গোল্ডেন ভিসা বাতিল, দুর্নীতিবাজ অভিজাত ঠেকাতে কঠোর হচ্ছে ব্রিটেন

নিউজ ডেস্ক:
অবৈধ অর্থ ও জালিয়াতির বিরুদ্ধে নতুন করে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে ব্রিটিশ সরকার। এরই অংশ হিসেবে ‘গোল্ডেন ভিসা’ নামে পরিচিত বিতর্কিত টায়ার ওয়ানের আওতাধীন ‘ফরেন ইনভেস্টর্স ফাস্ট ট্র্যাক রেসিডেন্সি ভিসা’ বন্ধ করা হয়েছে। এই ভিসার আওতায় ব্রিটেনে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ করে সপরিবারে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল বিবিসিকে বলেছেন, গোল্ডেন ভিসা বাতিলের এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্যাটেল বলেছেন, আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থার অপব্যবহারকারীদের প্রতি আমার জিরো টলারেন্স রয়েছে। নতুন অভিবাসন পরিকল্পনায় ব্যবস্থাটির প্রতি ব্রিটিশ মানুষের আস্থা নিশ্চিত করতে চাই। দেশে দুর্নীতিবাজ অভিজাতদের ঠেকানো প্রয়োজন, যারা আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং আমাদের শহরগুলোতে কালো মুদ্রা ছড়াচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই ভিসা বন্ধ হলো জালিয়াতি ও অবৈধ অর্থায়নের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমরা জালিয়াতি ঠেকানোর পরিকল্পনা প্রকাশ করবো। একইসঙ্গে আসন্ন অর্থনৈতিক অপরাধ বিলে আমাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার বিধান থাকবে।
বিগত ২০০৮ সালে টায়ার ওয়ানের আওতাধীন ‘ফরেন ইনভেস্টর্স ফাস্ট ট্র্যাক রেসিডেন্সি ভিসা চালু করা হয়েছিল। এর আওতায় ন্যূনতম দুই মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করে পরিবারসহ দেশটিতে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ দেয় ব্রিটিশ সরকার। মূলত, তখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলোর ধনীক শ্রেণিকে আকৃষ্ট করতেই এ ভিসা চালু করা হয়েছিল। বিনিয়োগের অঙ্কের ভিত্তিতে স্থায়ী হওয়ার অনুমোদন দ্রুত পাওয়া যেতো। দুই মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগে ৫ বছর, পাঁচ মিলিয়নে ৩ বছর এবং দশ মিলিয়ন বিনিয়োগে দুই বছরে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ ছিল।
এই গোল্ডেন ভিসার সুবিধা নিয়ে গত এক দশকে রাশিয়াসহ বিভিন্ন এশীয় দেশের অনেক দুর্নীতিবাজ ব্রিটেনে স্থায়ী হয়েছেন। পরে বিষয়টি সরকারের নজরে এলে এনিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এতে উঠে আসে গত কয়েক বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি কয়েকজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত বাংলাদেশি এই গোল্ডেন ভিসায় বিনিয়োগ করে ব্রিটেনে পরিবার নিয়ে স্থায়ী হয়েছেন।
গত ১৪ বছরে কতজন বাংলাদেশি কোটিপতি এ সুবিধা নিয়েছেন, সেই তথ্য পাওয়া যায়নি ইউকে বর্ডার এজেন্সি বা পরিসংখ্যান বিভাগের কাছে।
তবে জানা গেছে, ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে দেশভিত্তিক তালিকার শীর্ষ দশে নেই বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে যারা গোল্ডেন ভিসার সুযোগ নিয়ে স্থায়ী হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে তা জানায়নি বরিস জনসনের সরকার।
এদিকে শুরু থেকেই টাকার বিনিময়ে ব্রিটেনের নাগরিকত্ব প্রদানের এই প্রক্রিয়া নিয়ে খোদ অনেক ব্রিটিশ রাজনীতিকও সমালোচনা করে আসছেন। ইউক্রেনে হামলার আশঙ্কা থাকায় রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার চাপ রয়েছে মন্ত্রীদের ওপর। আগামী সপ্তাহে গোল্ডেন ভিসা বাতিলের ঘোষণা প্রত্যাশা করা হচ্ছিল। গোল্ডেন ভিসা বাতিলের ঘোষণাটি এমন সময় এলো যখন ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
Related News

শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠলো আট দেশ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের দক্ষিণাঞ্চলে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। স্থানীয় সময়Read More

আসাম-মেঘালয়-অরুণাচলে বন্যায় ১১৯ জনের মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আসামে বন্যায় ২৪ ঘণ্টায় ২ শিশু ও ২ পুলিশ সদস্যসহ আরও ১০ জনRead More