ইমামের বিদায়ে ১০ লাখ টাকা সম্মাননা, আবেগাপ্লুত মুসল্লিরা
নিউজ ডেস্ক:
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে একাধারে ৫৩ বছর ইমামতি করেছেন হাফেজ মো. হাসান। বার্ধক্যজনিত কারণে শুক্রবার (১৮মার্চ) শেষ জুমা পড়িয়ে বিদায় নিয়েছেন দীর্ঘ দিনের মায়া জড়ানো মসজিদটি থেকে। এসময় রাজসিক আয়োজনে তাকে বিদায় জানিয়েছেন মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসী। পেনশন হিসেবে দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা সম্মাননা।
বিদায় অনুষ্ঠানে ইমাম হাফেজ মো. হাসানকে কয়েকশ মোটরসাইকেলের ও গাড়ির বহরে করে বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়। শনিবার (১৮ মার্চ) গোসিঙ্গা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তাকে এ সম্মাননা দেয়া হয়।
বিদায়ের এমন আয়োজনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন হাফেজ মো. হাসান। তিনি গোসিঙ্গা ইউনিয়নের খোঁজেখানি গ্রামের পিয়ার আলীর সন্তান। সংসার জীবনে পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ের জনক। ছেলেদের তিনজন মাদ্রাসার শিক্ষক ও দুইজন লেখাপড়া করছেন। মেয়েরা বিবাহিত।
বিদায় অনুষ্ঠানে ইমাম মো. হাসান বলেন, ৫৩ বছরের হিসাব থাকলেও আরো আগে থেকে ওই মসজিদে ইমামতি করেছি। আমাকে মসজিদ কমিটি, বাজারের ব্যবসায়ী, গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ এলাকার মুসল্লিরা যে সম্মানে বিদায় দিয়েছেন তা অন্যান্য ইমামদের সম্মান বাড়িয়েছে। এমন নজির সব জায়গাতেই চালু হওয়া দরকার।
সম্মাননা পাওয়া টাকায় তিনি একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা তৈরি করতে চান। তিনি বলেন, এ টাকায় মসজিদ-মাদ্রাসার পুরো কাজ হবে না। আরও টাকার দরকার। সম্মাননার টাকায় কাজ শুরু করবো, আমার জীবদ্দশায় যতটুকু পারবো শেষ করবো। বাকী কাজ এলাকাবাসী ও আমার পরবর্তী প্রজন্ম সম্পন্ন করবেন।
গোসিংগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ছাইদুর রহমান শাহিন মোড়ল বলেন, হাফেজ মো. হাসান হুজুরকে আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই মসজিদের ইমামতি করতে দেখেছি। সব ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন আন্তরিক। আন্তরিকতার মাধ্যমে তিনি সবার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। তারই প্রতিফলন পেলেন অবসরকালে।
তিনি বলেন, ইমাম মো. হাসানের বিদায়কালে সবাই অশ্রুসিক্ত। বিদায় অনুষ্ঠানে গোসিংগা বাজার থেকে কয়েকশ মোটরসাইকেল এবং গাড়ি বহর নিয়ে আমরা তাকে বাড়ী থেকে মসজিদ প্রাঙ্গনে নিয়ে আসি।
তিনি আরও বলেন, সম্মাননা হিসেবে বিদায়ী ইমামের হাতে নগদ ১০ লাখ টাকা তুলে দেয়া হয়েছে। এলাকাবাসীর পাশাপাশি প্রবাসীরাও আর্থিক সহযোগিতা করেছেন।
বিদায় অনুষ্ঠানে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. ছাইদুর রহমান শাহীনের সভাপতিত্বে ও মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলামের পরিচালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন, শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম প্রধান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, কাপাসিয়ার পীর সাহেব দেওনা ও মাদ্রাসা দাওয়াতুল হকের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী, জামিয়া আনওয়ারীয়া মাদরাসা, বরমী মোহতামিম আল্লামা আশেখে মোস্তাফা, ৮নং ওয়ার্ড সদস্য ইসমাইল হোসেন মোড়ল, গোসিঙ্গা বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. বোরহান উদ্দিন মন্ডলসহ স্থানীয় আলেমগণ।
এছাড়াও ছিলেন বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার শিক্ষক, মসজিদ পরিচালনা কমিটি, বাজার পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, সামাজিক সাংস্কৃতিক সাংগঠনিক নেতা এবং গণমাধ্যমকর্মীরা।
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More