Main Menu

আমেরিকার ট্যুরিষ্ট ভিসা (B1/B2) সংক্রান্ত কিছু পরামর্শ

নিউজ ডেস্ক:
অনেকেরই ধারনা আমেরিকার ভিসা পাওয়া সবচেয়ে বেশি কঠিন?হ্যা,অনেক কঠিন।তবে আপনি যদি নিখুত ভাবে ফাইল প্রসেসিং করতে পারেন তাহলে আমেরিকার ভিসা পাওয়া খুবই সহজ।কারন আমেরিকার টুরিষ্ট ভিসার ক্ষেএে কোন প্রকার ডকুমেন্টস জমা দিতে হয় না।ফাইনাল ইন্টাভিউর সময় ভিসা অফিসার হয়তো কিছু ডকুমেন্টনস দেখতে চাইতে পারেন অথবা নাও দেখতে চাইতে পারেন। সবকিছুই র্নিভর করবে ভিসা অফিসারের উপর।
আমার ক্ষেএে ভিসা অফিসার কোন প্রকার ডকুমেন্টস দেখতে চায়নি।
আমেরিকার ভিসার ক্ষেএে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
১/আমেরিকার ভিসার ক্ষেএে DS-160 একটা অনলাইন ফর্ম ফিলআপ করতে হয়।এই ফর্মটি খুবই গুরত্বপূর্ন।কারন আমেরিকার টুরিষ্ট ভিসার ক্ষেএে ফর্মের সাথে কোন প্রকার ডকুমেন্ট জমা দিতে হয় না।শুধুমাএ কিছু তথ্য দিতে হয়।তাই DS-160 ফর্মটি কোন অভিগ্য সম্পন্ন লোক দিয়ে করাতে পারেন।
DS-160 ফর্মটি দেখে একজন ভিসা অফিসার অধিকাংশক্ষেএে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারে আপনাকে ভিসা দেয়া যাবে কি যাবে না।বাকি সিদ্ধান্তটুকু নিবে আপনার ইন্টারভিউর মাধ্যমে।কারন এই DS-160 ফর্মটিতে আপনার যাবতীয় তথ্য দেয়া থাকবে।
০৭ টা ধাপে ভিসা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়ে থাকে:
১/Online এ DS-160 ফর্ম ফিলাপ করতে হবে (কোন প্রকার তথ্য যেনো ভুল না হয়।যেমন:নাম,পাসপোর্ট নাম্বার ইত্যাদি)
২/Online এ নিজের নামে একটি প্রফাইল ক্রিয়েট করতে হবে।এই প্রফাইলটি পরবর্তিতেও কাজে লাগবে।
৩/ইষ্টার্ন ব্যাংকে ভিসা ফি বাবদ ১৬০ ডলার (আনুমানিক ১৩৯২০ টাকা জন প্রতি) ক্যাশ জমা দিতে হবে।ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডে ফিস জমা দেয়া যাবে না।
৪/প্রফাইল থেকে ভিসা ইন্টারভিউর তারিখ নিতে হবে।তারিখের জন্য হয়তো আপনাকে অপেক্ষা করতে হতে পারে।সম্ভব হলে আপনার প্রফাইলে (২নং) লগইন করে তারিখ দিচ্ছে কিনা চেক করতে হবে।একবার ইন্টারভিউর তারিখ নিলে পরবর্তিতে তা রিশিডিউল করা যাবে।(যদি প্রয়োজন হয়)
৫/DS-160 ফর্মটি সাবমিট করার পর Appointment Letter & Confirmation Letter প্রিন্ট করে ইন্টারভিউর দিন সংগে করে নিয়ে যেতে হবে।
