Main Menu

জকিগঞ্জে দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, নতুন স্থানে ভাঙনের আশঙ্কা

নিউজ ডেস্ক:
জকিগঞ্জে বন্যা দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, নতুন নতুন স্থানে ভাঙনের আশঙ্কা।

অবিরাম বৃষ্টিপাত কমলেও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি ঘটছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকার ডাইকে ভাঙন দেখা দিচ্ছে।

গ্রামীণ সড়কের পাশাপাশি তলিয়ে গেছে জকিগঞ্জ-সিলেটের প্রধান যোগাযোগ সড়ক। গ্রামে এখন চলাচলে নৌকাই একমাত্র ভরসা। বন্যা কবলিত এলাকায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
ইতোমধ্যে জকিগঞ্জে ৪৬টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এতে ৮৮৫ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।

জকিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর বড়চালিয়া, সুপ্রাকন্দী, জামডহর, বেউর, লক্ষীবাজার, গড়রগ্রাম, আমলশীদ, পিল্লাকান্দি, রারাই, মানিকপুর, সহিদাবাদ, ভক্তিপুর, লোহারমহল, পীরনগর, লাফাকোনা ও সুরমা নদীর মুন্সিবাজার, রঘুরচক, হাজীগঞ্জ, আটগ্রাম, বড়বন্দ, শরীফাবাদ, পরচক, বারকুলিরচক, উত্তর খিলোগ্রামসহ অন্ততপক্ষে ৪০টি স্থানে সুরমা-কুশিয়ারার বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

তাছাড়াও ডাইকের প্রায় শতাধিক স্থানে স্বেচ্ছাশ্রমে বেড়িবাঁধ রক্ষায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এলাকাবাসী। উপজেলার প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ এখন পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। গত বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই ফের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে জকিগঞ্জের মানুষ। দেখা দিয়েছে চরম গো-খাদ্যের সংকট।

বন্যাকবলিত মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশিরভাগ মানুষের ঘরে পানি উঠেছে রান্না করার মতো পরিস্থিতিও নেই। কোথাও কোথাও রাস্তার উপর দিয়ে তীব্র স্রোতের কারণে চলাচল করা যাচ্ছে না। অনেক এলাকায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। শুকনো খাবারের সঙ্কটও আছে। পানিবন্দি অনেক এলাকায় এখনো কোন ত্রাণ পৌঁছেনি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে বেউর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক সঞ্জয় চন্দ্র নাথ বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ রক্ষায় উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বেউর এলাকায় বিগত ২৫ বছরে একমুঠো মাটি ফেলেনি পাউবো। ফলে কুশিয়ারা নদীর ৪২ কিলোমিটার বাঁধই ঝুঁকিপূর্ণ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ অবহেলার কারণে পুরো জকিগঞ্জ আজ বন্যার পানিতে ভাসছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, সরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত জকিগঞ্জের প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন, এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। পানিবন্দি লোকজনকে ত্রাণ দেয়া অব্যাহত আছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যারা অবস্থান করছেন তাদেরকে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে।
জকিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডিই নিলয় পাশা জানিয়েছেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় জকিগঞ্জের আমলশীদ সুরমা-কুশিয়ারার মিলনস্থলে পানি বিপৎসীমার ১৮৬ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফয়সাল জানান, বন্যায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতিতে লোকজনকে সহায়তা করতে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম চালু আছে। চালের পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবারও বিতরণ করা হচ্ছে। লোকজনকে নিরাপদে রাখতে প্রশাসন তৎপর আছে।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *