বাস্তুচ্যুত হওয়ার শঙ্কায় যুক্তরাজ্যসহ বহু উপকূলের মানুষ
বিদেশবার্তা২৪ ডেস্ক:
যুক্তরাজ্যের উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসরত জনগণের উদ্দেশে কঠোর সতর্কবার্তা জারি করেছে দেশটির পরিবেশ সংস্থা। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে সেখানে বলা হয়েছে, এর কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাবে এবং উপকূলীয় ভূমির বিলোপ সৃষ্টি হবে। এর কারণে এসব অঞ্চলের মানুষকে বসবাসের স্থান পরিবর্তন করতে হতে পারে। সেটা কেবল যুক্তরাজ্যেই নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্যও প্রযোজ্য। খবর সিএনবিসির
পরিবেশ সংস্থার প্রধান নির্বাহী জেমস বেভান সতর্কবার্তায় আরো বলেন, বাস্তুচ্যুত হওয়ার বিষয়টি খুব কঠিন হলেও এটাই সত্য। আমাদের দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের জন্যই দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তনের অর্থ হবে এমন যে অনেক মানুষকেই তাদের বাসস্থান বদল করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সাধারণত নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোয় যে বন্যা হয় সেখানে পানি নেমে যাওয়ার পর নতুন করে আরো ভালো আবাস গড়ে ফিরে আসে অধিবাসীরা। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে সমুদ্রপৃষ্ঠের পানি বেড়ে গেলে, উপকূল বিলীন হলে সেখানে আর ফিরে যাওয়া যাবে না। ফলে ক্রমবর্ধমান সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বহু উপকূলবাসীর জন্য হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, বিশেষ করে প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমুদ্রতীরবর্তী মানুষ ও দ্বীপগুলোর অধিবাসীদের জন্য।
এমন পরিস্থিতির কারণে গত বছর কপ২৬ সম্মেলনে অংশ নিয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম মোহাম্মেদ সলিহ তার দেশের আসন্ন বিপদের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছিলেন। কারণ সমুদ্রের মধ্যে অবস্থিত ১৯২টি দ্বীপ নিয়ে দেশটি গঠিত। তিনি বলেন, আমাদের দেশের দ্বীপগুলো ধীরে ধীরে প্লাবিত হচ্ছে। যদি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করা না যায় তাহলে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ মালদ্বীপ নামে দেশটির অস্তিত্বই সংকটের মুখে পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গত ফেব্রুয়ারিতেই সতর্ক করে জানিয়ে দিয়েছিল, ২০৫০ সাল নাগাদ দেশের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রায় এক ফুট বেড়ে যাবে, যা গত ১০০ বছরে বৃদ্ধি পাওয়া উচ্চতার সমান।
যুক্তরাজ্যের বিষয়ে জেমস বেভান বলেন, অর্থনৈতিক, কৌশলগত ও মানবিক দিক বিবেচনা করে কিছু অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে বিপজ্জনক স্থান থেকে সরিয়ে নিতে হবে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যে অনিবার্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে তা থেকে বাঁচার উপায় নেই।
ব্রিটিশ সরকারের ওয়েবসাইটে জেমস বেভানের যে বক্তব্য যুক্ত করা হয়েছে সেখানে দেখা যায়, তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। দ্রুত কিছু উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে।
এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের পরিবেশবিষয়ক সংস্থা বন্যা ও উপকূল বিলোপের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। সেখানে ২০২৬ সাল পর্যন্ত করণীয় ঠিক করা হয়েছে। দেশটি কীভাবে বন্যা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়াবিষয়ক সমস্যা মোকাবেলা করবে সে সম্পর্কে পরিকল্পনাও ঠিক করা হচ্ছে।
এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কিছু ডিজিটাল টুল ব্যবহার করা হবে, যার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের উপকূলে বসবাসরত যেকোনো মানুষ দেখতে পারবে যে তারা আসলে কতটুকু বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।
জেমস বেভান বলেন, একটি জনগোষ্ঠীকে সরিয়ে নেয়া নিঃসন্দেহে বড় কাজ। এর হয়তো অনেক সমালোচনাও হবে। কিন্তু আসন্ন বিপদের হাত থেকে বাঁচতে এর বিকল্প নেই।
Related News
কুয়েত থেকে লাশ হয়ে ফিরল শালা-দুলাভাইের নিথর দেহ
কুয়েত থেকে লাশ হয়ে ফিরল শালা-দুলাভাইের নিথর দেহ আরব উপদ্বীপের দেশ কুয়েত থেকে কফিনে করেRead More
যুক্তরাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ে গাছচাপায় সিলেটির মৃত্যু
যুক্তরাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ে গাছচাপায় সিলেটির মৃত্যু যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম শহরে প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গাছ উপড়ে পড়ে কাহেরRead More