৬/আপনার ইন্টারভিউ তারিখ অনুযায়ী আপনাকে বারিধারাস্হ আমেরিকা এম্বাসীতে গিয়ে শ্বশরীরে ইন্টারভিউ দিতে হবে।ইন্টারভিউর দিন যাবতীয় ডকুমেন্টস সাথে রাখবেন।তবে অবশ্যই সকল ডকুমেন্টস ইংরেজি হতে হবে।ইন্টারভিউর সময় নার্ভাস হওয়া যাবে না।কনফিডেন্স নিয়ে কথা বলবেন।অতিরিক্ত কোন কিছু বলার দরকার নাই।ইংরেজিতে উত্তর দেয়া ভালো।তবে ইংরেজিতে উত্তর দিতে না পারলে বাংলায় উত্তর দিতে পারবেন।ভিসা অফিসারগন বাংলা ভালো বলতে পারেন।ক্ষেএ বিশেষে আপনার কথাগুলো ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করে নিবে।
০৭/ভিসা অফিসার যদি আপনাকে ভিসা দিতে না চান,তাহলে ইন্টারভিউর দিন সাথে সাথেই আপনাকে পাসপোর্ট ফেরৎ দিয়ে দিবে।আর যদি ভিসা দিতে ইচ্ছুক থাকে, তাহলে আপনার পাসপোর্টটি ভিসা অফিসার রেখে দিবেন এবং নির্দিষ্ট একটা সময়ের পর গুলশান -২ এ অবস্হিত BFS সেন্টার থেকে ভিসা সহ পাসপোর্টটি সংগ্রহ করতে হবে।
ভিসা সংক্রান্ত কিছু টিপস:
১/আপনি আমেরিকাতে ঘুরতে যাচ্ছেন এবং কিছু দিন ঘুরে নিজ দেশে ফিরে আসবেন।এই বিষয়টি ভিসা অফিসারকে এনশিওর করতে হবে।
২/আপনি ভালো একটি কোম্পানীতে বা কর্পোরেটে জব করেন এবং আপনার মাসিক ইনকাম ভালো।হতে পারে ১.৫ লাখ টাকা বা তারও বেশি।আপনার ইনকাম যদি ভালো না হয় তাহলে আমেরিকার ঘুরতে যাবেন কিভাবে?এমনটি যেনো না হয়,আপনি এলাকার ওলি গলির একটা দোকানের ম্যানেজার এবং নীলক্ষেত থেকে প্যাড বানিয়ে সেই প্যাডে স্যালারী সার্টিফিকেট ও ব্যাংক সলভেন্সি বানিয়ে নিয়ে এসেছেন।
৩/আপনি একজন ভালো ট্রেভেলার।অথাৎ আপনার বেশ কয়েকটি দেশ ঘুরা আছে।তার মধ্যে ইউরোপের কোন একটা দেশ ভ্রমন করা থাকলে বিষয়টি পজেটিভ।যেমন:আমার ইউকে ভিজিট ছিলো।এমন যেনো না হয় আপনি ৭-৮ দিনের একটি প্যাকেজ ট্যুরে থাইল্যান্ড,মালয়েশিয়া,সিঙাপুর ঘুরে এসেছেন এবং আপনি বুঝাতে চাচ্ছেন আপনি ৩ টি দেশ ট্রেভেল করেছেন।আপনি হয়তো একটি অফিসে জব করেন।অথচ ১ বছরে আপনি ৩/৪ টা দেশ ট্রেভেল করেছেন,এমনটিও ঠিক হবে না।কারন ১ বছরে আপনি এতগুলো দেশ ঘুরার জন্য অফিস থেকে ছুটি পেলেন কিভাবে এবং এতো অর্থ কিভাবে যোগাড় করলেন।
ভিসা ফর্মে বিগত ৫ বছরে যে কয়টি দেশ ভ্রমন করেছেন,সেই দেশগুলোর নাম উল্লেখ করতে হবে।
৩/আমেরিকার ট্যুরিষ্ট ভিসার ক্ষেএে বয়স ৪০ এর বেশি হলে ভালো।বয়স যতো বেশি হবে সেইক্ষেএে ভিসা অফিসারগণ হয়তো ভাবতে পারেন, আপনি এই বয়সে আমেরিকা গিয়ে কি করবেন?আপনি হয়তো ঘুরতে যাচ্ছেন,ঘুরে ফিরে আসবেন।তাছাড়া আপনি এই দেশেই ভালো জব করেন এবং মাসিক ইনকামও ভালো।
৪/আমেরিকাতে যদি আপনার কোন আত্বীয় স্বজন থাকে সেই ক্ষেএে আপনার সেই আত্বীয় থেকে ইনভাইটেশন লেটার আনতে হবে। DS-160 তে আপনার সেই আত্বীয়ে নাম,ঠিকানা সহ আরো কিছু তথ্য দিতে হবে।কারো যদি আত্বীয় স্বজন না থাকে তাহলে আমেরিকার কোন একটা হোটেলের বুকিং দেখাতে পারেন।মোবাইল থেকে “Booking. Com ” গিয়ে আপনি নিজেও ক্রেডিট কার্ড (নিজের না থাকলে অন্য কারো কার্ড) দিয়ে খুবই সহজেই হোটেল বুকিং করতে পারেন।
৫/ট্যুর প্লান:DS-160 তে সুন্দর ভাবে ট্যুর প্লানটি দিবেন এবং ফাইনাল ইন্টারভিউর আগে আপনি কোথায় কোথায় ঘুরতে যাচ্ছেন,তার উপর পরিস্কার একটা ধারনা নিয়ে নিবেন।
৪/আপনি যদি কোন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকেন এবং কোন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত থাকেন সেইক্ষেএে সেই সংগঠনের নাম DS-160 ফর্মে উল্লেখ করতে হবে।তাছাড়া আপনার ফেসবুক প্রফাইলের লিংক,ফেসবুক পেইজের লিংক,ইউটিউবের লিংক (যদি থাকে) উল্লেখ করতে হবে।
৫/বিগত ৫ বছরে আপনি যতগুলো ইমেইল আইডি বা মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করেছেন,তা DS-160 তে উল্লেখ করতে হবে।
৬/ভিসা ইন্টারভিউর ০৬ মাস পূর্ব থেকে ব্যাংক ষ্টেইটমেন্ট গুছিয়ে নিতে হবে।মনে করেন,আপনি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন এবং মাসে ১.৫ লাখ টাকা বেতন পান।মাস শেষে বেতনের পুরো টাকাটা আপনার একাউন্ট থেকে তোলে খরচ করে ফেলেন এবং মাসের শেষে সেভিংস শূন্য।ইন্টারভিউর ঠিক পূর্ব মুহুর্তে কারো কাছ থেকে ৫-৬ লাখ টাকা লোন করে আপনার একাউন্টে জমা রেখেছেন।এমনটি করা মোটেও ঠিক হবে না।কারন ভিসা অফিসার বুঝতে পারবে আপনি কারো কাছ থেকে টাকা ধার করে আপনার একাউন্টে টাকা জমা রেখেছেন এবং আপনার নিজস্ব কোন নেভিংস নাই।আপনাকে ভিসা প্রদান করা হলে আপনি আমেরিকাতে ঘুরবেন কিভাবে?
যদিও ভিসা প্রদানের ক্ষেএে ব্যাংক ষ্টেইটমেন্ট বা কোন প্রকার ডকুমেন্টস মেন্ডেটরী না।ভিসা অফিসার আপনার ব্যাংক ষ্টেইটমেন্ট দেখতে চাইতেও পারে আবার নাও দেখতে চাইতে পারে।তবে আপনাকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।
আমি গত বছরের মার্চ (২০২১) মাসে আমেরিকার টুরিষ্ট ভিসার জন্য এপ্লাই করেছিলাম।এর মাঝে বেশ কয়েকবার ইন্টারভিউ ডেইড পাবার পর অবশেষে গত ১৬ ই ফ্রেব্রুয়ারীতে (২০২২) আমি ফাইনাল ডেইড পাই।১৬ তারিখ ইন্টারভিউ দেই এবং ফ্রেব্রুয়ারী ২২ তারিখ আলহামদুলিল্লাহ আমেরিকার ভিসা হাতে পাই।
আমার ভিসার ক্যাটাগরী B1/B2 VISA, 05 years Multiple Visa.
আমেরিকাতে আমি ব্যক্তিগতভাবে ঘুরতে যাবার ইচ্ছে আছে।আমার মাকে নিয়ে আমেরিকাতে ঘুরতে যাওয়ার একটা স্বপ্ন ছিলো।সেই সুযোগটা আমি পাইনি।
আমি কোন ধরনের সংগঠন থেকে বা আমেরিকার কোন আত্বীয় স্বজন থেকে কোন প্রকার ইনভাইটেশন বা আমন্ত্রন পএ পাইনি।ভিসার ক্ষেএে আমি New York এর একটা হোটেল বুকিং দেখিয়েছি।
ভিসা অফিসার আমাকে ৬-৭ মিনিট ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন।প্রশ্ন ও উত্তর ইংরেজি ভাষা ছিলো।
তবে ভিসা অফিসার আমার কোন প্রকার ডকুমেন্টস দেখতে চাননি।এমনকি ব্যাংক ষ্টেইটমেন্ট,সেলারী সার্টিফিকেট,কোন কিছুই দেখেননি।
আমেরিকার ট্যুরিষ্ট ভিসার ইন্টারভিউর আগে আমার এক ফেসবুক বন্ধু ও শ্রদ্ধেয় বড় ভাই Saifur Rahman ভাই বেশ কিছু গাইডলাইন দিয়েছিলেন এবং মনের সাহস যোগিয়েছিলেন।আমি ওনার কাছে চির কৃতজ্ঞ ।সাইফুর ভাইয়ের আমেরিকার মাল্টিপল ভিসা আছে।
সর্বপরি একটা কথা বলবো,আমেরিকার টুরিষ্ট ভিসার ক্ষেএে কোন প্রকার ধরা বাধা নিয়ম নাই।একজন ভিসা অফিসার যদি DS-160 তে দেয়া আপনার তথ্য এবং ইন্টারভিউর উপর সন্তুষ্ট হন,তাহলে সেই অফিসার আপনাকে ভিসা দিতে পারেন।
অনেক এজেন্সিকে বলতে দেখা যায় আমেরিকার ভিসার জন্য ব্যাংকে এমুক টাকা দেখাতে হবে,তমুক টাকা দেখাতে হবে।আসলে কি তাই?আমার একাউন্টে তেমন একটা সেভিংস ছিলো না।এমনকি আমার কোন প্রকার ডকুমেন্টস দেখতে চাননি,সেই দিক বলতে পারি,আমি বেশ লাকি।আমার মায়ের দোয়া ও আপনাদের দোয়া ছিলো।
আমি এই পর্যন্ত পৃথিবীর ০৬ টি দেশ ভ্রমন করার সুযোগ পেয়েছি।এই ০৬ টি দেশ হলো ভারত,চীন,মালয়েশিয়া,ইউকে (লন্ডন),তুরস্ক (ইস্তাম্বুল) ও থাইল্যান্ড।মালেশিয়া ছাড়া বাকি ০৫ টি দেশের ভিসা ফর্ম আমি নিজেই ফিলআপ করেছি।শুধু মালয়েশিয়া অফিসিয়াল ট্যুরে গিয়েছিলাম।বাকি দেশগুলোতে আমার ব্যক্তিগত সফর ছিলো।
আমেরিকার টুরিষ্ট ভিসা সংক্রান্ত তথ্য জানতে বেশ কয়েকজন ইনবক্সে নক করেছেন।আরো অনেকেরই হয়তো জানার আগ্রহ আছে।আমাকে নক করতে হয়তো সংকোচ বোধ করছেন।সেই সকল ট্রেভেলারদের কথা চিন্তা করে আজকের আমরা এই পোষ্ট।আরো কিছু জানার থাকলে নিঃসংকোচে আমাকে নক করতে পারেন। তবে অবশ্যই রাত ১০ টার পর অথবা শুক্র/শনিবার যে কোন সময়।আমি আমার সাধ্যমত সহযোগীতা করবো ইনশাআল্লাহ।আমার দ্বারা কেউ যদি উপকৃত হন,তাহলে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
আমার মনে হয়,এই ষ্ট্যাটাসটি পড়ার পর আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনি আমেরিকার ট্যুরিষ্ট ভিসার জন্য যোগ্য কিনা।
এই লেখাটি আমার নিজস্ব কিছু অভিগ্যতা থেকে লেখা এবং বেশ সময় নিয়ে লিখেছি।কারো কাছ থেকে কপি করা নয়।ছোট খাটো কোন ভুল থাকলে সংশোধন করে দেয়ার অনুরোধ রইলো।
শামীম আহমেদ (উনার ফেসবুক পোস্ট থেকে নেওয়া)
ব্যাংকার ও সমাজকর্মী






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *