শয়তান যেভাবে পাপাচারের দিকে ডাকে
ধর্ম ডেস্ক:
সৃষ্টির সূচনা থেকে মানবজাতির সঙ্গে শয়তানের শত্রুতার শুরু। সে মহান আল্লাহর সামনে মানবজাতিকে সত্যচ্যুত করার অঙ্গীকার করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাকে অভিশাপ করেন এবং সে বলে, আমি অবশ্যই আপনার বান্দাদের এক নির্দিষ্ট অংশকে আমার অনুসারী করে নেব। আমি তাদের পথভ্রষ্ট করবই।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১১৮-১১৯)
এরপর থেকে শয়তান প্রতিনিয়ত মানুষকে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে। তবে শয়তান মানুষকে সরাসরি কোনো আক্রমণ না করে ধীরে ধীরে ইসলামের বিধান থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। এটা হলো শয়তানের সূক্ষ্ম কূটচাল।
শয়তান সর্বপ্রথম মানুষকে এভাবে প্ররোচনা দেয়, নামাজের সময় হলে সে মানুষকে বলতে থাকে- এখনও অনেক সময় বাকি আছে। যখন নামাজের ওয়াক্ত একদম শেষ পর্যায়ে চলে আসে, তখন শয়তান বলে, কাজটা খুবই জরুরি; আচ্ছা কাজা নামাজটা আজ পরের ওয়াক্তে কাজা করে নিলেও হবে। এভাবে সে মানুষকে বেনামাজিতে পরিণত করে।
রোজার ক্ষেত্রে সেহরির সময় হলে শয়তান বলতে থাকে আরও অনেক সময় আছে; আর কিছুক্ষণ পরে উঠলেও চলবে; যখন ওয়াক্ত চলে যায়; তখন বলতে থাকে বিনা সেহরিতে রোজা রাখবে; এভাবে সে মানুষকে সূক্ষ্মভাবে রোজা থেকে বিরত রাখে।
হজের ক্ষেত্রেও সরাসরি নেতিবাচক কিছু না বলে বিভিন্ন অজুহাত মানুষের সামনে তুলে ধরে। ধীরে ধীরে হজের প্রতি পুরোপুরি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ফেলে। আল্লাহর প্রতিটি বিধান নামাজ, রোজা, হজের ক্ষেত্রেও শয়তান মানুষকে এভাবে ধোঁকা বা প্রতারণার মাধ্যমে ফিরিয়ে রাখে।
শয়তান মানুষের সামনে অশ্লীল ও খারাপ জিনিসকে আকর্ষণীয় ও ভালো হিসেবে উপস্থাপন করে। আল্লাহ বলেন, ‘অবশ্যই সে (শয়তান) তোমাদের মন্দ ও অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয়। আর যেন তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে এমন কথা বলো, যা তোমরা জানো না।’ (সুরা বাকারা : ১৬৯)।
মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে শয়তানের অন্যতম কৌশল হলো, পাপ কাজকে আকর্ষণীয় করে তোলা। যাতে সহজেই যে কারও মনকে হরণ করতে পারে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সে (ইবলিস) বলল, হে আমার পালনকর্তা, আপনি যেমন আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, আমিও তাদের সবাইকে পৃথিবীতে নানা সৌন্দর্যে আকৃষ্ট করব এবং তাদের সবাইকে পথভ্রষ্ট করব। আপনার মনোনীত বান্দারা ছাড়া। (তাদের কোনো ক্ষতি আমি করতে পারব না)।’ (সুরা হিজর : ৩৯-৪০)।
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিলো। বলল, ‘হে আদম! আমি কি তোমাকে বলে দেব অনন্তকাল জীবিত থাকার গাছের কথা এবং অবিনশ্বর রাজত্বের কথা?’ (সুরা তাহা : ১২০)। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে শয়তানের যাবতীয় কূটচাল থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দিন। আমিন।
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More