Main Menu

পরিত্যক্ত খেজুর গাছ থেকে লাখ টাকা আয়

নিউজ ডেস্ক:
কুমিল্লা: কুমিল্লার বুড়িচংয়ের জঙ্গলপুর। জঙ্গলপুরের জঙ্গলে ক্ষেতের আইলে সারি সারি খেজুর গাছ পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।

সেই খেজুর গাছ থেকে রস নিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন ওই গ্রামের আরিফুর রহমান নামে এক যুবক। মাত্র আট হাজার টাকা পুঁজিতে দিনে ১০ হাজার টাকার বেশি আয় করছেন তিনি।
জানা যায়, আরিফুরের বাবা কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শীত মৌসুমে খেজুরের রস সংগ্রহ করতেন তিনি। আরিফুর দুই বছর আগে দুবাই থেকে বাড়ি ফেরেন। বাড়িতে আসার পর দেখেন অনেকগুলো খেজুর গাছ পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

এদিকে আরিফুরও চিন্তা করেন দেশে কিছু করার। তিনি চিন্তা করেন তার বাবা এক সময় গাছ ছিলে খেজুরের রস সরবরাহের কাজ করতেন। ওই কাজে সহায়তা করতেন তিনি। তাই পরিত্যক্ত গাছগুলো থেকে খেজুরের রস সংগ্রহের উদ্যোগ নেন। তার নিজের ছিল ১৩টি গাছ। সঙ্গে আরও ৪০টি গাছ আট হাজার টাকায় প্রতিবছরের জন্য লিজ নেন। একজন সহযোগীকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেন। বর্তমানে দিনে গড়ে প্রতি গাছ থেকে পাঁচ লিটার রস পান তিনি। প্রতি কেজি বিক্রি করেন ৮০ টাকা দরে। দিনে সরবরাহকৃত সব রসই বিক্রি হয়ে যায় তার। তার কাছ থেকে বেশি রস নিতে হলে অগ্রিম অর্ডার দিতে হয়।

 

আরিফুর রহমান বলেন, এ কাজে খাটুনি একটু বেশি। তাই গাছগুলো থেকে পালা করে দুইভাগে রস সংগ্রহ করি। একদিন ২৬টি গাছের রস সংগ্রহ করলে আরেকদিন ২৭টি গাছের রস সংগ্রহ করি। অগ্রহায়ণ, পৌষ ও মাঘ মাসে এ কাজ করি। গড়ে প্রতি গাছ থেকে পাঁচ লিটার রস সংগ্রহ হয়। তিন মাসে কয়েক লাখ টাকা আয় করতে পারি।

আরিফুর আরও বলেন, দুই বছর আগে দুবাই থেকে ফিরে যখন রস সংগ্রহ শুরু করি, তখন অনেকে আমাকে পাগল বলতো। অনেকে বলতো, এত রস বিক্রি করার কাস্টমার পাবো কই! কিন্তু এখন আর কেউ এ কথা বলে না। বরং খেজুরের রসের এতই চাহিদা যে অগ্রিম অর্ডার করতে হয়। আমার হাঁস-মুরগি পালন ও নার্সারি করার অভিজ্ঞতাও আছে। পর্যাপ্ত পুঁজি পেলে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারতাম।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, খেজুরের রস বেশ উপকারী আবার খেজুরের গাছ জ্বালানি হিসেবেও খুব ভালো। এ রস জ্বাল দিয়েও খাওয়া যায়। বিভিন্ন রকমের, ফিরনি, পায়েশ তৈরি করা যায়। এ রস দিয়ে গুড় বানানো হয়।

আমি মনে করি, আরিফুল অত্যন্ত ক্রিয়েটিভ ছেলে। সে পরিত্যক্ত গাছকে কাজে লাগিয়ে উপার্জন করছে। কুমিল্লার অনেক মানুষ আছে, যারা গত পাঁচ বছর খেজুরের রস চোখেও দেখেনি, তারা এখন সুযোগ নিচ্ছেন। গাছির অভাবে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে খেজুরের রস। এসময়ে ৫২টি গাছ থেকে সে রস (আরিফুল) সংগ্রহ করছে, তা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। সূত্র: বাংলানিউজ






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *