Main Menu

নতুন প্রযুক্তির জাহাজ ব্যবহার করবে মায়েরস্ক

নিউজ ডেস্ক:
বর্তমানে সমুদ্রে প্রায় ৫০ হাজার পণ্য পরিবহনকারী জাহাজ রয়েছে। সম্প্রতি পণ্য পরিবহনের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের ফলে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছে খাতটি। বন্দরগুলোয় আটকা পড়ে আছে বহু জাহাজ। পাশাপাশি পরিবহন খরচও আকাশচুম্বী। এর মধ্যে পণ্য পরিবহনে মিথানলচালিত জাহাজ ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে শিপিং জায়ান্ট মায়েরস্ক। খবর বিবিসি।

রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন দেশ ও জোটগুলোর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে পণ্য পরিবহন ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় খাদ্য, ওষুধ ও মানবিক সহযোহিতায় পণ্য সরবরাহ বাদে রাশিয়ার সঙ্গে কনটেইনারে পণ্য পরিবহন কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করে মায়েরস্ক।

এদিকে বিশ্বজুড়ে মোট কার্বন ডাই-অক্সাইডের ৩ শতাংশ নিঃসরণ করে পণ্য পরিবহন খাত। এটি জার্মানির নিঃসরণের সমপরিমাণ। কার্বন নিঃসরণ কমাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা নিয়েছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জীবাশ্ম জ্বালানির দাম বেড়ে চলছে।

শিপিং জায়ান্ট মায়েরস্ক মিথানলচালিত ১২টি সমুদ্রপথগামী জাহাজের ক্রয়াদেশ দিয়েছে। প্রতিটি জাহাজের দাম পড়েছে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার। একটি জাহাজ ১৬ হাজার কনটেইনার পরিবহনে সক্ষম। মায়েরস্কের কার্বন নিরোধবিষয়ক উদ্যোগ এবং ব্যবসা উন্নয়নের প্রধান জ্যাকব স্টারলিং জানান, মিথানল নবায়নযোগ্য জ্বালানি। শিগগিরই মিথানলচালিত জাহাজগুলোর মাধ্যমে পণ্য পরিবহন শুরু হবে বলে আশা করছেন তিনি।

জ্যাকব স্টারলিং বলেন, প্রতি বছর বিশ্বে মাত্র ৩০ হাজার টন বনায়নযোগ্য জ্বালানি তৈরি হচ্ছে। মায়েরস্কের নতুন জাহাজগুলোর জন্য এর থেকে অন্তত ১৫ গুণ বেশি জ্বালানি উৎপাদন প্রয়োজন। তাই মিথানলে জাহাজ চালানো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে মায়েরস্কের জন্য।

পণ্য পরিবহন ব্যবসায় বিশ্বের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান মায়েরস্ক। প্রতিষ্ঠানটির বহরে প্রায় ৭০০টি জাহাজ রয়েছে। পণ্য পরিবহন করতে বিপুল পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ করে প্রতিষ্ঠানটির এ জাহাজগুলো। কার্বন নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগেই মিথানলে জাহাজ চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে মায়েরস্কের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগামী বছর প্রথমবারের মতো একটি ছোট কনটেইনার জাহাজ বাল্টিক সমুদ্রে পণ্য পরিবহন পরিষেবার জন্য চালু করা হবে। প্রতিষ্ঠানটির ধারণা, এ জাহাজগুলো প্রতি বছর ১৫ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ বাঁচাবে। ফলে মায়েরস্কের বহরের সাড়ে ৪ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমবে।

সাধারণত রঙ করতে, প্লাস্টিক ও কাপড় তৈরিতে মিথানল ব্যবহার করা হয়। এর পাশাপাশি যানবাহনের জ্বালানি হিসেবেও মিথানলের ব্যবহার রয়েছে। মিথানল ছাড়াও অ্যামোনিয়া ও হাইড্রোজেন নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির মতো মিথানল ঠাণ্ডায় সংরক্ষণের প্রয়োজন হয় না।

অল্পসংখ্যক প্রতিষ্ঠান নবায়নযোগ্য জ্বালানি মিথানল উৎপাদন করে। এর মধ্যে অন্যতম ডেনমার্কভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইউরোপিয়ান এনার্জি। মায়েরস্কের ক্রয়াদেশের প্রথম জাহাজটির জন্য ১০ হাজার টন ই-মিথানল সরবরাহ করতে প্রস্তুত প্রতিষ্ঠানটি।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি হিসেবে মিথানল ব্যবহারের সব থেকে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে জ্বালানি পণ্যটির উৎপাদন। এছাড়া জীবাশ্ম জ্বালানির চেয়ে মিথানলের উৎপাদন ব্যয় দ্বিগুণ। এছাড়া মায়েরস্কের নতুন জাহাজগুলো তৈরির ব্যয়ও ১০-১৫ শতাংশ বেশি। ব্যয় বাড়ার কারণে ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দামও বেশি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কার্বন নিরপেক্ষ পরিবহনের জন্য ভোক্তারা প্রিমিয়াম মূল্য পরিশোধ করতে সম্মত বলে জানিয়েছে স্টারলিং।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *