Main Menu

যেভাবে পানি পান করা সুন্নত

ধর্ম ডেস্ক:
আল্লাহর নেয়ামতের অভাব নেই। তিনি কত নেয়ামত ও অনুকম্পা দিয়েছে যে আমাদের জীবন সহজ ও স্বাভাবিক করেছেন, তার কোনো শেষ নেই। সারাজীবন শুকরিয়া আদায় করলেও তার নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায় হবে না।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে কি তোমরা চিন্তা করেছ? তোমরাই কি তা মেঘ হতে নামিয়ে আন, না আমি তা বর্ষণ করি? আমি ইচ্ছে করলে— তা লবণাক্ত করে দিতে পারি। তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না? (সুরা ওয়াক্বিয়া, আয়াত : ৬৮-৭০)।

অন্য সবকিছুর মতো পানিও আল্লাহ তাআলার অপার এক নিয়ামত। পানি মানুষের জীবন বাঁচিয়ে রাখে। আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ করেছেন, ‘আর আমি প্রাণবান সবকিছু সৃষ্টি করলাম পানি থেকে— তবুও কি তারা ঈমান আনবে না? (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৩০)

শুধু বিশুদ্ধ, পরিমিত ও নিয়ম মেনে পানি পানে অনেক রোগের উপকার পাওয়া যায়। তবে অনেকেই সঠিকভাবে পানি পান করেন না বা জানেন না। পানি কীভাবে পান করতে হবে— এ ব্যাপারেও বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে; যা পালন করলে পানি পান করার পাশাপাশি বিরাট সওয়াবের মালিকও হওয়া যাবে। রাসুল ( সা.)- এর বাস্তব জীবনের এ আমলগুলো উঠে এসেছে হাদিসের বর্ণনায়।

পানি পান করার সুন্নতগুলো জেনে রাখুন

এক. ডান হাতে পান করা। কেননা, শয়তান বাম হাত দিয়ে পান করে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/১৭২)

দুই. বসে পান করা, দাঁড়িয়ে পান করা নিষেধ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/১৭৩)

তিন. শুরুতে (বিসমিল্লাহ) পড়া এবং শেষে (আলহামদুলিল্লাহ) পড়া। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২/১০)

চার. তিন নিঃশ্বাসে পান করা, নিঃশ্বাস ফেলার সময় গ্লাস থেকে মুখ আলাদা করা। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/১৭৪)

পাঁচ. গ্লাসের ভাঙা অংশের দিক দিয়ে পান না করা। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২/১৬৭)

ছয়. জগ ইত্যাদি বড় পাত্রে মুখ লাগিয়ে পান করবেন না। কেননা এতে বেশি পানি চলে আসার বা সাপ-বিচ্ছু থাকার আশঙ্কা থাকে। (বুখারি, হাদিস : ২/৮৪১; মুসলিম, হাদিস : ২/১৭৩)

সাত. পান করার পর অন্যজনকে দিতে হলে— প্রথমে ডান পাশের জনকে দেবেন। সেও তার ডান পাশের জনকে দেবেন, এভাবেই চলবে। পানীয়ের ক্ষেত্রে এটাই নিয়ম। (বুখারি, হাদিস : ২/৮৪০; মুসলিম, হাদিস : ২/১৭৪)

আট. অজু করার পর যে পাত্রে হাত দিয়ে পানি নেওয়া হয়, সে পাত্রের অবশিষ্ট পানি কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে পান করা। এতে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি হতে আরোগ্য লাভ হয়। (বুখারি, হাদিস : ৫৬১৬)

নয়. পানীয় দ্রব্য পান করে কাউকে দিতে হলে ডান দিকের ব্যক্তিকে আগে দেওয়া এবং এই ধারাবাহিকতা অনুযায়ীই শেষ করা। (বুখারি, হাদিস : ৫৬১৯)

সাহল ইবনু সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) -এর কাছে একটি পেয়ালা আনা হল। তিনি তা হতে পান করলেন। তখন তার ডান দিকে ছিল একজন বয়ঃকনিষ্ঠ বালক আর বয়স্ক লোকেরা ছিলেন তার বাম দিকে। তিনি বললেন, হে বালক! তুমি কি আমাকে অবশিষ্ট (পানিটুকু) বয়স্কদের দেওয়ার অনুমতি দিবে? সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার নিকট থেকে ফজিলত পাওয়ার ব্যাপারে আমি আমার চেয়ে অন্য কাউকে প্রাধান্য দিব না। অতঃপর তিনি তা তাকে দিলেন। (মুসলিম, হাদিস : ৩৬/১৭; ২৩৬৬, ২৪৫১; আহমাদ, হাদিস : ২২৮৮৭)

আল্লাহ তাআলা সবাইকে নিত্যদিনের প্রত্যেকটি কাজে আল্লাহর (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ ও অনুকরণ করার তাওফিক দান করুক। আমিন।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *