Main Menu

ওসমানী বিমানবন্দরে পাখির সাথে ধাক্কা খেল বিমান!

নিউজ ডেস্ক:
পাখির সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিকল হয়ে পড়ে বাংলাদেশ বিমানের একটি এয়ারক্রাফটের ইঞ্জিন। এতে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকা পড়ে লন্ডনগামী একটি ফ্লাইট। দুর্ভোগে পড়েন ২৬৫ যাত্রী।

এই ঘটনা রোববার সকালের। একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের সঙ্গে পাখির ধাক্কা লাগায় প্রশ্ন উঠেছে ওই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের গাফিলতির।

তবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এই বিমানবন্দরের ভেতরে বিমানের সঙ্গে পাখির ধাক্কা লাগার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অন্য কোথাও ধাক্কা লাগতে পারে।

সপ্তাহের প্রতি রোববার বিমানের একটি ফ্লাইট সিলেট থেকে সরাসরি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। গতকাল সকাল ১০টায় লন্ডনগামী ওই ফ্লাইটটি সিলেট থেকে উড্ডয়নের কথা ছিল।

এর আগেই ঢাকা থেকে সিলেটে আসে বোয়িং এই এয়ারক্রাফটটি। তবে উড্ডয়নের আগেই এয়ারক্রাফটের ইঞ্জিন বিকল দেখতে পান সংশ্লিষ্টরা। পরে ইঞ্জিনে পাখির দেহাবশেষ পাওয়া যায়।

ওসমানী বিমানবন্দরে কর্মরত একটি বেসরকারি এয়ারলাইনসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কাল বিমানের ইঞ্জিন বিকলের বিষয়টি যখন ধরা পড়ে তখন আমিও বিমানবন্দরে ছিলাম। সম্ভবত ওসমানীতে অবতরণের সময় পাখির সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে। এ সময় পাখি ইঞ্জিনে ঢুকে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ফ্লাইট উড্ডয়ন ও অবতরণের আগে কন্ট্রোল টাওয়ারের মাধ্যমে আকাশের পরিস্থিতি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করা হয়। পাখি বা কোনো প্রতিন্ধকতা আছে কি না তা ভালো করে দেখা হয়। কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে ফ্লাইট কিছুটা পরে অবতরণ করে।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কালকে (রোববার) বিমানবন্দরে অনেকটা হ-য-ব-র-ল অবস্থা ছিল। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় আমাদের যাত্রীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। নিরপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। কন্ট্রোল টাওয়ারে পাখি ধরা না পরাও নিরাপত্তা ব্যর্থতা।’

তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ওসমানী বিমানবন্দরের নিরাপত্তা শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘ফ্লাইট উড্ডয়ন বা অবতরণের সময় বিমানবন্দরে পাখি থাকলে আমরা শুটারের মাধ্যমে ফাঁকা গুলি করে পাখি সরিয়ে দিই। অনেক সময় নিরাপত্তার স্বার্থে পাখি মেরে ফেলতেও হয়।

‘অবতরণের আগে কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে পাখির তথ্য দেয়া হলে আমরা ফ্লাইটের অবতরণ কিছুক্ষণ আটকে রাখি। প্রায় সময়ই এ রকম ঘটে। অনেক সময় উড়োজাহাজ অবতরণকালে পাখির ঝাঁকও চলে আসে। তাদেরও সরাতে হয়। তবে কালকে বিমান ল্যান্ড করার সময় কোনো পাখি দেখা যায়নি। এটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।’

তিনি বলেন, ‘বোয়িং এয়ারক্রাফট অবতরণের সময় অনেক বাতাস তৈরি করে। ফলে দূরের কোনো কিছুকেও এটি ডানার নিচে নিয়ে আসতে পারে। কাল এ রকম কিছুই ঘটে থাকতে পারে।’

তবে বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, ‘বিমানবন্দরের ভেতরে ধাক্কা লাগলে তো রানওয়েতে পাখির দেহাবশেষ পাওয়া যেত। কিন্তু আমরা এ রকম কিছু পাইনি। ফলে বিমানটি অবতরণের আগে কোথাও পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারে বলে ধারণা করছি।’

পাখির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আকাশে পাখির চলাচল তো আটকানো যাবে না। তবে ফ্লাইট উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় যাতে বিমানবন্দরের আশপাশে পাখি না থাকে সে ব্যাপারে আমরা সব সময়ই সচেষ্ট রয়েছি।’

কোথায় এবং কীভাবে বিমানের সঙ্গে পাখির ধাক্কা লেগেছে তা সুনির্দিষ্টভাবে খুঁজে পাওয়া কঠিন দাবি করে বিমানের স্টেশন ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘আকাশে তো ক্যামেরা নেই। তাই এটা খুঁজে বের করা খুব কঠিন।’

তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরের ভেতরে পাখি থাকলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ শুট করে। কিন্তু একটি ফ্লাইট অবতরণের প্রস্তুতি তো আরও ৫ কিলোমিটার আগে থেকে নেয়। ওই সময়ও পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগতে পারে। এ রকম কিছু হলে তো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কিছু করার থাকে না।’

ইঞ্জিন বিকল এয়ারক্রাফটি মেরামত করে সোমবার ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। এ ছাড়া প্রায় ২৫ ঘণ্টা পর সোমবার বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে এই ফ্লাইটের যাত্রীদের নিয়ে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে ওসমানী বিমানবন্দর ছেড়ে গেছে বিমানের অন্য একটি এয়ারক্রাফট।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *