Main Menu

ইউক্রেনে সেই জাহাজ থেকে আসিফের বেঁচে ফেরার অপেক্ষায় বাবা-মা

নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার থেকে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া সৈয়দ আসিফুল ইসলাম (৩৩) ইউক্রেনের বন্দরে আটকা পড়া বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধির চিফ ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল। সেজন্য গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে বিদায় নেন আসিফ। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মুন্সেফপাড়ায়।

রাশিয়া-ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে জাহাজের ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে। ওই জাহাজে আসিফসহ বেশ কয়েকজন নাবিক আটকা পড়েছেন। আসিফের বাবা-মা এখন ছেলের জীবিত ফেরত আসার অপেক্ষার প্রহর গুণছেন।

ছেলের জন্য বাবা মসজিদে খতমে কোরআন পড়িয়েছেন। মা সারাদিন তসবিহ জপছেন। ভাইয়ের ছবিতে হাত বুলিয়ে প্রার্থনা করছেন বোন। আর স্বামীর বিপদের খবর শোনার পর থেকেই অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন আসিফের স্ত্রী। গত সপ্তাহে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি বেড়াতে গেছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসিফের বাবা সৈয়দ নুরুল ইসলাম রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা। আর মা পারভীন আক্তার গৃহিণী। দুই ভাই-বোনের মধ্যে আসিফ বড়। তার বোন সৈয়দা নুসরাত জাহান ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ছেন।

বাবার চাকরির সুবাদে আসিফের শৈশব কেটেছে ঢাকায়। পড়াশোনাও করেছেন সেখানে। মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা সিটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তিনি ভর্তি হন চট্টগ্রামের মেরিন একাডেমিতে। সেখানকার পাঠ চুকিয়ে যোগ দেন বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনে। এর মধ্যে ২০১৭ সালে বিয়ে করেন আসিফ। দাম্পত্য জীবনে তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক।

আসিফের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সর্বশেষ গত ৫ ডিসেম্বর ছুটিতে বাড়ি আসেন আসিফ। ছুটি কাটিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় যান। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে গিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি জাহাজে ওঠেন। জাহাজ নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে জাহজটি ইউক্রেনের একটি বন্দরে আটকা পড়ে। সম্প্রতি পদোন্নতি পাওয়া আসিফের ওই জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল। অথচ এখন যুদ্ধের কারণে জীবন নিয়েই শঙ্কা কাটছে না।

আসিফের মা পারভীন আক্তার বলেন, ছেলের জন্য অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে। কখন কী হয়- বলা যাচ্ছে না। সরকারের কাছে দাবি জানাই আমার ছেলেসহ জাহাজের সবাইকে যেন নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে।

আসিফের বোন সৈয়দা নুসরাত জাহান জানান, শিপিং কর্পোরেশেন থেকে ফোন করে বলা হয়েছে কেউ যেন জাহাজ ছেড়ে না আসে। জাহাজের দাম ৩০০ কোটি টাকা। তাদের কাছে মানুষের জীবনের দাম নেই। ভাইকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।

আসিফের বাবা সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, আসিফের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সে ভালো আছে বলে জানিয়েছে। জাহাজে এক মাসের খাবার মজুত আছে। কিন্তু যুদ্ধ এক মাসে শেষ হবে বলে মনে হচ্ছে না। ফলে তারা না খেয়েই মারা যাবে। সেজন্য দ্রুত জাহাজে থাকা সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *