Main Menu

কুরবানীর পশুর সাথে যে আচরণ করবেন

কুরবানীর-পশুর-সাথে-যে-আচরণ-করবেন

ফাহাদ মারুফ:
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট। হাটে ওঠা নানা আকৃতির বড় গরু ভিন্ন নামে নজর কাড়তে শুরু করেছে। আর যারা যারা কুরবানীর জন্য পশু কিনতে যাবেন, তাদের জন্য বিশেষভাবে একটি পরামর্শ থাকবে। তা হল:

কুরবানীর পশুর সাথে যে আচরণ করবেন। যারা কুরবানী দিবেনযারা কুরবানী দিবেন তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন শায়েখ মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ দাঃবাঃ।

নিচে তুলে ধরা হল উনার পরামর্শ:
যারা কুরবানী দিবেন তারা শায়েখ মাওলানা আবু তাহের মিছবাহ দাঃবাঃ এর কলামটি পড়তে পারেন।
“আব্বাকে কোরবানি করতে দেখেছি। আব্বার সঙ্গে কোরবানির হাটে গিয়েছি বহুবার; প্রথমে অবুঝ আনন্দের আকর্ষণে,পরবর্তীতে কিছুটা অনুভব অনুভূতি সঙ্গে করে। কোরবানির হাটে আব্বাকে দেখেছি। কেমন দেখেছি তা হয়ত বুঝিয়ে বলতে পারবো না,শুধু বলতে পারি,সেখানে আব্বার মত কাউকে কখনো দেখিনি। রওয়ানা হওয়ার আগে আব্বা দু’রাকাত নামায পড়েন। সে নামাযে আব্বার দাড়ি তো ভেজে জায়নামাযও ভেজে। মোনাজাতে সেকি কাকুতি-মিনতি! দেখেছি, শিখতে পারিনি। খরিদ করার পর আব্বার প্রথম কাজ হলো পশুটিকে ‘আদর’ করা এবং আশ্চর্য, কোন পশুকে দেখিনি আব্বার আদর প্রত্যাখ্যান করতে!
কয়েকবছর আগে – আব্বার তখন খুব বিপর্যস্ত জীবন এবং জীবনে সেই একবার তিনি শরীকে কোরবানি করেছেন- কোরবানির হাটে আব্বার সঙ্গে আছি; দেখি, চোখে ধরে এমন একটি গাভীর দিকে মায়ার দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলছেন, দিলের তামান্না, তোকে কোরবানি দেই, যাবি আমার সঙ্গে! আমার যে তাওফীক নাই তোকে নেয়ার।
প্রিয় পাঠক,এমন বাবার কোরবানি দেখা সন্তানকে কি ভাগ্যবান বলা যায় না! প্রার্থনা করি,প্রতিটি মুসলিম সন্তান যেন দেখতে পায় আমার বাবার মত কোরবানি।
আব্বা কোরবানির পশু বাড়িতে আনেন ঈদের দু’একদিন আগে। সেই পশুকে তিনি এমন যত্ন করেন যেন আদরের সন্তান! কত বার যে তাঁর তিরস্কার শুনেছি গরুটার ঠিকমত ‘খিদমত’ হচ্ছে না বলে! কোরবানির গরুর চারপাশে কয়েল জ্বেলে দেন, যাতে মশা কষ্ট না দেয়। একবার তো রীতিমত মশারি টানানোর ব্যবস্হা করেছিলেন! হাসছো তুমি! আমি কিন্তু সত্য কথা বলছি!
কোরবানির দিন আমরা গোসল করি ; আব্বা কোরবানির পশুকে ‘স্নান’ করান। ঈদের নামায পড়ে আসার পরে তিনি একেবারে বদলে যান! আমার কাছে একেবারেই অচেনা হয়ে যান! কোরবানির পশুকে যখন শোয়ানো হয় আব্বার চোখে তখন পানি এসে যায়, কখনো শব্দ করে কেঁদে ওঠেন। বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলেযখন ছুরি চালান তাঁর বেচায়ন অবস্হা হয় দেখার মত; যেন পশুর গলায় নয় তিনি ছুরি বসিয়েছেন আপন সন্তানের গলায়! এমন কোরবানি আমি আর কারো দেখিনি! এমন মমতার সঙ্গে ছুরি হাতে নিলেই হয় কোরবানি, নইলে হয়ে যায় কসাই ও জবাই।
কোরবানির প্রতিটি পশুকে আল্লাহ যেন দান করেন আমার বাবার মত কোরবানি ‘কারনেওয়ালা’!
…কথাগুলো কেন বললাম জানো! গতবছর কোরবানির হাটে একটি দৃশ্য দেখেছিলাম, মনে হয়েছিলো, একটি ‘পশু’ একটি পশুকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে! কোরবানির প্রতিটি পশুকে আল্লাহ যেন এমন পশু থেকে রক্ষা করেন।
হে ভাই! তুমি যখন কোরবানির হাটে যাবে, কোরবানির পশু খরিদ করবে এবং কোরবানির পশুর গলায় ছুরি চালাবে তখন আমার এ কথাগুলো মনে রেখো।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *