Main Menu

প্রবাসীদের জন্য আসছে নতুন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম

প্রবাসীদের জন্য আসছে নতুন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম

স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনার আওতায় একটি অনলাইন ‌‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্ল্যাটফর্ম’ তৈরি করতে যাচ্ছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্টার্ড কর্মীর সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাস বা হাইকমিশনের মধ্যস্থতায় বিদেশি নিয়োগকারী ও রিক্রুটিং এজেন্সির যোগাযোগ ঘটবে। পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করবে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।

অনলাইনের মাধ্যমে ফি জমাদানের ব্যবস্থাও থাকবে। সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতো স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে উদ্যোগটির প্রস্তাব করেছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে এটুআইর সম্মতিও মিলেছে। অথচ নতুন প্ল্যাটফর্মে যেসব সেবা পাওয়া যাবে, করোনার সময় যাত্রা করা সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বেসরকারি প্ল্যাটফর্ম ‌‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে এর সব ব্যবস্থাই রয়েছে। ফলে ব্যয় সংকোচনকালে সরকারের এমন উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিএমইটি সূত্র জানায়, গত বছরের মাঝামাঝি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি নিয়ে কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ তা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজির (আইআইসিটি) কাছে সম্ভাব্য খরচের ধারণা চেয়েছিল বিএমইটি। গত ১৩ মার্চ তাদের পাঠানো লিখিত প্রস্তাবনায় প্ল্যাটফর্মটি তৈরিতে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন বলে জানায় আইআইসিটি। তবে প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজটি বুয়েটের, নাকি এটুআইর তত্ত্বাবধানে হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি।

একটি ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও কেন নতুন করে আবার প্ল্যাটফর্ম করা হচ্ছে– জানতে চাওয়া হলে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী সমকালকে বলেন, এটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। একটি কোম্পানি করছে, আরও অনেক কোম্পানি করতে চায়। বুয়েটের মাধ্যমে আমাদেরও একটি প্ল্যাটফর্ম করার চিন্তা চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলে বলতে পারব।

বিএমইটির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সালেহ আহমদ মোজাফফর বলেন, আমরা এখন যেমন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিকে (বায়রা) বলি দক্ষ লোক পাঠাতে, কিন্তু তারা দক্ষ লোক পাবে কোথায়? এ জন্য মূলত আমরা একটি পদ্ধতি দাঁড় করাচ্ছি, যেখানে দক্ষ শ্রমিকের সন্ধান, একই সঙ্গে বিদেশের কোথায় কোন কাজে কতজনের চাহিদা রয়েছে তার তথ্য মিলবে। রিক্রুটারদের জন্য পূর্ণাঙ্গ একটি তথ্যভান্ডার তৈরি করা দরকার এবং শ্রমিক বলতে তো শুধু শ্রমিক নয়, একেবারে সুনির্দিষ্ট করে কোন কাজে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে তার প্রচুর ক্যাটেগরি-সাবক্যাটেগরি করা হবে।

একটি ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও নতুন প্ল্যাটফর্ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা তাদের কাজ করছে। তাদের তো শুধু অ্যাপ। আমরা যে নিজস্ব প্ল্যাটফর্মটি করতে যাচ্ছি এখানে ওয়েবসাইট থাকবে, ডেটাবেজ থাকবে, অ্যাপও থাকবে। তা ছাড়া তাদের সঙ্গে সরকারের চুক্তিতে বলা নেই– সরকার চাইলেও প্ল্যাটফর্ম করতে পারবে না।

‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপ এরই মধ্যে ২৮ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশীর রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছে, যার মধ্যে তিন লাখ গাড়িচালক ও চার লাখ নির্মাণকাজে দক্ষ। রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ‘আমি প্রবাসী’ একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত জমা হয় বিএমইটির সার্ভারে। দীর্ঘদিন ধরে বিএমইটি রেজিস্টার্ড শ্রমিকদের তথ্য রাজধানীর কাকরাইলে নিজেদের কার্যালয়ে রেখে এলেও এ সপ্তাহেই তা কোটি টাকা ব্যয়ে আগারগাঁওয়ে সরকারি তত্ত্বাবধানে জাতীয় ডেটা সেন্টারে স্থানান্তর করছে। বিএমইটি ডেটাবেজে এ পর্যন্ত প্রায় তিন কোটি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে এবং বহির্গমন ডেটা রয়েছে অন্তত দেড় কোটি।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞ শরীফুল হাসান বলেন, বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়া যত বেশি ডিজিটালাইজেশন করা যাবে, তত ভোগান্তি কমবে।

শ্রমিকদের বিদেশ যেতে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় আমাদের দেশে। যে কোনো কিছু করার আগে যেগুলো আছে তার সঙ্গে সমন্বয় করা জরুরি। তবে নতুন কিছুও দোষের নয়। কিন্তু ইতোমধ্যে যেটা আছে, পাশাপাশি তেমন আরেকটি করা হলে বা অনেক সিস্টেম করলে মানুষ বিভ্রান্ত হবে। অনেক মাধ্যম না করে যে কোনো একটিতে হলে কর্মীদের জন্য পদ্ধতিটা সহজ হয়।

আমি প্রবাসীর সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা নামির আহমেদ নুরী বলেন, বিনামূল্যে সরকারকে আমরা এই প্ল্যাটফর্মটি বানিয়ে দিয়েছি। খুবই সহজে সবার বায়োমেট্রিক, ট্রেনিং, রেজিস্ট্রেশন আপডেট হচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার প্রি-ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) হচ্ছে এখানে। এর পর থেকে এখন প্রতিদিন হাজার হাজার, লাখ লাখ লোক ব্যবহার করছে। ৬০ লাখ ব্যবহারকারী আছে এই অ্যাপে। দুই হাজারের বেশি রিক্রুটিং এজেন্সি এখানে অনলাইনে তাদের সব কাজ করতে পারছে। তবে সরকার চাইলে যে কোনো সময় নিজস্ব পদ্ধতি তৈরি করতে পারে।

রেজিস্ট্রেশন ফি থাকবে না

একজন অভিবাসনপ্রত্যাশী বা বিদেশ গমনেচ্ছু বাংলাদেশিকে বর্তমানে বিএমইটি এবং এর জেলা পর্যায়ের কার্যালয় থেকে সরাসরি রেজিস্ট্রেশন করতে ২০০ টাকা ফি দিতে হয় অথবা আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে করলে আরও ১০০ টাকা বাড়তি গুনতে হয়। বিএমইটি মহাপরিচালক বলেন, রেজিস্ট্রেশন যখন একজন করবে, তখন বেকার; তার কাছ থেকে টাকা নেওয়া উচিত নয়। এ জন্য আমরা নতুন প্ল্যাটফর্মে আবেদন প্রক্রিয়া ফিমুক্ত রাখতে চাই। সূত্র: সমকাল।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *