আল ঈসা এমন একজন ইসলামী স্কলার যিনি ”আধুনিক” ইসলামের প্রচারক হওয়ার পাশাপাশি ”জিহাদ”-এর সমালোচক হিসেবে পরিচিত।

তার এই গুণে মুগ্ধ হয়ে আমেরিকার রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব আর্চবিশপ কার্ডিনাল টিমোথী এম. ডোনাল বলেন, বিশ্বের সকল ধর্মের মাঝে বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠা ও ধর্ম একীভূতকরণে মুসলিম বিশ্বের মাঝে তিনিই সবচেয়ে সুস্পষ্টভাষী।

চার্চ অফ জিসাস ক্রাইস্ট অফ লেটার-ডে সেইন্টসের সাথে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক বৈঠকে, সেইন্টদের প্রেসিডেন্ট রাসেল নেলসন আল-ঈসাকে সম্বোধন করে বলেছিলেন, আপনি একজন শান্তি স্থাপনকারী। আপনি একজন সেতু নির্মাতা। আমাদের আপনার মত আরো নেতা দরকার।

অপরদিকে ইহুদিবাদীদের সংস্থা আমেরিকান জিউস কমিটি আল ঈসাকে ”আধুনিক” ইসলাম প্রচারকারী মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কণ্ঠস্বরের তকমা দেয়।

ইহুদি বিদ্বেষ মোকাবিলা ও পর্যবেক্ষণ বিষয়ক মার্কিন সংস্থার সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি ইলন ক্যার বলেন, আল-ঈসা উদারতা ও শান্তির এমন পথ বেছে নিয়েছেন যেখানে ইহুদি ও খ্রিস্টানেরা মুসলিমদের অতি উদারতায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারে।

মুহাম্মাদ বিন আবদুল করীম ১৯৬৫ সালের ১০ জুন সৌদির রাজধানী রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। আল ইমাম খ্যাত ইমাম মুহাম্মাদ বিন সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক ইসলামী আইন তত্ত্ব (ফিকহ), সাধারণ ও সাংবিধানিক আইনের উপর মাস্টার্স ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন।

পিএইচডি শেষে তিনি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদের একজন সদস্য হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সৌদি সালিশ বোর্ডের অভিযোগ প্যানেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ফেব্রুয়ারিতে সৌদির মন্ত্রীসভায় বড় ধরণের রদবদল হলে আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আল শেখের পরিবর্তে সৌদি ক্যাবিনেটের আইন মন্ত্রী পদে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাকে আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আল শেখের পরিবর্তে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় যিনি ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারির আগ পর্যন্ত ১৯৯২ সাল থেকে উক্ত পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এছাড়াও তিনি ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট ওয়ার্ল্ড মুসলিম লীগের মহাসচিব মনোনীত হোন।

সূত্র : সৌদি গেজেট, আরব নিউজ, আল আরাবিয়া






Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *