Main Menu

‘আমি মরতে চেয়েছি’: লেবাননে অভিবাসী গৃহকর্মীদের অভিশপ্ত জীবন

বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
সারাহ এবং জোয়ানা কম্বল, জামাকাপড় এবং খাবারের ক্যানে ভর্তি একটি বড় লাল স্যুটকেসের সামনে বসে আছেন। সারার এই জিনিসপত্রগুলোই অবশিষ্ট রয়েছে। তারা বৈরুতে কেনিয়ার কনস্যুলেটের সিঁড়িতে গত তিন সপ্তাহ ধরে অবস্থান করছেন। তাদের পেছনের দেয়ালে গ্রাফিতিতে একটি শব্দ রয়েছে তা হলো ‘ন্যায়বিচার’। নিচের লবিতে আরও অনেক নারী ঠাণ্ডা রাত কাটানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তারা কেনিয়ার কয়েক ডজন গৃহকর্মীর একটি দলের অংশ, যারা তাদের প্রত্যাবাসনের অধিকারের দাবিতে কনস্যুলেটে বসে আছেন। তারা নিজের দেশে ফিরে যেতে চান। খবর আল জাজিরার

সারা বলেন, ‘তারা আমাকে বলেছিল যে ২৬ জানুয়ারি আমি দেশের পথে ভ্রমণ করতে পারবো। কিন্তু তারা প্রতিদিনই মিথ্যা বলে। আমি ফ্লাইট [টিকিট] দেখার আগে এটা বিশ্বাস করব না।’

নারীরা কাফালা ব্যবস্থার অধীনে কাজের জন্য লেবাননে এসেছিলেন, যা প্রায়শই আধুনিক দিনের দাসত্বের সাথে তুলনা করা হয়। কয়েক মাস দুর্ব্যবহার বা অর্থ প্রদান না করার পর তারা কেনিয়ায় ফেরার আশায় তাদের নিয়োগকর্তাদের ছেড়ে চলে গেছেন।

এমন দৃশ্য লেবাননের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আরও বাড়ছে। দেশটিতে গৃহকর্মীদের চাহিদা বেশি থাকলেও তাদের বেতন অনেক কমে গেছে।

২০২০ সালে ইথিওপিয়া, ফিলিপাইন এবং সুদানের গৃহকর্মীদের বেশ কয়েকটি দল তাদের নিয়োগকর্তাদের দ্বারা পরিত্যক্ত হওয়ার পর নিজ দেশের দূতাবাসে অবস্থান নিয়েছিল।

তবে বাড়িতে ফিরতে চাইলেও এসব গৃহকর্মী কাফালা পদ্ধতির নিষ্ঠুরতার মুখোমুখি হন। কারণ, তাদের সবারই পাসপোর্ট স্পন্সরদের কাছে আটকে থাকে। এছাড়া রিটার্ন টিকিট পেতে আইনি কোনো পথ থাকে না। এমনকি দায়িত্ব এড়াতে শ্রমিকদের চুরি বা অন্যান্য অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা হয়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এর লেবানন গবেষক আয়া মাজজুব বলেন, ‘এই শ্রমিকদের নিয়োগকর্তা কারা তা খুঁজে বের করা কঠিন নয়।’

৪০ বছর বয়সী সারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে কয়েক মাস ধরে অপেক্ষা করছেন। তিনি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে লেবাননে এসেছিলেন। আসার পর তিনি আরবীতে লেখা একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তারপর থেকে তিনি তার পাসপোর্ট কখনো দেখেননি। তিনি নিয়োগকর্তার দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এমনকি নিয়োগকর্তা তার সন্তানদের সারাকে ‘গরিলা’ ডাকতে বলেছিলেন।

তার বাবা হাসপাতালের বিছানায় প্রচন্ড অসুস্থ থাকলেও নিয়োগকর্তা তাকে বেতন দেননি। তার বাবা শেষ পর্যন্ত মারা যান। এসময় তিনি নিজেকে শেষ করতে দিতে চেয়েছিলেন।

কাফালা ব্যবস্থার অধীনে গৃহকর্মীদের লেবাননের শ্রম আইনে বিবেচনা করা হয় না। যার ফলে অহরহ মারধর ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এই পদ্ধতি সংস্কারের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *