Main Menu

‘সুদখোরের বিরুদ্ধে’ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চেয়ারম্যানের আত্মহত্যা

নিউজ ডেস্ক:
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৌম্য চৌধুরী (৫৬)।

শনিবার (৩ জুন) দিবাগত মধ্যরাতে মৌলভীবাজার হাসপাতালে মারা যান তিনি। আত্মহত্যার আগের দিন ফেসবুকে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে স্ট্যাটাস দেন তিনি।

জানা যায়, শনিবার দিবাগত গভীর রাতে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল রোডের ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে অসুস্থ অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। রাতেই মৌলভীবাজার হাসপাতালে মারা যান তিনি।

মৃত্যুর আগে তিনি তার নিজের ফেসবুক আইডিতে দিরাইয়ে কিছু মানুষের নামোল্লেখ করে লিখেন, ‘সুদখোরদের যন্ত্রণায় এই পথ বেছে নিলাম আমি। আমার এমন পরিণতির জন্য দায়ী দিরাইয়ের হবিবুর রহমান (হবু) এবং জসিম উদ্দিন। হবিবুরের কাছ থেকে আমি টাকা এনেছিলাম। তা শোধ করেছি দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশারফ মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে। এরপর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি, সুস্থ হয়ে জানতে পারি, ওদের টাকার জন্য আমার উপর মামলা হয়ে গেছে। ওদের টাকার জন্য আমি পথে বসেছি। হবিবুর একজন নীচ সুদখোর। সুদের টাকায় দিরাইয়ে তিনটি বাড়ি করেছে সে।’

জসিম উদ্দিন নামে আরেকজনের নামোল্লেখ করে তিনি স্ট্যাটাসে লিখেন, সে ২৯ লাখ টাকা কোথা থেকে পেলো তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। এই দুই সুদখোরসহ দিরাই কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সজল দাস, অসিত দেব নাথ, চিনি ঠাকুর ও পুতুল দাসের নামোল্লেখ করে লিখেন, ওরা সুদের ব্যবসা করে মানুষ বিপদে পড়লে শতকরা ১০ টাকা হারে সুদে টাকা লাগায়। আমি জালিম জুলুমকারীদের বিচার চাই। আমি হয়তো দেখতে পারবো না। কিন্তু সমাজ আপনাদের এই কৃতিত্ব দেখবে। বিদায়।

কমলগঞ্জ থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, সৌম্য চৌধুরীকে কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল রোডের ফুলবাড়িয়া এলাকার সড়কের পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় টহল পুলিশ শনিবার রাতে উদ্ধার করে। এসময় তিনি ক্ষীণকণ্ঠে কেবল দিরাইয়ের রাজানগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান পরিচয় দিচ্ছিলেন।

সৌম্য চৌধুরী’র স্ত্রী ইলা চৌধুরী জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট থেকে ফোন দিয়ে তার স্বামী বলছিলেন, আমি আদালতে আত্মসমর্পণ করবো। আমি জেলে যাব। আমারতো তুমি ছাড়া কেউ নেই। আমাকে এসে দেখে যেও। তুমি তোমার বাবার বাড়িতে চলে গেলেই ভালো হবে।

ইলা চৌধুরী জানালেন, উনার স্বামী হবিবুরের কাছ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা নিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার পরও তারা ২৯ লাখ টাকা পাওয়ার মামলা করেছে। সে বাড়িতে থাকতে পারে না। দিরাইয়ে যেতে পারে না। তাকে পুলিশ খুঁজে বেড়ায়। চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তাদে মদ খাইয়ে এরা চেকে স্ট্যাম্পসহ নানা কাগজে সই নিয়েছে। হবুর টাকা আমার স্বামী দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশারফ মিয়াকে নিয়ে পরিশোধ করেছেন।

এ বিষয়ে মোশারফ মিয়া বলেন, সৌম্য চৌধুরীর কাছে হবুর পাওনা টাকার বিষয়টি পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে, পরে আরও এক লাখ টাকা দেবার শর্তে সুরাহা হলেও চেক ডিজওনার মামলা রয়েই গিয়েছিল।

জসিম উদ্দিন বললেন, আমার চার লাখ টাকা পাওনা ছিল, বাকি টাকা হবুর ছিল, স্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ২৯ লাখ টাকায় সমাধানের সুরাহা হওয়ায় সৌম্য চৌধুরী’র কাছ থেকে চেক নেওয়া হয়েছিল।

দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদীর আহমদ জানান, সৌম্য চৗধুরী সাজাপ্রাপ্ত গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি ছিলেন। ফেসবুকে তিনি যাদের নাম লিখেছেন, তাদের কারো কারো সঙ্গে তার মামলা চলছিল।






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *