Main Menu

সিলেটে বেড়েই চলছে নৃশংস হত্যাকান্ড

নিউজ ডেস্ক:
সিলেটে হঠাৎ করে বেড়েছে খুনোখুনি। একেকটি হত্যাকান্ডের বর্ণনা শুনে শিহরে ওঠছেন মানুষ। নৃশংস এই হত্যাকান্ডগুলো ঘটছে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে। কোথাও সন্তানের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন মা, আবার কোথাও ঘটছে বিপরীতটি। প্রভাব বিস্তার নিয়ে হত্যাকরে পা কেটে নেয়া কিংবা ধর্ষনের পর লাশ ৬ টুকরো করে গুম করার চেষ্টাও ঘটেছে সম্প্রতি। চলতি বছরের দেড় মাসে সিলেট বিভাগে এরকম লোকহর্ষক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে ৭টি। পুলিশ ও সমাজসচেতনরা বলছেন নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে মানুষের মানসিকতার এমন অধঃপতন ঘটেছে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাইয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে গাছ কাটা নিয়ে প্রতিবেশিরা পিঠিয়ে খুন করেন সাহাব উদ্দিন নামের এক অটোরিকশা চালককে। তিনি কুচাই গ্রামের আবদুল হামিদ আখল মিয়ার ছেলে। প্রতিবেশিরা তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

একই দিন গোলাপগঞ্জে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তারিফুর রহমান নামের এক যুবককে খুন করে। তিনি গোলাপগঞ্জ পৌর শহরের রণকেলি নয়াগ্রামের তখলিছ আলীর ছেলে। স্থানীয় রঙ্গাইবিছরা মাঠে ফুটবল খেলার সময় নিজ গ্রামের দলের খেলোয়াড়দের শাসান তারিফুর। এসময় প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা ভুল বুঝে তার সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ান। পরে উপস্থিত লোকজনদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিমাংসা হয়। খেলায় তারিফুরের গ্রামের দল জিতলে বিপক্ষ দলের কয়েকজন সমর্থকের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে খুন হন তারিফ।

সবচেয়ে নির্মম হত্যাকান্ডটি ঘটে ১৭ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে। জগন্নাথপুর পৌরশহরের অভি মেডিকেল হল নামের ফার্মেসির ভেতর থেকে শাহনাজ পারভীন জোসনা নামের গৃহবধূর ৬ টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের নারিকেলতলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী ছরুক মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় ঢাকা থেকে ফার্মেসির মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জিতেশ জানিয়েছে, ফার্মেসির ভেতর ঘুমের ঔষধ খাইয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষনের পর খুন করে গুমের জন্য লাশ ৬ টুকরো করা হয়। লাশটি পার্শ্ববর্তী একটি মৎস্য খামারে ফেলে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি নিজের দেড় বছর বয়সী শিশুকন্যাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে পুলিশে আত্মসমর্পন করেন ঘাতক মা নাজমীন আক্তার। তিনি পেশায় শিক্ষিকা। গোলাপগঞ্জের কালিকৃষ্ণপুরের বাসিন্দা নাজমীনের বিয়ে হয়েছিল দক্ষিণ সুরমার বলদি ইউনিয়নের সাব্বির আহমদের সাথে। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধ থেকে নিজের কন্যা সন্তানকে খুন করেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন নাজমীন।

গত ৩১ জানুয়ারি বিকেলে কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের বড়খেওড় এলাকায় ফরিদ উদ্দিন নামের এক যুবককে কুপিয়ে খুন করা হয়। খুনীরা হত্যাকান্ডের পর ফরিদের এক পা কেটে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকান্ডের এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

গত ২৩ জানুয়ারি জৈন্তাপুরে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে নিজের মাকে হত্যা করে আবুল হাসনাত নামের এক যুবক। নিহত আয়নব বিবি জৈন্তাপুর উপজেলার উত্তর মহাইল গ্রামের তজম্মুল আলীর ছেলে। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকান্ডটি ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গত ৩১ জানুয়ারি সোমবার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নির্বাচন নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় মারুফ আহমদ নামের এক যুবক নিহত হন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *