নফল নামাজ কীভাবে পড়বেন ও ফজিলত

মুফতি আসিম নাজিব, অতিথি লেখক:
আল্লাহ তাআলা আমাদের সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদতের জন্য। মানুষ যখন তার পার্থিব জীবনের প্রতিটি কাজ ও প্রয়োজন আল্লাহর হুকুম ও রাসুল (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক হবে, তখন তাঁর প্রত্যেকটি কাজ ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে এবং এতে বান্দা সওয়াব লাভ করবে।
কিন্তু এরপরও প্রত্যেক মুসলিমের মৌলিক ইবাদত রয়েছে, যেগুলো করতে আল্লাহ তাআলা আদেশ দিয়েছেন। তার মধ্যে যথেষ্ট নফল ইবাদত রয়েছে। কারণ, নফল ইবাদতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে।
নফল নামাজের মাধ্যমে জান্নাতে নবীজির সঙ্গ লাভ
প্রত্যেক মুসলমান চায় জান্নাতে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গলাভ করতে। এর চেয়ে বড় চাওয়া আর কী হতে পারে? এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী থাকতে পারে? সাহাবি রবিয়া আসলামি (রা.)-এর একটিই চাওয়া- জান্নাতে নবীজির সঙ্গলাভ। আর কী চাই হে রবিয়া! নবীজির জিজ্ঞাসা। উত্তর আগেরটি-ই, জান্নাতে আপনার সঙ্গ।
বিশেষ সুযোগে বড় কারও কাছে মানুষ বিশেষ কিছুই চায়। আর তিনি নিজেই যদি চাইতে বলেন, তাহলে তো কথাই নেই। তবে চাইতে তো জানতে হয়। আসুন, রবিয়া আসলামি (রা.)-এর কাছ থেকে শিখি, কী চাইতে হয়, কীভাবে চাইতে হয়।
রবিয়া আসলামি (রা.) বলেন, আমি (কখনো কখনো) রাতে নবীজির সঙ্গে থাকতাম। এক রাতে আমি তার জন্য অজু-ইস্তেঞ্জার পানির ব্যবস্থা করলাম। তিনি (খুশি হলেন) বললেন, রবিয়া! তুমি যা খুশি চাইতে পার। রবিয়া বলেন, তখন আমি বললাম, ‘জান্নাতে আপনার সঙ্গে থাকতে চাই।’ নবী কারিম (সা.) বললেন, আর কী চাও? (এবারও রবিয়ার একই উত্তর, তিনি বলেন) আমি তখন বললাম, আমার ওই একটাই চাওয়া। একথা শুনে নবী কারিম (সা.) বললেন, তাহলে ‘কাসরাতুস সুজুদ’ তথা বেশি বেশি নফল নামাজের মাধ্যমে আমাকে এ বিষয়ে সাহায্য করো। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৮৯)
এ চাওয়া তখনই বাস্তবে রূপ নেবে, যখন মুমিন বেশি বেশি সিজদা তথা নফল নামাজ আদায় করবে। কারণ, হাদিস শরিফে এসেছে, বান্দা যখন সিজদা করে তখন বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়। তো বান্দা বেশি বেশি আল্লাহর নিকটবর্তী হলে তার মর্যাদা তো বৃদ্ধি পাবেই। আর আল্লাহ যে বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন তার গোনাহ কি বাকি রাখবেন? না, আল্লাহ তার গোনাহগুলো বাকি রাখবেন না।
বেশি বেশি নফল জান্নাত লাভের মাধ্যম
মাদান ইবনে আবু তালহা (রহ.) বলেন, আমি নবীজির আজাদকৃত (স্বাধীন করে দেওয়া) গোলাম ছাওবান (রা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে এমন আমলের কথা বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে! তিনি বলেন, অথবা আমি বলেছি, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমলের কথা বলে দিন। এভাবে তিন বার জিজ্ঞাসার পর তিনি বললেন, আমিও নবী কারিম (সা.)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন—
‘তুমি বেশি বেশি সিজদা করো (নফল নামাজ)। কেননা তোমার প্রতিটি সিজদার বিনিময়ে আল্লাহ তোমার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং একটি গোনাহ মিটিয়ে দেবেন।’
মাদান বলেন, পরবর্তী সময়ে আমি আবু দারদা (রা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তাকেও এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি, তিনিও একই উত্তর দিয়েছেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪৮৮)
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার নবীজি (সা.) তাকে বললেন- জেনে রাখো, তোমার প্রতিটি সিজদার বিনিময়ে আল্লাহ তোমার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং একটি গোনাহ মিটিয়ে দেবেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২২২০)
Related News

হজের খুতবা সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায়
ইসলাম ডেস্ক: পবিত্র হজের খুতবা এবার বাংলাসহ ১৪টি ভাষায় সৌদি আরবের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে লাইভRead More

যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশকের বিশেষ আমল: আমাদের করণীয়
যিলহজ্বের মাসের প্রথম দশকের বিশেষ আমল : আমাদের করণীয় ফাহাদ মারুফ: যিলহজ্বের প্রথম দশকের বিশেষRead More