আলেমকে জিজ্ঞাসা না করে কারো কথা অনুযায়ী আমল করা যাবে কী?

ইসলাম ডেস্ক:
আলেমকে জিজ্ঞাসা না করেই ডাক্তারের কথা অনুযায়ী আমল শুরু করে দেওয়া কী ঠিক হবে?
সেদিন এক ভাই ফোনে তায়াম্মুমের নিয়ম জানতে চাইলেন। জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার কী হয়েছে যে, তায়াম্মুম করে নামায পড়তে হবে?
বললেন, চোখে একটা অপারেশন হয়েছে, তাই ডাক্তার বলেছেন, চোখে পানি লাগাবেন না, তায়াম্মুম করে নামায পড়বেন। এখন তায়াম্মুম তো সচরাচর করা হয় না, তাই তায়াম্মুমের নিয়মটা একটু জানা দরকার। আমার যতটুকু মনে আছে, সে অনুযায়ী তায়াম্মুম করে নামায পড়ে নিয়েছি; তারপর মনে হল, আমার তায়াম্মুম করা ঠিক ছিল কি না- একটু জেনে নিই।
তার একথা শুনে আমি বললাম, আপনি কি কোনো আলেমকে জিজ্ঞেস করেছেন, এ অবস্থায় আপনার তায়াম্মুম করা সহীহ আছে কি না; নাকি ওযুই করতে হবে আর শুধু ঐ স্থান মাসেহ করতে হবে?
তিনি না-সূচক জবাব দিলেন এবং বললেন, আমি তো তায়াম্মুম করে নামায পড়ে নিয়েছি।
এই যে কাজটি তিনি করলেন তা উচিত হয়নি। এক্ষেত্রে তার তায়াম্মুম করা সহীহ হয়নি। ওযুর কোনো অঙ্গে পানি লাগাতে সমস্যা হলেই তায়াম্মুম করা বৈধ হয়ে যায় না; বরং অনেক ক্ষেত্রে ঐ স্থানে পানি না লাগিয়ে ওযু করাই জরুরি থাকে, আবার কখনো তায়াম্মুম করতে হয়; ওযু নয়। এটি মাসআলার বিষয়। যা নির্ধারণ করবেন মুফতী সাহেব। যেমন, এই ভাইয়ের বিষয়টি। এক্ষেত্রে তার জন্য ওযু করাই জরুরি। যতটুকু অংশে পানি লাগানো তার জন্য ক্ষতিকর সে অংশে পানি লাগানো ছাড়া বাকি ওযু তিনি যথা নিয়মেই সম্পাদন করবেন আর যতটুকু অংশে পানি লাগানো নিষেধ সেটুকু ভেজা হাত দ্বারা মাসেহ করে নেবেন। সেখানে যদি ভেজা হাত লাগানোও তার জন্য ক্ষতিকর হয় তবে মাসেহ না করলেও চলবে। তারপরও তাকে ওযুই করতে হবে। এক্ষেত্রে সে তায়াম্মুম করবে না। কিন্তু শুধু ডাক্তারের কথা শুনে কোনো মুফতী সাহেব থেকে মাসআলা না জানার কারণে ভুল হয়ে গেছে।
আর ডাক্তারেরও উচিত, ‘তায়াম্মুম করে নামায পড়বেন’ বা ‘চেয়ারে বসে নামায পড়বেন’- এভাবে সরাসরি মাসআলা না বলে কেবল রোগীর সমস্যাটা চিহ্নিত করে দেওয়া যে, অমুক স্থানে পানি লাগানো যাবে না বা ঝুঁকা যাবে না ইত্যাদি। কিন্তু ওযু-নামায কীভাবে আদায় করবে তা বাতলে দেওয়া ডাক্তার সাহেবের কাজ নয়। রোগী তার সমস্যার বিবরণ দিয়ে এ অবস্থায় ওযু কীভাবে করবে বা নামায কীভাবে পড়বে এটা আলেম থেকে জেনে নেবেন।
তেমনি জনসাধারণেরও উচিত, নিজে থেকে সিদ্ধান্ত না নেওয়া। এটা মনে না করা যে, ডাক্তার যেহেতু বলেছেন, চোখে পানি লাগানো যাবে না, সুতরাং আমাকে তায়াম্মুম করে নামায পড়তে হবে; বরং সে আলেমকে বিষয়টি জানিয়ে মাসআলা জেনে নেবে এবং সে অনুযায়ী আমল করবে।
আল্লাহ আমাদের দ্বীনী বিষয়সহ সকল বিষয়ে সচেতনতা দান করুন। সূত্র: মাসিক আল কাউসার
Related News

যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকের বিশেষ আমল: আমাদের করণীয়
যিলহজ্বের মাসের প্রথম দশকের বিশেষ আমল : আমাদের করণীয় ফাহাদ মারুফ: যিলহজ্বের প্রথম দশকের বিশেষRead More

সৌদিতে ঈদ ৯ জুলাই
নিউজ ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্য থেকে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। তাই সৌদি আরব ও আরব আমিরাতRead More