Main Menu

জকিগঞ্জে সুলতানপুর ইউপির ফলাফল বাতিল

নিউজ ডেস্ক:
বহুল আলোচিত সিলেটের জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউপির নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। উচ্চ আদালতের নির্দেশে এই নির্বাচন বাতিল করে মঙ্গলবার বিকেলে প্রজ্ঞাপন জারি করে ইসি।

ইসির উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত একপত্রের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক ঘোষিত এ ইউপির ফলাফল বাতিল করার কথা জানিয়ে বলা হয়, হাইকোর্ট রিট পিটিশন নং ১০২৩/২০২২ এ ৩১ জানুয়ারি তারিখের আদেশে রিট পিটিশনের প্রতিপক্ষগণকে বিগত ৫ জানুয়ারী ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল বাতিল করতঃ নির্বাচনের নিমিত্তে নতুন করে তফসিল ঘোষণার নির্দেশনা প্রদান করছেন। হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ মোতাবেক ৫ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে রিটানিং অফিসার কর্তৃক ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল বাতিল করতঃ সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার ৬নং সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনের নিমিত্তে নতুন করে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করার আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকায় উক্ত নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। এছাড়াও ৭ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হওয়া স্থগিত ঐ ইউপির একটি কেন্দ্রের পুনরায় ভোটগ্রহণ করা আইনানুগ হয়নি বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

এমতাবস্থায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সুলতানপুর ইউপির রিটানিং অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারীতে পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিত হওয়া জকিগঞ্জের ৯টি ইউপির সঙ্গে এ ইউপিতে ভোটগ্রহণ হয়েছিলো। কিন্তু ভোটের দিন সকাল থেকে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠে। বিকেল প্রায় ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে ৬নং ওয়ার্ডের গণিপুর ভোটকেন্দ্রে সীল মারা ব্যালেট পেপার বাক্সে ঢুকানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভোটাররা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ব্যালেট বাক্স ছিনতাই করে ভোট কেন্দ্রের নিকটবর্তী পুকুরে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক এ ওয়ার্ডের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। বাকি ৮টি ভোট কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফল ঘোষণার আগেই কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন প্রত্যাখান করে বাতিলের দাবী জানান কয়েকজন চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীরা।

এরপর অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে রিটানিং কর্মকর্তা কর্তৃক ঘোষিত ফলাফল বাতিল এবং পুণভোট গ্রহণ চেয়ে উচ্চ আদালতে পরাজিত কয়েকজন সদস্য প্রার্থীদের পক্ষে রিট পিটিশন দায়ের করে ৩নং ওয়ার্ডের পরাজিত সদস্য প্রার্থী আব্দুল খালিক। রিট পিটিশন শুনানি শেষে ৩১ জানুয়ারী বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খন্দকার
দিলীরুজ্জামানের দ্বৈত বেঞ্চে রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক ঘোষিত এ ইউপির ফলাফল বাতিল করে নতুন তফসিল ঘোষণার আদেশ দেন। এ আদেশ প্রকাশের আগেই গত ৭ ফেব্রুয়ারী ঐ ইউপির স্থগিত কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ করা হয়। এ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, বিএনপি ঘরানো প্রার্থী হাসান আহমদ, জাপা প্রার্থী রিমন আহমদ চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী জালাল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান বুরহান উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন। ৯টি ওয়ার্ডে সাধারন সদস্য পদে ৪৮ জন, সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে ১২ জন প্রার্থী ছিলেন। বাতিল হওয়া ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ৪ হাজার ৪০৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রার্থী বিএনপি নেতা হাসান আহমদ ৩ হাজার ২০৩ ভোট পান।

অন্যদিকে, ৫ জানুয়ারী ভোটের দিন বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীব ও রিটানিং কর্মকর্তা আরিফুল হককে কাজলসার ইউপির মরিচা ভোট কেন্দ্র থেকে কালো রঙের গাড়ীসহ আটক করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার (এসপি) ফরিদ উদ্দিন পিপিএম ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শুক্কুর মাহমুদ মিয়া। পরে তাদের গাড়ি তল্লাসি করে বিভিন্ন ইউপির চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীর সিল দেয়া ও খালি ব্যালট পেপার, মুড়ি বই ৮টি, ব্যালেট বাক্সের সিলগালা লক ৮টি, নগদ টাকা ১ লাখ সাড়ে ২১ হাজার, ফেন্সিডিলের খালি বোতল উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় কাজলসার ইউপির ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরে পুলিশ বাদী হয়ে স্থানীয় সরকার আইনে এই দুই রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। দুই রির্টানিং কর্মকর্তা অনিয়মের দায়ে আটকের পর মামলার ঘটনায় ৯টি ইউপির ফলাফল বাতিল ও পুনভোট চেয়ে উচ্চ আদালতে একাধিকজন পৃথক কয়েকটি রিট দাখিল করেন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *