রোগী দেখতে গেলে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরী
রোগী দেখতে গেলে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরী
রোগী দেখতে যাওয়া, তার সেবা করা একজন মুসলমানের জন্য অপরিহার্য। আল্লাহর রাসূল সা.-এর হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী রোগীর সেবা করা তার খোঁজ খবর নেওয়া একজন মুসলমানের দায়িত্বের অংশ।
আবূ হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের হক পাঁচটি। ১. সালামের জবাব দেওয়া, ২. হাঁচিদাতাকে (তার আলহামদু লিল্লাহ বলার জবাবে) রহমতের দোয়া করা, ৩. দাওয়াত কবুল করা, ৪. অসুস্থকে দেখতে যাওয়া এবং ৫. জানাযায় অংশগ্রহণ করা। (সহিহ মুসলিম)
রোগী দেখতে যাওয়া সময় বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। তার যেন কষ্ট না হয় এদিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বিভিন্ন হাদিসে রোগী দেখতে যাওয়ার কিছু আদবের কথা বলা হয়েছে। এখানে তুলে ধরা হলো—
১. উপযুক্ত সময় নির্বাচন করা। যাতে রোগীর কোনো কষ্ট না হয়। হাদিস শরিফে এসেছে, আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) তিন দিন পর রোগীকে দেখতে যেতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৪৩৭)
২. অজু সহকারে রোগী দেখতে যাওয়া। হাদিস শরিফে এসেছে, আনাস রা. সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন,
যে ব্যক্তি ভালো করে অজু করে এবং একমাত্র সওয়াবের উদ্দেশ্যে কোনো অসুস্থ মুসলমান ভাইকে দেখতে যায়, তাকে দোযখ থেকে ষাট বছরের রাস্তার সমপরিমাণ দূরে রাখা হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩০৯৭)
৩. রোগীর অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞসা করা। হাদিস শরিফে এসেছে, নাফে (রহ.) বলেন,
ইবনে উমর (রা.) রোগীর কাছে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করতেন যে, সে কেমন আছে? আর তিনি তার কাছ থেকে বিদায়কালে বলতেন, আল্লাহ তোমার কল্যাণ করুন। তিনি এর বেশি কিছু বলতেন না। (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ৫২৯)
৪. রোগীর সুস্থতার জন্য দোয়া করা। হাদিস শরিফে এসেছে,
রাসূল সা. মক্কায় রোগাক্রান্ত সাদ রা.-কে দেখতে গেলেন। সাদ রা. কেঁদে দিলেন। তিনি বলেন, তোমাকে কিসে কাঁদাচ্ছে? তিনি বলেন, আমার আশংকা যে, আমি যে স্থান থেকে হিজরত করেছি, সাদ ইবনে খাওলার মত সেই স্থানেই বুঝি মারা যাব। রাসূল সা. বলেন: হে আল্লাহ! সাদকে আরোগ্য দান করুন। তিনি তিনবার দোয়া করলেন। (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ৫২২)
৪. রোগীর কাছে বেশিক্ষণ অবস্থান না করা। সাঈদ ইবনে মুসাইয়িব (রহ.)-এর একটি মুরসাল বর্ণনায় আছে- রোগী দেখার উত্তম পন্থা হলো রোগীর কাছ থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে আসা।’ (বায়হাকি শুআবুল ইমান, হাদিস: ৯২২১, ৯২২২)
৫. ফিরে আসার সময় রোগীর কাছে দোয়া চাওয়া।
হাদিস শরিফে এসেছে, উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিন বলেন, রাসূল (সা.) আমাকে বললেন: তুমি কোনো রোগীকে দেখতে গেলে তাকে তোমার জন্য দোয়া করতে বলো। কেননা তার দোয়া ফেরেশতাদের দোয়ার মত। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৪৪১)
এছাড়াও অন্যান্য হাদিস থেকে আরো কিছু আদবের কথা জানা যায়। যেমন, রোগীর শরীরে হাত দিয়ে রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা, রোগীর সামনে সান্ত্বনামূলক কথা বলা, রোগীর কাছে উচ্চস্বরে কথা না বলা ইত্যাদি।
Related News
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক?
মজার ছলে কাউকে গালি দেওয়া কি ঠিক? আড্ডার সময়ে বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনেরRead More
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী
যৌবনকালের ইবাদতের গুরুত্ব নিয়ে যা বললেন আজহারী যৌবনকালের ইবাদত একটি লাভজনক ইনভেস্টমেন্ট বলে মন্তব্য করেছেনRead More